‘বাস্তব অস্বীকার করলে এমনই হয়,’ বামেদের ব্যঙ্গ করে ফের মমতার দরাজ প্রশংসায় লক্ষ্মণ
Lakshman Seth: "এবারের বিধানসভা নির্বাচনে যা হল এর কোনও মানে হয়! কংগ্রেসের সঙ্গে আরেক মুসলিম নেতার পার্টির জোট হল! আসলে কে প্রথম শত্রু তাকেই চিহ্নিত করতে পারেনি এতদিন এরা (বামেরা)। মনে রাখতে হবে, বাস্তবকে অস্বীকার করলে বাস্তব আপনাকে অস্বীকার করবে।''
পূর্ব মেদিনীপুর: এক সময় তিনি ছিলেন শিল্পনগরী হলদিয়ার ডাকসাইটের সিপিএম নেতা। নন্দীগ্রাম কাণ্ড নিয়ে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া এবং সাত বছর আগে দল থেকে বহিস্কার হওয়া সেই লক্ষ্মণ শেঠের গলায় ফের শোনা গেল বামেদের তীব্র সমালোচনা। বললেন, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম শত্রুকে চিহ্নিত করতেই তো ব্যর্থ সিপিএম। শুধু এখানেই থামলেন তিনি। মাতলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসায়।
শুক্রবার স্ত্রী তথা প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তমালিকা পণ্ডা শেঠের জন্মদিন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠান থেকে বামেদের উদ্দেশে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘প্রথম শত্রু কে তাকেই চিহ্নিত করতে পারেনি (সিপিএম)। পুরনো দলের সমালোচনা য় মুখর হওয়া লক্ষ্মণের কথায়, “এবারের বিধানসভা নির্বাচনে যা হল এর কোনও মানে হয়! কংগ্রেসের সঙ্গে আরেক মুসলিম নেতার পার্টির জোট হল! আসলে কে প্রথম শত্রু তাকেই চিহ্নিত করতে পারেনি এতদিন এরা (বামেরা)। মনে রাখতে হবে, বাস্তবকে অস্বীকার করলে বাস্তব আপনাকে অস্বীকার করবে।”
উল্লেখ্য, বিজেমূল তত্ত্ব নিয়ে ইতিমধ্যে দলের মধ্যেই দু রকম সুর শোনা গিয়েছে। রাজ্য সিপিএমের সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র যখন বলছেন, বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি ও তৃণমূলকে মিশিয়ে আক্রমণ আর বিজেমূল তত্ত্ব ঠিক ছিল না, তখন মহম্মদ সেলিম সেই পুরনো তত্ত্বেই অনড়। আলিমুদ্দিনের নেতাদের এই ভিন্ন সুরকে নিশানা করেন ২০১৪ সালে বহিষ্কৃত হওয়া লক্ষ্মণ শেঠ। তিবি বলেন, “আমি এই দলে ছিলাম। দলের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলেছি। কিন্তু আমার যখন ভুল ভাঙল তখন আমাকে দল থেকে তাড়ানো হল। ভালোই হয়েছে। এখন সেই দলটা আর এই দলের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় না।”
বুদ্ধদেবকে নিয়ে একাধিকবার কটাক্ষ করা লক্ষ্মোণ এদিন টেনে আনেন জ্যোতি বসুকে নিয়ে বামেদের ‘ভুল’ সিদ্ধান্তের কথা। জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী না করার জন্যে পুরানো দলের সমালোচনা করে বলেন,”জ্যোতিবাবুকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু করা হলনা। কারণ, কংগ্রেস তখন প্রধান শত্রু। আর এখন সেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট!”
এদিকে পুরনো দলের তীক্ষ্ণ সমালোচনা করলেও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরাজ প্রশংসা করেন লক্ষ্মণ। বলেন, “গণতান্ত্রিক জনমুখী কর্মকাণ্ডই তো আসল। আর মমতা বন্দ্যোপাধায় সেই রাস্তাই নিয়েছেন।”
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে পার্টি থেকে লক্ষ্মণ শেঠকে বহিষ্কার করে সিপিএম। তারপর ২০১৬ সালে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। কিন্তু ২০১৮ শেষ হওয়ার আগে কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন হয় তাঁর। প্রকাশ্যে তৃণমূলে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু নন্দীগ্রামের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠা এই নেতাকে কোনওভাবেই দলে নিতে আগ্রহী নয় তৃণমূল। তবে শুক্রবার হলদিয়া ল’ কলেজের রাধা বিনোদ পাল সেমিনার হলে তমালিকা পণ্ডা শেঠের ৬৫তম জন্মদিন স্মরণ অনুষ্ঠান থেকে ফের কি পরোক্ষে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বার্তা দিলেন একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই বাম নেতা? যদিও এর আগে একাধিকবার তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়া জল্পনা তৈরি হয়েছে, আবার ভেস্তেও গিয়েছে। আরও পড়ুন: Bengal Flood: জল ছাড়া বন্ধ থাকলেও পরিপূর্ণ মাইথন, ‘ডিভিসির জন্য বন্যা’, তোপ বেচারামের