Tamluk: নদীর পাড়েই কাটে বেশিরভাগ সময়, স্বপ্ন পূরণে লড়াই জারি তমলুকের অর্পিতার
Tamluk: প্রতিদিন সকাল আটটায় ট্রেনে করে কলেজে যান। আবার বিকেল চারটায় ফিরে এসে চা-পকোড়ার দোকান সাজিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে পড়েন দোকান সামলাতে। রাতে দোকান গুছিয়ে বাড়ি ফিরে পড়তে বসা। নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে প্রতিদিন এই রুটিন ফলো করছেন অর্পিতা।
তমলুক: আদালতে কালো গাউন পরে সওয়াল করবেন। ছোট থেকে দু’চোখে এই স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণে আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছেন। পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে পরিবারকে। কিন্তু, অর্থ যাতে স্বপ্ন পূরণে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, তাই বাবা-মার চা-পকোড়ার দোকানে দিনের অনেকটা সময় কাটছে তমলুকের অর্পিতা মাইতির। তারই ফাঁকে চলছে স্বপ্ন পূরণের লড়াই।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী তমলুকের অর্পিতা মাইতি। তমলুক শহরের রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। পেয়েছেন ৭৫ শতাংশ নম্বর। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরই নিজের স্বপ্নের কথা বাবা মাকে বলেন। কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে আইনের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার খরচ অনেকটাই। পরিবারে আয় বলতে চা পকোড়ার ছোট্ট দোকান। তবুও অর্পিতার ল-ইয়ার হওয়ার স্বপ্নে বাধা পড়তে দেননি তাঁর বাবা-মা। ল কলেজে ভর্তি হন অর্পিতা।
এরপর শুরু হয় আসল লড়াই। এই লড়াইয়ে সামিল হন অর্পিতা নিজেও। প্রতিদিন কলেজে যাওয়ার পাশাপাশি বাবা-মায়ের চায়ের দোকান সামলান। প্রতিদিন সকাল আটটায় ট্রেনে করে কলেজে যান। আবার বিকেল চারটায় ফিরে এসে চা-পকোড়ার দোকান সাজিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে পড়েন দোকান সামলাতে। রাতে দোকান গুছিয়ে বাড়ি ফিরে পড়তে বসা। নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে প্রতিদিন এই রুটিন ফলো করছেন অর্পিতা।
এই খবরটিও পড়ুন
বর্তমানে প্রতিদিন তমলুকের নদী পাড়ে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চা-পকোড়ার দোকান সামলাচ্ছেন অর্পিতা। প্রতিদিন বিকেলে মাকে সাইকেলে চাপিয়ে নদী পাড়ে এসে দোকান পেতে বসেন। আবার রাতে দোকান গুছিয়ে বাড়ি ফেরা। বর্তমানে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকার বেশি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছেন।
একদিকে পড়াশোনার চাপ, অন্যদিকে মাথার উপর ঋণের বোঝা। সঙ্গে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চা পকোড়ার দোকান সামলে নিজের লক্ষ্যপথে এগিয়ে যাচ্ছেন অর্পিতা। এ বিষয়ে তিনি জানান, আইনের পড়ুয়া হয়েও বাবা মায়ের সঙ্গে চা দোকান সামলাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই তাঁর। কারণ, কালো গাউন পরে আদালতে সওয়াল করাই তাঁর স্বপ্ন। আর এভাবেই স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে চান।