Anubrata Mondal: অনুব্রত-মামলার বিচারককে হুমকিকাণ্ডে এবার পুলিশি তল্লাশি, ধৃত আইনজীবীর বাড়িতে রাতেই উর্দিধারীরা
Anubrata Mondal: গত সপ্তাহেই সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর কাছে একটি হুমকি চিঠি যায় বলে অভিযোগ ওঠে।
পশ্চিম বর্ধমান: আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারককে হুমকি চিঠির অভিযোগ উঠেছিল কিছুদিন আগেই। সেই ঘটনায় সোমবার গ্রেফতার হন আইনজীবী সুদীপ্ত রায়। আসানসোল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, মোবাইল ফোনের নম্বর ট্র্যাক করে এই গ্রেফতারি। অভিযোগ, এদিন রাতেই সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। যদিও সুদীপ্ত রায়ের মায়ের দাবি, তাঁর ছেলেকে ফাঁসানো হচ্ছে। এই ঘটনায় তিনি পূর্ব বর্ধমানের এগজিকিউটিভ আদালতের আপার-ডিভিশন ক্লার্ক (ইউডিসি) বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন।
গত সপ্তাহেই সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর কাছে একটি হুমকি চিঠি যায় বলে অভিযোগ ওঠে। সেখানে লেখা ছিল, অনুব্রত মণ্ডলকে জামিন না দেওয়া হলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। এই নিয়ে তুমুল হইচই হয়। হাইকোর্টের ৮২ জন আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রমণকে চিঠি দিয়ে জানান, এ রাজ্য থেকে যেন অনুব্রত-মামলা সরিয়ে দেওয়া হয়।
তাঁরা লেখেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই কোর্টের বিচারককে হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় নামে একজন সেই চিঠি লিখেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই আইনজীবীদের বক্তব্য, বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের জামিন না হলে এনডিপিএস (Narcotic Drugs and Psychotropic Substances Act) মামলায় বিচারককে ফাঁসানো হবে।
এদিকে এই মামলায় বাপ্পাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলেও গ্রেফতার হন আইনজীবী সুদীপ্ত রায়। সোমবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের মেমারির চিনুই গ্রাম থেকে ধৃত আইনজীবী সুদীপ্ত রায়ের সহকারী দীপক মহুরিকেও আটক করে পুলিশ। সুদীপ্তর মা জানান, সোমবার দুপুরে আসানসোল আদালত চত্বরে গিয়েছিলেন সুদীপ্ত। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার বাপ্পাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের দুই পুলিশকর্তা।
জিজ্ঞাসাবাদের পর বাপ্পা দাবি করেন, সুদীপ্ত রায় নামে বর্ধমান আদালতের এক আইনজীবী দিন দুয়েক আগে তাঁকে আদালত চত্বরে হুমকি দিয়েছিলেন। তাকে বলা হয়, “তোর যা ব্যবস্থা করার, হয়ে গিয়েছে। এ বার তোর চাকরি খাব।” বাপ্পা গোটা বিষয়টি বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসককে জানান। হুমকি চিঠির পিছনে সুদীপ্তর হাত রয়েছে বলে দাবি করেন। শুক্রবার বাপ্পার গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়। এরপরই সোমবার গ্রেফতার করা হয় সুদীপ্তকে।
এদিকে সোমবার রাতেই আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ বর্ধমান থানার পুলিশের সহযোগিতায় ধৃত আইনজীবী সুদীপ্ত রায়ের বর্ধমান শহরের বড়নীলপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে তল্লাশি চলে। সুদীপ্ত রায়ের মা অর্চনা রায়ের দাবি, “আমার ছেলেকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। জালিয়াতি করছিল, আমার ছেলে প্রতিবাদ করেছে। ও টাকা তুলত। আমার ছেলে প্রতিবাদ করায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে। বাপ্পা সই করেছে, সিল দিয়েছে, আমার ছেলে কোথায় পাবে সিল? ছেলেটাকে নিয়ে গেল পুলিশ। বলল মঙ্গলবার কোর্টে তোলা হবে, আমরা যেন যাই।”