‘কোভিডে ঘরে বসে মাইনে পেয়েছেন শিক্ষকরা…’ শিক্ষক দিবসে মন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে

Siddiqullah Chowdhury: "শিক্ষকেরা ক্লাসের সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করেন। মোবাইলে কথাবার্তা বলেন। চল্লিশ মিনিটের ক্লাসে কুড়ি মিনিট কাটিয়ে দিচ্ছেন এই করে। এটা খুব দুঃখের ও বেদনার।''

'কোভিডে ঘরে বসে মাইনে পেয়েছেন শিক্ষকরা...' শিক্ষক দিবসে মন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 2:44 PM

পূর্ব বর্ধমান: শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষকদেরই একহাত নিলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী (Siddiqullah Chowdhury) । আর যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়লেন তিনি। শিক্ষকদের উদ্দেশে মন্ত্রীর কটাক্ষ, করোনাকালে বাড়িতে বসে বেতন নিয়েছেন তাঁরা। তার পর ছাত্র গঠনের দায়িত্ব কার ওপর বর্তাবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি । এমনকি সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের পড়াশোনার মানের তুলনা টেনে শিক্ষকদের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে টিপ্পনী করতে শোনা যায় সিদ্দিকুল্লাকে।

মন্ত্রীর কথায়, “শিক্ষকেরা ক্লাসের সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করেন। মোবাইলে কথাবার্তা বলেন। চল্লিশ মিনিটের ক্লাসে কুড়ি মিনিট কাটিয়ে দিচ্ছেন এই করে। এটা খুব দুঃখের ও বেদনার।” এখানেই থামেননি তিনি। বলেন, “কোভিডে শিক্ষকরা ঘরে বসে মাইনে পেয়েছেন। এরপর ছাত্রদের গড়ার দায়িত্ব কার? মেধা ঠিক করা শিক্ষকদের কাজ, যেটা মিশনারি স্কুল, ক্রিশ্চান মিশনারি স্কুল কিংবা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল করে থাকে। এই ধরনের স্কুলগুলি ভাল রেজাল্ট করতে পারে , তার প্রধান কারণ শিক্ষক। ছাত্র এবং অভিভাবক এই তিনটি খুঁটি তারা তৈরি করতে পেরেছে।” তাই সরকারের অর্ডারের অপেক্ষায় না থেকে অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন মন্ত্রী। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এসে কোচিং করানোর পরামর্শও দেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।

রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বর্ধমানের টাউনহলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আর এক মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। সেখানে দাঁড়িয়ে শিক্ষক সমাজকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রীর এহেন মন্তব্য অনেকেই অসংবেদনশীল বলে মনে করছেন। বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি।

বর্ধমান সদর জেলা বিজেপি সম্পাদক শ্যামল রায়ের প্রতিক্রিয়া, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য। শিক্ষক দিবসে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এই ভাষা প্রয়োগ করছেন। আমরা দলের পক্ষ থেকে ধিক্কার জানাই। আজ উনি মন্ত্রিত্ব করছেন শিক্ষকদের অবদান ছিল বলেই। যাঁদের উদ্দেশে উনি একথা বলেছেন, উচিত ছিল নির্দিষ্ট করে তাঁদের বলা। কিন্তু ওপেন ফোরামে আজকের মতো দিনে এই মন্তব্য সমীচীন নয়। অশিক্ষিত, দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তি হলে এ ধরনের মন্তব্য করেন।” পাশাপাশি বেসরকারি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে পরীক্ষায় ভাল ফল হচ্ছে, সরকারি স্কুলে তা হচ্ছে না, মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির প্রতিক্রিয়া, ‘নিজেই সরকারের অংশ হয়ে তার সমালোচনা করছেন। ওঁনার দ্রুত পদত্যাগ করা উচিত।’

প্রসঙ্গত, এর আগে ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ দিতে গিয়ে তাঁর ওপর আক্রমণের ঘটনায় নিজের দলের একাংশের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। ‘‘তৃণমূলের স্থানীয় কয়েকজন নেতা এবং দুষ্কৃতীর উস্কানিতে ত্রাণ লুট হয়েছে। আমাকে ধাক্কা মারা হয়েছে। ত্রাণের গাড়ির চালক-খালাসিদের মারধর করে গাড়ির চাবি কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’’ আরও পড়ুন: নবান্নের প্যাডে ছাপানো পূর্ত দফতরের নিয়োগপত্র, ৪ লক্ষ টাকা দিয়েই মাথায় হাত যুবকের!