একশো শতাংশ ভিভিপ্যাট গণনার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূল
"আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দল দ্বারা পরিচালিত হয়ে ভিভিপ্যাটকে গোনার ব্যবস্থা করছেন না। এই বিষয়ে নিরুত্তাপ ইলেকশন কমিশন। তাই বিষয়টিকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাচ্ছি।''
বনগাঁ: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election) একশো শতাংশ ভিভিপ্যাট (VVPAT) গণনার দাবিতে করা তাঁর মামলা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা জানালেন তৃণমূলের (TMC) প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ (Gopal Seth)।
সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক জানান, এবার তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন। একশো শতাংশ ভিভিপ্যাট গণনার জন্য আগামী ৫ এপ্রিল তিনি সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)-এ আবেদন জানাবেন।
কিছুদিন আগেই সমস্ত ভিভিপাট গণনার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে এই বিষয়ে আবেদন জানিয়ে ছিলেন গোপাল শেঠ। তবে সেই মামলা খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি টিভি রাধাকৃষ্ণাণ ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, মামলাকারী সমস্ত ভিভিপ্যাট গণনার দাবিতে নির্বাচন কমিশনকে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তা খারিজ করেছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। তাই নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত হস্তক্ষেপ করার কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করেনি কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের আগে মামলাটি খারিজ করে দিয়ে যে রায় দিয়েছিল, সেই নির্দেশও বহাল রেখেছে ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিকে মামলাকারী বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠের দাবি, নির্বাচনে স্বচ্ছতা বজায় রাখার ব্যাপারে নির্দেশ রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, অল্প সংখ্যক ভিভিপ্যাট গণনা না করে, সবক’টি গণনা করুক কমিশন। তাতে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আসবে বলে জানান তিনি। এই প্রেক্ষিতে এবার তিনি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা জানালেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দল দ্বারা পরিচালিত হয়ে ভিভিপ্যাটকে গোনার ব্যবস্থা করছেন না। এই বিষয়ে নিরুত্তাপ ইলেকশন কমিশন। তাই বিষয়টিকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাচ্ছি।”
এদিকে গোপাল শেঠের এই পদক্ষেপ নিয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডলের কটাক্ষ, “ওনার ইচ্ছা হলে উনি সুপ্রিম কোর্টে যেতেই পারেন। তবে মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপিকে ভোট দেবে। হেরে যাবে জেনে তাই উলটো-পালটা অভিযোগ করছেন। ওনাদের মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।”
আরও পড়ুন: আব্বাসের দলে ভাঙন, আইএসএফ ছেড়ে তৃণমূলে ভাইস প্রেসিডেন্ট-সহ কয়েকশো কর্মী
প্রসঙ্গত, নিয়ম অনুযায়ী ইভিএমের গণনা শেষ হওয়ার পর ভিভিপ্য়াট গণনা করা হয়। ভিভিপ্যাট গণনার জন্য বিধানসভা পিছু পাঁচটি করে বুথ লটারিতে বাছাই করা হয়। পর্যবেক্ষক প্রার্থী বা তাঁর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে রিটার্নিং অফিসার সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। মামলাকারীর দাবি ছিল এসব না করে সব কেন্দ্রে একশো শতাংশ ভিভিপ্যাট গণনা করা হোক।