Kolaghat Engineering College: আন্দোলনে বসে পড়াশোনা লাটে তুলে দিয়েছেন শিক্ষকরা, পাল্টা ময়দানে পড়ুয়ারা
Purba Medinipur: অপসারণ এবং কলেজের নতুন গভর্নিং বডি গঠনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক এবং ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় পাঠদান বন্ধ করে দেন তাঁরা। যে কয়েকজন শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছিলেন, সরকারের তাঁদেরও ক্লাস বন্ধ করে দিতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ।
পূর্ব মেদিনীপুর: ধর্মঘট করছেন শিক্ষকরা। পড়ুয়াদের ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে। অভিযোগ, তাও নিয়মিত নয়। এখানেই বিরোধিতা ছাত্রদের। প্রতিবাদে কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের গেটে তালা ঝোলালেন সিনিয়র ছাত্ররা। অভিযোগ, ডিএ-সহ একাধিক দাবিতে প্রায় দেড় মাস ধরে পাঠদান বন্ধ রেখেছেন কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষকরা। কলেজে গেলে পড়ুয়াদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন তাঁরাই। এবার প্রতিবাদে নামলেন পড়ুয়ারাও। তাঁদের বক্তব্য অনলাইনে ক্লাস করার নানারকম প্রতিবন্ধকতা আছে। সকলের বাড়ি শহরে নয়। ফলে ইন্টারনেট পরিষেবা পেতে সমস্যা হয়। তাই অফলাইন ক্লাস চালু করতেই হবে বলে দাবি তাঁদের। যদিও শিক্ষকরা বলছেন, তাঁরাও অপারগ। তবে এ নিয়ে মুখ খোলেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ‘বিদ্যাসাগর সোসাইটি ফর ইন্টিগ্রেটেড লার্নিং’ দ্বারা পরিচালিত। এই কলেজে ভর্তি হতে গেলে ভালই খরচ করতে হয় পড়ুয়াদের। অথচ পড়াশোনা কার্যত লাটে উঠেছে স্যরদের আন্দোলনের জেরে। ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র অর্ঘ্য জানা। তাঁর বাডি তমলুকে। তাঁর বক্তব্য, “স্যররা ক্লাসরুমে ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। অনলাইনে ক্লাস করাচ্ছেন। এদিকে ইন্টারনেটের তো নানা সমস্যা থাকে। সেখানে অনলাইনে ক্লাস করাও সকলের পক্ষে সম্ভব না। অবিলম্বে অফলাইনে ক্লাস চালু করতে হবে। প্রায় এক দেড় মাস ধরে এই অবস্থা আর মানা যাচ্ছে না।”
প্রথমবর্ষের ছাত্ররা বলছেন, সিনিয়ররা তালা ঝুলিয়েছেন দরজায়। চতুর্থ বর্ষের ছাত্র অরবিন্দ মাহাতের কথায়, “এতদিন ক্লাস হয়নি কেন? সে ক্ষতি কে পূরণ করবে? টাকা রিফান্ড চাই আমাদের। ডিরেক্টর স্যরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও উনি কোনও জবাব দেননি। উনি অনলাইন ক্লাসকে সমাধান হিসাবে দেখাচ্ছেন। সেটা হতে পারে না। সুস্থভাবে ক্লাস করাতে হবে। এরপর আমরা কলেজের মেইন গেটও আটকে প্রতিবাদ জানাব।”
অপসারণ এবং কলেজের নতুন গভর্নিং বডি গঠনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক এবং ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় পাঠদান বন্ধ করে দেন তাঁরা। যে কয়েকজন শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছিলেন, সরকারের তাঁদেরও ক্লাস বন্ধ করে দিতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সত্যজিৎ ভুঁইয়্য়া বলেন, “আমাদের শিক্ষকদের আন্দোলন অনেক দিন ধরেই চলছে। ছাত্ররা গতকাল এসে অবস্থান বিক্ষোভও করেছে। ওদের দাবির পক্ষেই আমরা। আমরাও চাই অফলাইন ক্লাস হোক। ক্লাস না নিয়ে আমরাও সকাল ৯টা থেকে ৫টা অবধি এখানে শুধু শুধু বসে থাকার জন্য আসিনি। আমরা এখানে পড়াতেই আসি। পড়াতেই চাই। আর কর্তৃপক্ষ যে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে না তাও দেখা হোক আমরা চাই। শিক্ষকদের সঙ্গেও বসার প্রয়োজন মনে করছে না। বারবার চিঠি দিয়েও কাজ হয়নি। ছাত্ররাও বসার কথা বলেছে। অথচ ওরা দুই ক্ষেত্রেই উদাসীনতা দেখিয়েছে। আমরা চাই কলেক কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিষয়টির মীমাংসা করুক।” কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর শৈবালকুমার প্রধানের কোনও বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি। পেলে তা যুক্ত করা হবে এই প্রতিবেদনে।