Coal Scam: মামলা প্রভাবিত করতে পারে লালার সহযোগীরা! দিপাবলী পর্যন্ত জেলেই কাটাতে হবে চারজনকে

Anup Majhi: কয়লা-কান্ডে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ইসিএলের এলাকা থেকে ৩৯ মিলিয়ন টন কয়লা তুলে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

Coal Scam: মামলা প্রভাবিত করতে পারে লালার সহযোগীরা! দিপাবলী পর্যন্ত জেলেই কাটাতে হবে চারজনকে
কয়লাকাণ্ডে লালা-বিকাশ-বিনয়ের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 08, 2021 | 10:57 PM

আসানসোল : কয়লা পাচার-কাণ্ডে অনুপ মাজি (Anup Maji) ওরফে লালার চার সহযোগী জয়দেব মণ্ডল, নীরদবরন মণ্ডল, গুরুপদ মাজি ও নারায়ণ নন্দার জামিন নাকচ হয়ে গেল। শুক্রবার আসানসোলের (Asansol) সিবিআইয়ের (CBI) বিশেষ আদালতে ছিল সেই মামলার শুনানি। প্রথম দফায় সাতদিন ও দ্বিতীয় দফায় চার দিন অর্থাৎ মোট ১১ দিনের সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষে শুক্রবার আসানসোল আদালতে চারজনকে হাজির করা হয়। সিবিআই বিশেষ আদালত চারজনের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।

এ দিন সিবিআই আদালতের বিচারক জয়শ্রী বন্দোপাধ্যায় ছিলেন না। তাঁর পরিবর্তে দায়িত্বে ছিলেন বিচারক শরণ্যা সেন প্রসাদ। দুই পক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের শেষে বিচারক চারজনের জামিন নাকচ করে দিয়ে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুজোর ছুটির পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ৮ নভেম্বর সেই শুনানির দিনে আবার এই চারজনকে আদালতে পেশ করা হবে। অর্থাৎ এই চারজনকে দুর্গাপুজো ও দিপাবলী জেলেই কাটাতে হবে।

এ দিন প্রথমে আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় জয়দেব মণ্ডলদের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে তাঁদের জামিনের আবেদন করেন বিচারকের কাছে। তিনি বলেন, চারজনই অসুস্থ। তার মেডিকেল রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, সিবিআই এই মামলায় প্রথম যে এফআইআর করেছে, তাতে এই চারজনের নাম নেই। সেই এফআইআরে যাদের নাম আছে, তাদের একজনকেও সিবিআই গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ, এদেরকে শুধু মাত্র অনুপ মাজি বা লালার সহযোগী হিসেবে ধরে নিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আইনজীবী আরও বলেন, যে সময়ে কয়লা পাচারের কথা সিবিআই বলেছে, সেই সময়ে ১৪ মাস গুরুপদ মাজি নারকোটিক্সের অন্য মামলায় জেলে ছিল। তাহলে কী সেই এই মামলায় যড়যন্ত্র করেছে? এই চারজনকে সিবিআই যখন ডেকেছে, তখনই তারা হাজির হয়েছে। মিলনবাবুর পাশাপাশি আরও দুই আইনজীবী শেখর কুণ্ডু ও সোমনাথ চট্টরাজ চারজনের হয়ে সওয়াল করে যে কোনও শর্তে তাঁদের জামিন দেওয়ার আবেদন করেন।

এরপর সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার পাল্টা বিচারকের কাছে চারজনের জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি অবশ্য এ দিন চারজনকে নতুন করে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করেননি। তিনি বলেন, এরা যথেষ্ট প্রভাবশালী। এরা জামিন পেলে মামলায় তদন্তের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। সাক্ষীদের হুমকি ও ভয় দেখানো হতে পারে। এ দিন দুপুরে রাজ্য পুলিশ, কমব্যাট ফোর্স এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে চারজনকে হাজির করা হয়।

প্রসঙ্গত, সিবিআই ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর অনুপ মাজি এবং দুই জিএম এবং ইসিএলের তিন নিরাপত্তা আধিকারিকের বিরুদ্ধে অবৈধ খনন, চুরি এবং কয়লার চোরাচালানের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। সিবিআই পরে এই মামলায় সারা দেশে প্রায় ৩০ টি জায়গায় তল্লাশি চালায়। ইতিমধ্যেই, লালার ১৭৫.৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। গ্রেফতার হওয়া চারজনকে কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা বেশ কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের শেষে তাদেরকে আবার জেরার জন্য সিবিআই ডেকে পাঠায়। তখন তাঁরা সঠিক উত্তর দেননি। বরং বিভিন্ন ধরনের তথ্য গোপন করছেন। তখনই সিবিআই এদের গ্রেফতার করে।

সিবিআই ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে যে জয়দেব সহ এই চারজন সারা দেশে অনুপ মাজি বা লালার সঙ্গী হিসেবে কাজ করতো। কয়লা কারবারের অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ছিল এই লালা। দিও সুপ্রিম কোর্ট রক্ষা কবচ দেওয়ায় সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কয়লা চোরাচালানকাণ্ডে সিবিআই এর আগে কয়লা চোরাচালান মামলায় লালা ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জয়দেব মণ্ডলের বাড়ি, নারায়ণ নন্দা, নীরদ বরন মণ্ডল, গুরুপদ মাজির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ছিল। সেই অভিযানে তাদের কাছ থেকে কিছু তথ্যও সংগ্রহ করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

আরও পড়ুন: Afghanistan Blast: শুক্রবারের নমাজ চলাকালীনই কুন্দুজ়ে শিয়া মসজিদে বিস্ফোরণ, মৃত অন্তত ১০০