বৃদ্ধ দম্পতি করোনা আক্রান্ত, কারও আবার পরিবারের সকলেই কোভিড পজিটিভ, পাশে আছে ‘অঙ্গীকার’

শুধু খাবার নয়, ওষুধ, প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ভারও নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়ে 'অঙ্গীকার'।

বৃদ্ধ দম্পতি করোনা আক্রান্ত, কারও আবার পরিবারের সকলেই কোভিড পজিটিভ, পাশে আছে 'অঙ্গীকার'
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: May 17, 2021 | 7:15 PM

পশ্চিম বর্ধমান: যে কোনও বিপর্যয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই মানুষের ধর্ম। আসানসোল (Asansole) বার্নপুরের এক দল তরুণ তরুণী সেই মানবতার পাঠই পড়াচ্ছেন। কারও হয়ত ছেলে মেয়ে বাইরে থাকেন। অথচ কোভিড আক্রান্ত বৃদ্ধ দম্পতি। কারও বা বাড়ির সকলেই সংক্রমিত। রান্না করে খাওয়ার জোর টুকু নেই। প্রতিটি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে যাচ্ছেন শ্রেয়া পাল, সৌভিক ঘোষরা। আর্থিক সঙ্গতিপূর্ণ কোনও কোনও পরিবার আবার টাকাও দিচ্ছে তাঁদের। তবে সে টাকাতেও জীব সেবা এই তরুণ তুর্কিদের। বহু গরীব পরিবারকে নিখরচায় খাবার তুলে দিচ্ছেন এই দুর্দিনে।

বার্নপুরের সুভাষপল্লির এক পরিবার। বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী একাই থাকেন। এক ছেলে বিদেশে কর্মরত। কোভিড আক্রান্ত বাবা-মা রান্না করে খেতে পারছেন না। বার্নপুরের শ্রেয়া, সৌভিকরাই রান্না করা খাবার রোজ ঝুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের গেটে। আবার রাধানগরের একই পরিবারের তিনজনই কোভিড পজিটিভ। দু’ বেলা কী খাবেন, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। এ পরিবারের কাছেও ঈশ্বরের দূত হয়ে এসেছেন এই তরুণ দলই। শুধু খাবার নয়, ওষুধ, প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ভারও তাদেরই।

একটি সংগঠনও রয়েছে তাঁদের। নাম অঙ্গীকার। জনা পঞ্চাশেক সদস্য। মূলত সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর জন্য কাজ করে সংগঠনটি। বাচ্চাদের পড়াশোনা, বই খাতা কিনে দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ হলেও এই অতিমারিতে অসুস্থ মানুষের পাশেও দাঁড়াচ্ছে তারা।

আরও পড়ুন: শোভন গ্রেফতার হতেই নিজাম প্যালেসে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলেন স্ত্রী রত্না, দেখা নেই বান্ধবী বৈশাখীর

সৌভিক ঘোষ জানান, অসুস্থতার কারণে অনেকেই ঘরে রান্না করতে পারছেন না। বেরিয়ে ওষুধ আনতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে অঙ্গীকারের সদস্যরা সোশ্যাল মিডিয়ায় নাম, ফোন নম্বর দিয়ে তাঁদের উদ্যোগের কথা জানান। এরপরই নিয়মিত প্রচুর ফোন আসতে শুরু করে।

প্রতিদিন প্রায় ২০টি পরিবারের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেন তাঁরা। অনেক পরিবারই এই সাহায্যের বিনিময়ে অর্থ দেন। সেই টাকায় অনেক গরীব পরিবারকে সাহায্য করছে তাঁদের সংগঠন। সংগঠনের ৫০ জন সদস্যের প্রত্যেকে পকেট-খরচ বাঁচিয়ে মাসে ১৫০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে তহবিল বানিয়েছেন। সেই তহবিলের ভরসাতেই কাজ চলছে।