Nadigram BJP Agitation: সরকারি অফিসারের কলার ধরে ‘মারধর’, নিঃশর্ত জামিন প্রাপ্তি ২ বিজেপি নেতার

Purba Medinipur: নন্দীগ্রামের হরিপুর অঞ্চলে কিষান মাণ্ডিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি জমা দিতে আসেন বিজেপি কর্মীরা। কৃষি দফতরের বাইরে যখন মিছিল এসে পৌঁছয়, সে সময় বিশেষ কাজে বাইরে যাচ্ছিলেন বরুণ মণ্ডল নামে এক জন আধিকারিক।

Nadigram BJP Agitation: সরকারি অফিসারের কলার ধরে ‘মারধর’, নিঃশর্ত জামিন প্রাপ্তি ২ বিজেপি নেতার
জামিন প্রাপ্ত নেতা, নিজসব্ চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 02, 2021 | 9:46 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: নন্দীগ্রাম কৃষি দফতরে বিজেপির বিক্ষোভে ধুন্ধুমার। কর্তব্যরত সরকারি অফিসারকে মারধরের অভিযোগ। আক্রান্ত কৃষি দফতরের কর্মী। সেই ঘটনায় আগেই ৬ বিজেপি নেতাকে (BJP) গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ বার, কৃষি আধিকারিককে মারধরের ঘটনায় নিঃশর্ত জামিন  পেলেন দুই বিজেপি নেতা মেঘনাথ পাল ও আশিস ভুঁইয়া। তাঁদের ৫দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল হলদিয়া মহকুমা আদালত।

এদিন, জামিন পেয়ে মেঘনাথ পাল বলেন, “আইনের প্রতি আস্থা রয়েছে আমার। আমি জানতাম, কোনও অন্যায় করিনি। তাই আজ জামিন পেয়েছি।” এদিন হলদিয়া কোর্ট থেকে ফেরার পর নন্দীগ্রামে জামিনপ্রাপ্ত দুই নেতাকে নিয়ে মিছিলের আয়োজন করে পদ্ম শিবির।

ঘটনায় পাল্টা রাজ্যের মত্‍স্যমন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, “কর্তব্যরত অফিসারের ওপর বিজেপি-র লোকেরা হামলা চালিয়েছে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এটাই ওদের সংস্কৃতি। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমরা সরকারি আধিকারিকদের পাশে রয়েছি।”

গত শুক্রবার সকালে কৃষিক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে কৃষি দফতরে ডেপুটেশন দিতে যায় বিজেপি। অভিযোগ, বিজেপির মিছিল চলাকালীন কৃষি দফতরের কর্মীকে হেনস্থা, মারধর করেন বিজেপির মহিলা কর্মীরা। সরকারি আধিকারিকে মারধরের ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য এলাকায়। TV9 বাংলার ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই ছবি।

নন্দীগ্রামের হরিপুর অঞ্চলে কিষান মাণ্ডিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি জমা দিতে আসেন বিজেপি কর্মীরা। কৃষি দফতরের বাইরে যখন মিছিল এসে পৌঁছয়, সে সময় বিশেষ কাজে বাইরে যাচ্ছিলেন বরুণ মণ্ডল নামে এক জন আধিকারিক। প্রথম থেকেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি কর্মীরা। কিন্তু ওই আধিকারিককে সামনে পেয়েই রীতিমতো চড়াও হন তাঁরা। রীতিমতো কিল, চড়, ঘুষি মারা হয় তাঁকে। ক্যামেরায় ধরা পড়ে লাল শাড়ি পরিহিত এক মহিলা রীতিমতো আধিকারিকের জামা ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসছেন। এমনটাই অভিযোগ উঠছে। নন্দীগ্রামের কৃষি দফতরের সামনে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

বিজেপির অভিযোগ, কৃষি দফতরের তরফে যে সব সুযোগ সুবিধা সাধারণ মানুষ পেয়ে থাকেন, তা প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের পরিচিতদের দিচ্ছেন কর্মীরা। নন্দীগ্রামের মানুষ সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক রঙ দেখা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে মহিলা কর্মীদের নিয়ে কৃষি দফতরে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নেয় বিজেপি।

বিশাল মিছিল করে তাঁরা কৃষি দফতরের সামনে উপস্থিত হন। কিন্তু আচমকাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। দফতরের বাইরে একটি বিশেষ কাজে বেরচ্ছিলেন এক আধিকারিক। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মহিলা কর্মীরা। তাঁকে রীতিমতো হিঁচড়ে টেনে আনা হয়। অভিযোগ, ওই আধিকারিকই বিশেষভাবে স্বজনপোষণ করে থাকেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। তবে দফতরের বাকি আরও কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নন্দীগ্রাম থানার বাহিনী। বিজেপি নেতা মেঘনাথ পাল বলেছেন, “বার বার বলা সত্ত্বেও কৃষি দফতরের আধিকারিকরা রাজনৈতিক রঙ দেখে পরিষেবা দিচ্ছেন। শাসকদলের কর্মীদেরই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।” পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

যদিও হামলার খবর পাওয়ার পরেই দুপুর পর্যন্ত মহকুমা শাসক কিংবা বিডিও ঘটনাস্থলে যাননি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ‘অন ডিউটি’ থাকাকালীন কীভাবে একজন সরকারি কর্মী আক্রান্ত হন?  এ প্রসঙ্গে একজন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা নজরুল ইসলামের বক্তব্য, “সরকারি কর্মীর গায়ে হাত তোলা কখনই কাম্য নয়। কিন্তু এটাও দেখতে হবে, সরকারি কর্মচারীরাও যেন রাজনৈতিক রঙ না দেখে সরকারি পরিষেবা সাধারণ মানুষকে দিয়ে থাকেন। এইভাবে সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠলে, গ্রামবাসীদের মনে ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে। আজকের ঘটনা তারই ফল।”

বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “কোনও প্ররোচনা ছাড়া এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। ওই মিছিলে নিশ্চয়ই প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। আমার পুরো বিষয়টা জানা নেই। স্পটে কী ঘটেছে, সেটা সম্পূর্ণ না জেনে আসল সত্য সামনে আসবে না।”

আরও পড়ুন: Siliguri Municipal Election: নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগেই শিলিগুড়ি পুরভোটের পরিচালন কমিটি গঠন বিজেপির, গুরুত্ব বিধায়কদের