Durga Puja: পুজোর আনন্দ কী, জানেই না এই গ্রাম! এখানে শুধু ‘অভিশাপ’ কাটার অপেক্ষা
Kalna: পুজোর ক'টা দিন ঘরে বসেই দিন কাটে গ্রামবাসীদের। পুজোর দিনগুলিতে যখন আপামর বাঙালি আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে, এই গ্রাম যেন তখন অপেক্ষা করে কোনও এক অভিশাপ কাটার অপেক্ষায়। 'সময়টা আমাদের খুব দুঃখের' পুজোর আগে গ্রামবাসীদের গলায় ঝরে পড়ছে একরাশ হতাশার সুর।
কেতুগ্রাম: এই গ্রামে শরৎ আসে। আকাশে পেজা তুলোর মতো মেঘ আসে। কাশফুলের গন্ধও ভেসে আসে। আসে না শুধু পুজোর আনন্দ (Durga Puja 2023)। কথা হচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) কেতুগ্রাম ২ ব্লকের অন্তর্গত বিধানপল্লী গ্রামের। এই গ্রামে কোনও দুর্গাপুজো হয় না। পুজোর ক’টা দিন ঘরে বসেই দিন কাটে গ্রামবাসীদের। পুজোর দিনগুলিতে যখন আপামর বাঙালি আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে, এই গ্রাম যেন তখন অপেক্ষা করে কোনও এক অভিশাপ কাটার অপেক্ষায়। ‘সময়টা আমাদের খুব দুঃখের’ পুজোর আগে গ্রামবাসীদের গলায় ঝরে পড়ছে একরাশ হতাশার সুর।
কেন এই অবস্থা কালনার এই গ্রামের? মূল সমস্যা হল কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই গ্রাম। গ্রামে ঢোকা ও বেরনোর জন্য একটি মূল রাস্তা আছে বটে। কিন্তু সেখানেও প্রায় দেড় কিলোমিটার জমির আল পথ পেরোতে হয়। এরপর একটা ছোট্ট নদী, যাকে স্থানীয় ভাষায় বলে কাঁদর। সেই ছোট নদী পেরিয়ে, তারপর বড় রাস্তা। নদী পারাপার করার ক্ষেত্রেও অনেক সমস্যা। অল্প কিছু ছোট ছোট ডিঙি আছে। সেগুলিও আবার নিজস্ব মালিকানাধীন। মালিকদের অনুরোধ করলে, নদী পার করে দেয়।
যোগাযোগের এই সমস্যার কারণেই গ্রামে দুর্গাপুজো হয়ে ওঠে না। দুর্গা প্রতিমা নিয়ে গ্রামে প্রবেশ করার সুবন্দোবস্ত নেই। তাই গ্রামের ছোট থেকে বড় সকলেই বঞ্চিত পুজোর আনন্দ থেকে। জানা যাচ্ছে, এই গ্রামটিতে বসতি গড়ে উঠেছিল ১৯৪৯ সালে। এককালে ছোট নদীটি পারাপারের জন্য কাঠের সেতু ছিল একটি। কিন্তু পরে তা ভেঙে যায়। কয়েক বছর আগে নতুন করে একটি কাঠের সাঁকো বানানো হয়েছিল। কিন্তু সেটিও ভেঙে গিয়েছে। এখন চাষের ক্ষেতের পাশ দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটারের আল পথ ধরে হেঁটে গিয়েই তাঁদের রাস্তায় উঠতে হয়।
যোগাযোগের এই সমস্যার কারণে সময়ে সঙ্গে সঙ্গে কমেছে গ্রামের লোকসংখ্যাও। কালনার এই গ্রামে এখন মাত্র ৩৬টি পরিবারের বাস। কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মধ্যে জীবন কাটিয়ে, পুজোর আনন্দ কী জিনিস, তা ভুলেই গিয়েছেন গ্রামবাসীরা। যদিও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বিশ্বাস আশ্বস্ত করছেন, দ্রুত গ্রামে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি নদীর উপরে যে সাঁকোটি ছিল, সেটিও নতুন করে বানিয়ে দেওয়ার বিষয়ে পঞ্চায়েতে আলোচনা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।