AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Durgapur Gang Physical Assault: ‘প্রয়োজন পড়লে বলবেন’, শুভেন্দু ফোন করতেই গলা ধরে এল নির্যাতিতার বাবার

Durgapur News: আরজি করের ঘটনার পর রাজ্যের বুকে এটি আরও একটি ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনা। ধর্ষণ নয়, অভিযোগ গণধর্ষণের। সুতরাং, স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আবারও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে বিরোধী শিবির। আসরে নেমেছে বিজেপি। পিছিয়ে নেই বামেরাও।

Durgapur Gang Physical Assault: 'প্রয়োজন পড়লে বলবেন', শুভেন্দু ফোন করতেই গলা ধরে এল নির্যাতিতার বাবার
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীImage Credit: নিজস্ব চিত্র
| Updated on: Oct 11, 2025 | 6:21 PM
Share

দুর্গাপুর: ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন খোদ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিক্য়াল কলেজে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে গেরুয়া শিবির। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাসপাতালের সামনে ধর্নায় বসেছেন বিজেপি বিধায়ক। সরব হয়েছে বামেরাও। হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা গিয়েছে তাঁদেরও।

কী ঘটেছে

ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা ওই নির্যাতিতা ডাক্তারি পড়ুয়া। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ কলেজের এক সহপাঠীর সঙ্গে ফুচকা খেতে বেরিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় ফাঁকা রাস্তায় বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁদের উত্যক্ত করতে শুরু করে। বলে কটূ কথা। এমনকি, ওই পড়ুয়ার সঙ্গে থাকা বন্ধুকে তাড়া করে সেই দুষ্কৃতীরা। ভয়ে পালিয়ে যায় সে। তারপর ঘটে পৈশাচিক কাণ্ড। মেয়েটিকে একা জঙ্গলে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। চলে অকথ্য অত্যাচার। গণধর্ষণের পর নির্যাতিতার মোবাইল কেড়ে নেয় অভিযুক্তরা। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি ওই নির্যাতিতা। গ্রেফতার এখনও শূন্য। জোর কদমে তদন্ত চলছে বলেই জানিয়েছে পুলিশ।

চড়ছে রাজনীতি

আরজি করের ঘটনার পর রাজ্যের বুকে এটি আরও একটি ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনা। ধর্ষণ নয়, অভিযোগ গণধর্ষণের। সুতরাং, স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আবারও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে বিরোধী শিবির। আসরে নেমেছে বিজেপি। পিছিয়ে নেই বামেরাও।

ইতিমধ্য়ে নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন নির্যাতিতা বাবার ফোন করেন তিনি। খোঁজ নেন এফআইআর দায়ের হয়েছে কিনা। কাঁদো কাঁদো গলায় নির্যাতিতার বাবা তাঁকে জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ জানান হয়েছে। পাশাপাশি, তরুণীর সঙ্গে গত সন্ধ্যায় যে সহপাঠী ছিলেন তাঁকে আটক রাখা হয়েছে।

ফোনালাপে নির্যাতিতার বাবাকে শুভেন্দু আরও বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য কিছু প্রয়োজন পড়লে আমাকে জানাবেন। আপনি যদি ওখানে চিকিৎসায় সন্তুষ্ট না হন, অবশ্যই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। কলকাতার কোনও একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেব।’

বিক্ষোভ বিজেপির

ইতিমধ্য়েই দুর্গাপুরের গণধর্ষণের ঘটনায় পথে বিক্ষোভে বসেছেন দুই বিজেপি বিধায়ক। একজন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। অন্যজন সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে কাঠগড়ায় টেনে এনে হাসপাতালের সামনেই ধর্নায় বসেছেন তাঁরা, ডাক দিয়েছেন অনশনেরও। এদিন লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘এত ঘণ্টা কেটে গেল, কেন এখনও গ্র্রেফতারি হয়নি? কেন পুলিশ বসে রয়েছে? যতক্ষণ না গ্রেফতারি না হচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন-অনশন চলছে।’

সুর চড়িয়েছে বামেরাও। শনিবার সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তারা। এদিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘আমাদের দলের লোকেরা গিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চাপ দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনও ভাবে গোটা ঘটনাকে ধামাচাপা না দেওয়া হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে চাকরির টোপ, ঘর দিয়ে গোটা ব্যাপারটাকে দফারফা করে দেওয়া হয়। আমরা মনে করি, পুলিশের এই নিয়ে যথার্থ তদন্ত করা উচিত।’

একই সুর সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখোপাধ্য়ায়েরও। এদিন তিনি বললেন, ‘গোটা দুর্গাপুর এবং আসানসোলে এখন সমাজবিরোধীদের দাপাদাপি। কারখানা বন্ধ হয়েছে, মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। পুলিশ-প্রশাসন ওদের কাছে আত্মসমর্পণ করে দিয়েছে। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, নিরাপত্তায় কতটা ফাঁক রয়েছে।’

কী বলছে তৃণমূল?

সহপাঠীর ভূমিকা নিয়ে ইঙ্গিতেই যেন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তারা। এদিন তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘নির্যাতিতার সহপাঠী তাঁকে ওই অবস্থায় ছেড়ে পালিয়ে যায়। সেই সুযোগ নিয়ে এই নোংরামি হয়েছে। সেই বন্ধুকেও তলব করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন ওত রাতে ওরা ওখানে গিয়েছিলেন। আর যারাই এই অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত তাদের প্রত্যেককেই গরাদের পিছনে পাঠানো হবে। এটা তো বিজেপি শাসিত রাজ্য নয় যে ধর্ষকদের জেল থেকে বের করে মাল্যদান করা হবে। এ রাজ্যের বুকে ধর্ষকের জায়গা জেলের পিছনে।’

তবে এই নিয়ে আপাতত কোনও মন্তব্য করতে নারাজ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘কারা করল, চেনা-পরিচিত কেউ কিনা, এই সমস্ত বিষয় নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। গোটা ঘটনাটাই অনভিপ্রেত। কী হয়েছে, কীভাবে হয়েছে, তা না জেনে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। শুধু বিজেপি-সিপিএম-কে বলব, আপনারা মাথা ঘামাবেন না।’