Asansol Corporation: তিন মাস পার হতে চলল, আসানসোলে তৈরি হয়নি পুরবোর্ড, হাইকোর্টে মামলা জিতেন তিওয়ারির স্ত্রীর
Mayor: সংখ্যাগরিষ্ঠভাবে আসানসোল পুরনিগমে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তারপরও কেন বোর্ড তৈরি হতে এতটা সময় লাগছে তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।
পশ্চিম বর্ধমান: মেয়র শপথ নেওয়ার পর প্রায় তিন মাস হতে চলল। এখনও তৈরি হয়নি পুরবোর্ড। সে কারণে মেয়রের জরিমানার দাবি তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি। মেয়রের কাছে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দাবি করে এই মামলা দায়ের করেন তিনি। সোমবার বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চে এই মামলা গৃহীত হয়েছে। আগামী ৯ জুন মামলার প্রথম শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চৈতালি তিওয়ারির অভিযোগ, মেয়র পারিষদ তৈরির একটা সময়সীমা আছে। দিনের পর দিন বোর্ড গঠন না হওয়া মানে, সাধারণ মানুষকেও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রাখা। মানুষের ভোটে জিতে এভাবে তাঁদের বঞ্চিত করা যায় না। তাই তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। যদিও পুরবোর্ড গঠনে বিলম্ব হওয়া প্রসঙ্গে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, লোকসভার উপনির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে কিছুটা দেরি হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি বোর্ড তৈরি হয়ে যাবে।
চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আসানসোল পুরনিগমের মেয়র হিসাবে শপথ নেন বিধান উপাধ্যায়। এই শপথের পর ৯০ দিন হতে চলল। অভিযোগ, এখনও মেয়র পারিষদই তৈরি হয়নি আসানসোলে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে বোর্ড তৈরি হওয়ার কথা। চৈতালি তিওয়ারির দাবি, বিরোধী দলের প্রতিনিধি হিসাবে তিনি মেয়রকে এ নিয়ে নোটিসও পাঠিয়েছিলেন। ১০ দিনের মধ্যে জবাবও দিতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি কোনও জবাব পাননি। প্রাক্তন মেয়রের স্ত্রীর দাবি, মানুষের স্বার্থেই তিনি বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে গিয়েছেন। মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “আমার কাছে এখনও কোনও নোটিস আসেনি। আসার পর চিন্তাভাবনা করা হবে। তবে আইন আইনের পথেই চলবে। আমি সকলকেই বলেছি, লোকসভার উপনির্বাচন ছিল। ফলে কিছু বিলম্ব হয়েছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি বোর্ড তৈরি হয়ে যাবে।”
সংখ্যাগরিষ্ঠভাবে আসানসোল পুরনিগমে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তারপরও কেন বোর্ড তৈরি হতে এতটা সময় লাগছে তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। এখনও মেয়র পারিষদ, বোরো চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করতে পারেনি তৃণমূল। তবে এমন অভিযোগও শোনা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই দু’জন ডেপুটি মেয়রের (মন্ত্রী মলয় ঘটকের ভাই অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিমূল হক) নাম ঘোষণা হয়েছে। যার জেরে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
এ রাজ্যে দু’জন ডেপুটি মেয়রের উদাহরণ নেই। ২০০৬ সালের মিউনিসিপাল অ্যাক্টও তাতে সমর্থন দেয় না বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। এদিকে ডেপুটি মেয়র শপথ না নিলে, মেয়র পারিষদরাই বা কীভাবে শপথ নেবেন, নামই বা কী করে ঘোষণা হবে? এ নিয়ে অবশ্য ইতিমধ্যেই মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেছেন, “সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসানসোলে দু’জন ডেপুটি মেয়র থাকবেন। সেই ফাইল রাজ্যপালের কাছে পড়ে আছে। রাজ্যপাল সই না করলে এতে কিছু বলার নেই।”
আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের অভিযোগ, তৃণমূলের ভিতরকার কোন্দলের কারণেই দু’জন ডেপুটি মেয়র ঘোষণা হয়েছে। যা পুরআইন বিরোধী। এর জেরেই পরিষেবা পাচ্ছেন না আসানসোলবাসী। অন্যদিকে, তৃণমূলের রাজ্য কোর কমিটির সদস্য অশোক রুদ্রর দাবি, বিজেপি দলকে তো মানুষের সঙ্গে পাওয়া যায় না। এখন দু’ জায়গায় দেখা যায়, এক আদালত, দুই রাজভবন।