Durga Puja 2023: নূর মহম্মদের হাতে তৈরি হচ্ছে মহামায়ার অবয়ব

Durga Puja 2023: কথা হচ্ছে প্রতিমা শিল্পী নূর মহম্মদ চৌধুরীর। বয়স ৫৭ আশপাশে। বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার মহকুমার আন্দুলিয়ার গ্রামে। স্ত্রী, সন্তান,নাতি-নাতনিদের নিয়ে ভরা সংসার তাঁর। তবে জীবনের শুরুটা এতটাও মসৃণ ছিল না। এক একটি দিন কেটেছে অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে।

Durga Puja 2023: নূর মহম্মদের হাতে তৈরি হচ্ছে মহামায়ার অবয়ব
মহিষাদলে মূর্তি বানাচ্ছেন নূর মহম্মদImage Credit source: Tv9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 21, 2023 | 8:10 PM

মহিষাদল: ‘ধর্ম যার-যার শিল্পী কিন্তু সবার’! সেই বার্তাই দিয়ে চলেছেন এই শিল্পী। মূর্তি নির্মাণের আশৈশব প্রতিভাধর এই মানুষটি। ছেলেবেলায় কাদা মাটি নিয়ে খেলতে খেলতে বানানোর চেষ্টা করতেন মাটির প্রতিমা। কখনও আবার স্কুল যাতায়াতের পথে পুকুরের মধ্যে যদি দেখতে পেতেন প্রতিমার কাঠামো, সঙ্গে-সঙ্গে সেগুলি বাড়ি নিয়ে এসে তার উপর কাদার প্রলেপ লাগিয়ে ঠাকুর তৈরির চেষ্টা করতেন। ভালবাসার টানে শেখা কাজটাই হয়ে গেল আজ ওনার জীবন জীবিকা।

কথা হচ্ছে প্রতিমা শিল্পী নূর মহম্মদ চৌধুরী প্রসঙ্গে। বয়স সাতান্নর আশপাশে। বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার মহকুমার আন্দুলিয়া গ্রামে। সেখানেই স্ত্রী, সন্তান,নাতি-নাতনিদের নিয়ে ভরা সংসার তাঁর। নিজের গ্রামের মানুষ তো বটেই, আশপাশের গ্রামের লোকজন একডাকে চেনেন নূরকে। তবে এই নামডাকের পিছনে রয়েছে শিল্পীর অক্লান্ত পরিশ্রম।

নূর মহম্মদের জীবনের শুরুটা কেটেছে অনেক বাধা-বিপত্তির মধ্য দিয়ে। হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি তৈরি করার জন্য অনেক প্রতিবন্ধকতা এসেছে তাঁর জীবনে। কিন্তু সেগুলিকে গুরুত্ব না দিয়েই নিজের কাজটুকুই শুধু করে গিয়েছেন তিনি।

এলাকার প্রখ্যাত মৃৎ শিল্পী ঈশ্বর রাধাকৃষ্ণ সামন্তের হাত ধরে তিনি মূর্তি তৈরির কাজ শিখেছেন। স্কুলে পড়ার সময় থেকে ছোট ছেলেটার কাজ শেখার আগ্রহ দেখে রাধাকৃষ্ণবাবু নিজে হাতে প্রশিক্ষণ দেন নূরকে। আর গুরুর হাতে প্রশিক্ষণ পাওয়ায় নূর হাতের কাজের জাদু ছড়িয়ে পড়ল এলাকায়। ফুটিয়ে তুলতে লাগলেন বিভিন্ন দেব দেবীর মূর্তি। চারদিকে নাম ছড়িয়ে পড়ল নূর মহম্মদের।

এখন আর সেই ভাবে বাধা আসে না কাজে। স্ত্রী-র সাথে রয়েছেন। পাশে পেয়েছেন ছেলেকে। উভয়ই সাহায্য করেন শিল্পীকে। সারা বছর ধরেই টুকটাক দেব-দেবীর মূর্তি গড়ার বরাত পান তিনি। তবে দূর্গা পূজার সময় চাপ বড্ড বেশি থাকে। কারণ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর তৈরি প্রতিমার চাহিদা তুঙ্গে।

তবে হিন্দু দেব-দেবীর প্রতিমা যতই গড়ুন নিজের ধর্মের প্রতি একই রকম শ্রদ্ধা ও টান রয়েছে তাঁর। সময় মতো যান মসজিদে। এক কথায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া খাঁটি মুসলমান তিনি। নূরের বিশ্বাস তাঁর দেখানো পথেই ভবিষ্যতে সম্প্রীতির মেলবন্ধনের সেতু তৈরি হবে। আর সেই রাস্তা ধরে এগিয়ে যাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও।