‘বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না,’ ‘দুঃস্থ’ অভিযুক্তদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত

Arrest: অভিযুক্তদের বয়স কম। তার ওপর তারা গরিব পরিবারের একমাত্র সদস্য। এই কারণে তাদের  সাজা কম করার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু খারিজ হল সেই আবেদন। বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত করে সোনা ও টাকা লুটের ঘটনায় ৪ অভিযুক্তকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বর্ধমান আদালত।

'বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না,' 'দুঃস্থ' অভিযুক্তদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 08, 2021 | 10:54 PM

পূর্ব বর্ধমান: অভিযুক্তদের বয়স কম। তার ওপর তারা গরিব পরিবারের একমাত্র সদস্য। এই কারণে তাদের  সাজা কম করার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু খারিজ হল সেই আবেদন। বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত করে সোনা ও টাকা লুটের ঘটনায় ৪ অভিযুক্তকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বর্ধমান আদালত। এছাড়াও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও একবছরের সশ্রম কারাবাসের নির্দেশ দিল আদালত। বুধবার দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক অর্জুন মুখোপাধ্যায় এই সাজা ঘোষণা করেছেন। সাজাপ্রাপ্তদের নাম অজয় দাস, রীতেশ কুমার রাম, সঞ্জিৎ কুমার বিন্দ ও রঞ্জিৎ কুমার বিন্দ।

বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুরমাঠ এলাকায় অজয়ের বাড়ি। বাকিদের বাড়ি বিহারের লখিসরাই থানার অভয়পুর ও খাগুয়ার গ্রামে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৫, ৩৯৭ ও ৪১২ ধারায় সাজা দেওয়া হয়েছে অভিযুক্তদের। সাজা ঘোষণার আগে প্রত্যেকের বক্তব্য শোনেন বিচারক। তাদের বয়স কম এবং তাদের রোজগারের উপর পরিবার নির্ভরশীল বলে জানায় অভিযুক্তরা। সরকারি আইনজীবী অবশ্য সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষে সওয়াল করেন। সাজা ঘোষণা করে বিচারক মন্তব্য করেন, ‘বিচার ব্যবস্থার স্বার্থেই ৪ জনকে সাজা দেওয়া হল। না হলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষ আস্থা হারাবে। অপরাধীরা ছাড়া পেলে অন্যরা এ ধরণের অপরাধ করতে উৎসাহিত হবে।’

সংশ্লিষ্ট মামলায় সরকারি আইনজীবী উদয় শঙ্কর কোনার জানান, ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর ঘটনাটি ঘটে। সেদিন দিন রাত ১২টা নাগাদ বর্ধমান থানার নেড়োদিঘির বাসিন্দা ওমর মোল্লা শহরের জেলখানা মোড় থেকে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। প্রতাপপুরে সাবজোলা পুলের কাছে একটি চেরি রঙের একটি টাটা সুমো তাঁর পথ আটকায়। সুমো থেকে নেমে ৫ জন তাঁকে ঘিরে ধরে। তাদের মধ্যে একজন বন্দুকের বাঁট দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে। এরপর তাঁর কাছ থেকে সোনার চেন, হাতের ব্রেসলেট, ৭০ হাজার টাকা ও ২টি মোবাইল কেড়ে নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে ওমরকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই হয়। ঘটনার বিষয়ে ওমর নিজেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

এই দুষ্কৃতীদের ধরতে একটি বিশেষ টিম গঠন করে পুলিশ। পরের বছর ১২ মার্চ মাদক-সহ ওই ৫ জনকে গ্রেফতার করে বর্ধমান থানার পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ। ৫ জনকে টিআই প্যারেডে শনাক্ত করেন ওমর। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে বিহারে যায় পুলিশ। সেখান থেকে মোবাইল দু’টি উদ্ধার হয়। ধৃত ৫ জনের মধ্যে একজন নাবালক বলে বিচার চলাকালীন জানা যায়। তার বিষয়টি জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে বিচারের জন্য পাঠানো হয়। ধৃতদের টিআই প্যারেডে এবং ডকে শনাক্ত করার বিষয়টি সাজা ঘোষণার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। তবে, সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী কমল দত্ত বলেন, ধৃতদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি, ওমরের বাইকটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেনি। মাদক মামলায় অভিযুক্তরা খালাস পেয়েছে। অন্য একটি ছিনতাইয়ের মামলাতেও তাদের খালাস ঘোষণা করেছে আদালত।

আরও পড়ুন: বাড়ি বিক্রি করতে গিয়ে বৃ্দ্ধের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ৩ লক্ষ টাকা!