Patachitra : মাটির জলের বোতলে রং-তুলির প্রলেপ, পটচিত্র বাঁচার আশায় শিল্পীরা
Patachitra : মাটির জলের বোতলের ওপর পটশিল্পের কারুকার্য মানুষের মনে ধরেছে। তাই চাহিদাও তুঙ্গে। ফলে শুধু পটচিত্রকে বাঁচিয়ে রাখা নয়, নিজেদের রুটি-রোজগারের তাগিদে চিত্রকররা মাটির জলের বোতলের ওপর পটশিল্প ফুটিয়ে তুলছেন।
চণ্ডীপুর (পূর্ব মেদিনীপুর) : হাতে রং, তুলি। মগ্ন হয়ে পটচিত্র এঁকে চলেছেন শিল্পীরা। সেই পটচিত্র (Patachitra) আঁকা হচ্ছে মাটির জলের বোতলে। শিল্পীর কাজ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। তেমনই এই গরমে মাটির জলের বোতলের জল শরীরকেও ঠান্ডা করে। আর এই মাটির জলের বোতলকে সঙ্গী করেই পটচিত্র বাঁচিয়ে রাখার আশায় পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর ব্লকের পটচিত্র শিল্পীরা। তাঁদের আবেদন, পটচিত্রকে বাঁচাতে সরকারও এগিয়ে আসুক।
চণ্ডীপুর ব্লকের হাবিবচক নানকার চকে ১৫০ জন চিত্রকরের বাস। চিত্রকর পাড়া বর্তমানে ব্যস্ত মাটির জলের বোতলের ওপর রং-তুলি নিয়ে পটশিল্প ফুটিয়ে তুলতে। মাটির জলের বোতলের ওপর পটশিল্পের কারুকার্য মানুষের মনে ধরেছে। তাই চাহিদাও তুঙ্গে। ফলে শুধু পটচিত্রকে বাঁচিয়ে রাখা নয়, নিজেদের রুটি-রোজগারের তাগিদে চিত্রকররা মাটির জলের বোতলের ওপর পটশিল্প ফুটিয়ে তুলছেন।
বছরের অন্যান্য সময় জীবন-জীবিকার তাগিদে পটশিল্প ফুটে ওঠে পোশাক-সহ গৃহসজ্জার জিনিসপত্রে। পটশিল্পের পাশে দাঁড়াতে সরকার থেকে হস্তশিল্পের মেলা আয়োজন করা হয়। তা সত্ত্বেও বর্তমানে পটশিল্প প্রায় অন্ধকারে ডুবেছে বলা চলে । গ্রাম বাংলার কলা ও সংস্কৃতি , লোকসংস্কৃতির ধারক ও বাহক পটশিল্প। চিত্রকরদের নিপুণ তুলির টানে কাপড়ে ফুটে ওঠে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি। পটশিল্পীরা তুলে ধরেন গ্রাম বাংলার মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।
এবার পটশিল্পীর সরু তুলির টানে শিল্পের ছোঁয়া লাগছে মাটির তৈরি জলের বোতলের ওপর। বর্তমান সময়ে শুধুমাত্র পটশিল্পকে তুলে ধরা নয়, পরিবেশ বান্ধব মাটির জলের বোতলে নিজেদের নিপুণ শিল্প প্রতিভার ছাপ রাখছেন চিত্রকররা। চণ্ডীপুর ব্লকের চিত্রকর পাড়ায় ব্যস্ততা তুঙ্গে মাঠের জলের বোতলে পটশিল্প ফুটিয়ে তুলতে।
মাটির জলের বোতল কিনে আনেন পটচিত্র শিল্পীরা। তার উপর পটচিত্র আঁকার পর বিক্রি করেন। পটচিত্র শিল্পী আবেদ চিত্রকর বলেন, “একদিকে যেমন মাটির জলের পাত্র ব্যবহার করা পরিবেশ বান্ধব ও স্বাস্থ্যকর। অন্যদিকে মাটির জলের পাত্রে পটশিল্প ফুটিয়ে তোলার মধ্যে পটশিল্প বেঁচে থাকছে। পটশিল্পের কারুকার্য যুক্ত মাটির বোতলের চাহিদাও বাড়ছে। এক লিটার জলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায় এবং পাঁচশো মিলি লিটার জলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।”
পটচিত্র শিল্পীদের আরও বক্তব্য, সারা বছর এমন পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী বিক্রির স্থায়ী মার্কেট থাকলে আর্থিকভাবে তাঁরা আরও লাভবান হতেন। আর বাংলার পটশিল্প বিকশিত হত।
পটশিল্পীদের এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশপ্রেমী মানুষজন। তাঁরা বলছেন, প্লাস্টিকের বোতলের চেয়ে মাটির বোতলে জল খাওয়া স্বাস্থ্যকর। দেখতেও খুব সুন্দর। আবার পরিবেশও দূষিত হয় না।