West Bengal Panchayat Elections 2023: বাংলার অসম লড়়াইয়ে শিবরাত্রির সলতে আমরাসোতা! জয় অটুট রাখতে সমর্থ বামেরা
West Bengal Panchayat Elections 2023: দল বদলের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে তিন প্রজন্মের কমিটেড সিপিএম পরিবারের সদস্যদের টিকিট দিয়েছিল বামেরা। দল বদলের বিড়ম্বনা ঢাকতে এই কৌশল।

আসানসোল: কঠিন লড়াই। ভোটের দিন লুটেরাদের আটকে, কাউন্টিং আগলে, মারধর খেয়ে, রক্তপাত হয়েও নিজেদের জয় অটুট রাখতে সমর্থ হয়েছে বামেরা। পশ্চিম বর্ধমানে একমাত্র পঞ্চায়েত আমরাসোতা। সেই পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে রাখতে সমর্থ হয়েছে সিপিএম। আমরাসোতা পঞ্চায়েতের ৫ টির মধ্যে ৩টি আসনে জয়ী সিপিএমের প্রার্থীরা। সিপিএম প্রার্থী দেবনাথ কোড়া, সঞ্জয় হেমব্রম ও ববিতা সোরেন জয়ী হন গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে। পঞ্চায়েত সমিতি জয়ী হন কান্তি মুর্মু। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে তিনজনের জয়ের ব্যবধান ছিল ৬৬,৬৭ ও ৬৮।
দু’ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে বাঁশড়া মোড় হয়ে কিছুটা এগিয়ে গেলে শুরু হয় আমরাসোতা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। ইসিএল কলোনির পাশ দিয়ে গ্রামে ঢুকতে হয় ঝা চকচকে রাস্তা দিয়ে। ভোটের রেজাল্টের পরেও গ্রামে প্রহরা কেন্দ্রীয় বাহিনী। জয়ের পরেও আনন্দ উল্লাস করতে পারেনি বামেরা। রয়েছে আতঙ্ক।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই আমরাসোতায় সিপিএমের অপরাজেয় তকমা ঘোঁচাতে মরিয়া ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলায় যতবার পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে ততবার নির্বাচনে জিতে বোর্ড গঠন করেছে সিপিএম। রাজ্যে পালা বদলের পর ২০১৩, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও নিজেদের ক্ষমতা ধরে রেখেছিল লাল পার্টি। কিন্তু মানুষ সিপিএমকে নির্বাচিত করলেও প্রধান-সহ তিন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। দলবদলের পর পঞ্চায়েত দখল করে শাসক শিবির। তবে, মানুষের ভোটে জয়ের স্বাদটাই আলাদা। সেটা এবারেও অধরা থেকে গেল তৃণমূলের। রাজ্যের শাসক দল অধরা বাসনা পূর্ণ করতে দলবদলু দুই সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্যকেই প্রার্থী করেছিল। কিন্ত তাঁরা হেরে যান।
অন্যদিকে, দল বদলের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে তিন প্রজন্মের কমিটেড সিপিএম পরিবারের সদস্যদের টিকিট দিয়েছিল বামেরা। দল বদলের বিড়ম্বনা ঢাকতে এই কৌশল। প্রচারে গিয়েও সিপিএম প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ‘জিতলে দল বদল করব না। ভরসা রাখুন।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, “প্রধান থাকাকালীন এলাকার সীমা মণ্ডল ভাল কাজ করেছিলেন। ২০১৮ সালেও পঞ্চায়েত সদস্য হয়েছিলেন। তারপর কী যে বুঝলেন, নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে দল পাল্টে ফেললেন। এটা অনেকে মেনে নিতে পারেননি।”
অভিযোগ, তৃণমূলের আমলে কোনও কাজ হয়নি এই পঞ্চায়েতে। পুজোর সময়েও ড্রেন পরিষ্কার, রাস্তা পরিস্কার হয়নি। একশো দিনের প্রকল্পও কেন বন্ধ, তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই বহু গ্রামবাসীর।” তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি উত্তম মণ্ডল বলেন, “পরাজয়ের কারণ পর্যলোচনা করা হবে।” সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক রনু দত্ত বলেন, “মানুষ বেইমানদের জবাব দিয়েছে।”
তবে তারপরও রাজনৈতিক মহলে একটি জল্পনা ঘোরাফেরা করছে। জিতে তো গেল। দল বদল করবেন না তো বাম প্রার্থীরা? এই অপ্রিয় প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে জয়ী সিপিএম প্রার্থীদের। তাঁরা জানান, শপথ নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। কাউন্টিংয়ে রক্ত ঝরেছে। তৃণমূল ও প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে অসম লড়াই করে জয় এসেছে। আমরাসোতাকে কৌশলে আর আনতে পারবে না তৃণমূল।





