Health Centre: জেলায় জেলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র, তবু পরিষেবা পেতে নাকানিচোবানি খাচ্ছেন রোগীরা, উঠে এল আসল কারণ…
Purba Burdwan News: স্থানীয় সূত্রে খবর, এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভর করেন এলাকার ৭-৮টি গ্রামের ১০ থেকে ১২ হাজার বাসিন্দা। অথচ এর পরিষেবা নিয়ে কারও কোনও হেলদোলই নেই।
পূর্ব বর্ধমান: জেলায় জেলায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা কম নেই। তবে অধিকাংশতেই পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন সময়। চিকিৎসকের অপ্রতুলতা, নার্সিং স্টাফের অভাব-সহ আনুসঙ্গিক বিভিন্ন পরিষেবা নিয়েই অভিযোগ তোলেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের দিগনগর। সেখানকার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সোমবার বিক্ষোভও দেখান এলাকার লোকজন। এ বিষয়ে ডেপুটি সিএমওএইচ-২ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “চিকিৎসকের সঙ্কট আছে এটা সত্যি। জেলায় জেলায় যতজন চিকিৎসক থাকার দরকার, প্রায় তার অর্ধেক দিয়ে আমাদের কাজ চালাতে হচ্ছে। তবে রাজ্য সরকার চিকিৎসক নিয়োগ করছে। কাউন্সেলিং আছে। আশা করছি আমরা পুজোর আগেই চিকিৎসক পেয়ে যাব। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও চিকিৎসকরা যোগ দেবেন। ”
আউশগ্রামের দিগনগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় ১০ বছর ধরে এখানে কোনও স্থায়ী চিকিৎসক নেই। নার্স ও ফার্মাসিস্ট চিকিৎসা করেন। সেটাও আবার অনিয়মিত। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে বলে দাবি এলাকার লোকজনের। সাফাই কর্মী বেতন না পেয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। নিয়মিত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে সমাজ বিরোধীরা জুয়ার আসর বসায় বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভর করেন এলাকার ৭-৮টি গ্রামের ১০ থেকে ১২ হাজার বাসিন্দা। অথচ এর পরিষেবা নিয়ে কারও কোনও হেলদোলই নেই। স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদার দফাদার বলেন, “এখানে যিনি সাফাই কর্মী, তিনি দীর্ঘদিন টাকা পান না। ফলে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছেন। এখানকার স্থায়ী নার্সিং স্টাফকে গুসকরাতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। জোর করেই হয়ত তাঁকে ওখানে পাঠানো হয়েছিল। এখন আবার হয়ত অন্য চাপে পড়েছেন, সে কারণে এখানে এসেছেন। দেখলাম, উনি আজ মেডিসিন দিচ্ছেন। এখানে ডাক্তারও নেই। আসেন দু’দিন থাকেন, চলে যান। ট্রান্সফার করে দিচ্ছে। এখানে যে রোগী ভাল হওয়ার আশায় আসবে, তার রোগ আরও বেড়ে যাবে।”
কিন্তু কেন নার্সিং স্টাফকে গুসকরায় পাঠানো হয়েছিল? সিনিয়র নার্সিং স্টাফ নমিতা দত্ত বলেন, “সমস্যার কথা তো আমি জানি না। ২৫ অগস্ট যোগ দিয়েছি কাজে। সিনিয়র সিস্টার আমি। আমি এতটুকু জানি, এখানে মানুষকে পরিষেবা দিতেই এসেছি আমি। কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকে ডিউটি শিডিউল মেনেই আমি কাজে আসি। ফার্মাসিস্ট ছুটিতে আছেন, সমস্ত কাজই আমি করছি। ডাক্তারবাবু এখানে কেউ নেই। পোস্টে আছেন, কিন্তু ব্লকে কাজ করছেন।”
একইসঙ্গে নমিতা দত্ত জানান, ১৯৯৬ সালে এখানে তার জয়েনিং ছিল। সেই সময় যিনি সিএমওএইচ ছিলেন তিনি তাঁকে গুসকরায় পাঠান। নমিতাদেবীর কথায়, “আমাদের এখানে প্রচুর নার্সিং স্টাফ ছিল। তাই আমাকে পাঠিয়েছিলেন। সিএমওএইচের নির্দেশে আমি কাজ করে এসেছি। এখন যেহেতু এখানে নার্সিং স্টাফ কেউ নেই, যিনি ছিলেন অবসর নিয়েছেন, আমি স্যরকে আবেদন জানাই, আমার জায়গায় আমাকে ফেরানো হোক। স্যরও সম্মতি দিলেন। কোথাও কেউ কোনও চাপ আমাকে কোনওদিনই দেননি। আমার যেহেতু পোস্টিং এখানে তাই ফিরে এলাম পরিষেবা দেওয়ার জন্য।”