বর্ধমানে দলীয় কর্মী খুনে অভিযুক্ত নেতাকেই সাড়ম্বরে আপ্যায়ন তৃণমূলের!
TMC Clash:গত মঙ্গলবার পৌরসভা থেকে বাড়ি ফেরার পথে খালাসীপাড়ায় আক্রান্ত হন অশোক মাঝি। আসলে প্রাক্তন কাউন্সিলরকে বাঁচাতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।
পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমানের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) কর্মী অশোক মাঝি খুনের ঘটনায় পূর্বেই বিধায়ক খোকন দাস ঘনিষ্ঠ শিবশঙ্কর ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত দলেরই সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রবকে দলীয় কর্মসূচিতে সাড়ম্বরে উপস্থিত হতে দেখা গেল। শুধু তাই নয়, উপস্থিত ছিলেন খোদ বিধায়ক খোকন দাসও। তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্য়ে এদিন পতাকা উত্তোলনের অনুষ্ঠানে দেখা যায় দলীয় মঞ্চে খোকন দাসের পাশেই বসে রয়েছেন আব্দুল রব। শুধু আব্দুল নন, খুনের ঘটনায় অন্য আরেক অভিযুক্ত ইফতিকার আহমেদকেও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় এদিন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে গেরুয়া শিবির। বর্ধমান শহরের বিজেপি কনভেনর কল্লোল নন্দন বলেন, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কী না সেটা পরের কথা। কিন্তু, যেখানে একজন দলের কর্মী খুন হয়েছেন এবং সেই খুনের ঘটনায় যাঁরা যুক্ত তাঁদের শাস্তি না হয়ে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। এতে দলই কলুষিত হচ্ছে। প্রশাসন নির্বিকার। এখনই দোষীদের গ্রেফতার করা উচিত।”
পাল্টা, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিত্ দাস বলেন, “দলের তরফে এমন কোনও অভিযোগ করা হয়নি। নিহতের পরিবার এই অভিযোগ করেছে। দলের তরফে যেভাবে পাশে থাকার সেইভাবে থাকা হয়েছে। পুলিশ পুলিশের মতো তদন্ত করবে। এতে আমাদের কিছু করার নেই। আইন আইনের পথে চলবে।”
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার পৌরসভা থেকে বাড়ি ফেরার পথে খালাসীপাড়ায় আক্রান্ত হন অশোক মাঝি। আসলে প্রাক্তন কাউন্সিলরকে বাঁচাতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এপ্রসঙ্গে বর্ধমান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দুপুরে তিনি কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। খালাসীপাড়া এলাকায় তাঁর ওপর কয়েকজন বহিরাগত রড, লাঠি দিয়ে আক্রমণ করে। তাঁকে মারছে দেখে দলের কর্মী অশোক মাঝি ও তাঁর স্ত্রী চন্দনা মাঝি ছুটে যান। তাঁদের উপরও হামলা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তাঁরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে মৃত্যু হয় অশোকের।
সেলিম সেদিন বলেছিলেন, “অল্পের জন্য আমি কোনওভাবে বেঁচে যাই। কিন্তু দুষ্কৃীতরা অশোক ও তাঁর স্ত্রীকে মারাত্মকভাবে মারধর করে।” তাঁর দাবি, অভিযুক্তরা সকলেই বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস সহ তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর ঘোষ, আব্দুল রব , ইফতিকার আহমেদের অনুগামী।
ঘটনার তদন্তে ১০ জনের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের স্ত্রী। বুধবার গ্রেফতার করা হয় চার জনকে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে শিবশঙ্করের নামও উঠে আসে। আজ সকালে গ্রেফতার করা হয় শিবশঙ্করকে। বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হওয়ায় অস্বস্তিতে তৃণমূল। পুলিশ শিবশঙ্করকে গ্রেফতার করলেও এখনও অনেকেই অধরা। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে স্পেশাল অপারেশন টিম। আরও পড়ুন: সিপিএম নেতার গোপন অডিয়ো ফাঁস! কামারহাটি বোমাকাণ্ডে থানায় অভিযোগ দায়ের মদনের