TMC Clash: গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব পড়ছে প্রলেপ? ‘নীতিপার্থক্য’ বজায় রেখেই এক মঞ্চে ‘মমতার দুই সৈনিক’
Purba Medinipur: বিজয় সম্মিলনীর মঞ্চে তাবড় তাবড় তৃণমূল নেতাদের দেখা গেলেও দেখা যায়নি জেলা থেকে নির্বাচিত মন্ত্রী অখিল গিরি ও তাঁর ছেলে সুপ্রকাশ গিরিকে।
কাঁথি: কিছুদিন আগেই বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতে নেমে পড়েছিলেন যুযুধান দুই গোষ্ঠীর নেতারা। এক দিকে, অধিকারী পরিবারের বিদায়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের একেবারে প্রথম সারিতে চলে আসা অখিল গিরি ও তাঁর ছেলে সুপ্রকাশ গিরি এবং অন্যদিকে, তরুণ জানা। তবে, বৃহস্পতিবার সম্পূর্ণ অন্য ছবি দেখা গেল। পুজো উদ্বোধনে দুই তৃণমূল নেতাকে একই মঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়াতে দেখা গেল এদিন।
দীপাবলির দিন সকালে, স্থানীয় একটি পুজোর অনুষ্ঠানে এসে সেখানে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে তরুণ জানা বলেন, “আমরা সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। নীতির পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু সামাজিক কোনও অনুষ্ঠানে দলের নীতি মেনে আমরা সবাই এক। এতে কোনও বিতর্ক নেই। সমস্যা আছে তা আমরা বসে আলোচনার মাধ্যমে সময় করে মিটিয়ে নেব।”
অন্যদিকে, কাঁথির যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন, “আমরা কেউ কোথাও কাদা ছুড়িনি। ইঁট ছুড়লে পাটকেল খেতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আমরা যখন কোনও অনুষ্ঠানে এসেছি। তখন সেখানে কোনও বিরোধ নেই। আমি ও আমার বাবা দুজনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। তাই তাতে অন্য কে কী বলল কিছু যায় আসে না।”
গত শুক্রবার কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকে বসন্তিয়া স্কুল মাঠে আয়োজিত মেগা বিজয় সম্মিলনীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আচমকাই অখিল গিরি ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে সরব হন তরুণ জানা ও তাঁর সঙ্গীরা। এই মঞ্চে আবার হাজির ছিলেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণ কুমার মাইতি, প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর, রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি পার্থ সারথি মাইতি-সহ একধিক জেলা নেতৃত্ব।
বিজয় সম্মিলনীর মঞ্চে তাবড় তাবড় তৃণমূল নেতাদের দেখা গেলেও দেখা যায়নি জেলা থেকে নির্বাচিত মন্ত্রী অখিল গিরি ও তাঁর ছেলে সুপ্রকাশ গিরিকে। যা নিয়ে দলের অন্দরেই গুঞ্জন শুরু হয়। সেদিন, আচমকাই অখিল গিরি ও সুপ্রকাশ গিরির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তরুণ বলেন, “গত নির্বাচনের আগে রামনগর বিধানসভা ছেড়ে আর কোথাও বার হননি অখিলবাবু। তাই তিনি নিজের চরকায় আগে তেল দিন, অপরের চরকায় তেল দেওয়া বন্ধ করুন।”
ঠিক তারপরেই, রামনগরে পানমাণ্ডিতে মহিলা তৃণমূলের বিজয় সম্মিলনীতে গিয়ে তরুণের পাল্টা তোপ দাগেন অখিল। তিনি বলেন, “তরুণ বাবু ও প্রদীপবাবু যে শিবিরে ছিলেন, সেই শিবির থেকে অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। তারা হচ্ছে চালুনি। নিজেদের চেহারাটা আয়নায় দেখলে তা প্রমাণ হয়ে যাবে। তরুণবাবু তার নিজের ব্লকটা সামলাক। প্রদীপ বাবু নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখুক। তাহলে প্রমাণ হয়ে যাবে কে দুর্নীতিগ্রস্ত, কে দুর্নীতিগ্রস্ত নয়।” কার্যত তৃণমূলের দুই প্রভাবশালী নেতৃত্বের চাপানউতোর নজর এড়ায়নি কারোর। এগরার তৃণমূল বিধায়ক স্পষ্টই জানান, ব্যক্তিগত আক্রমণে দলের ক্ষতি হবে। তা না করাই ভাল। অবশেষে, বৃহস্পতিবার যেন পুরোই বদলে যায় ছবিটা। তাহলে কি রাশ পড়ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে? অন্তত এমনটাই অনুমান সংশ্লিষ্ট মহলের।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: আশা হারানো যাবে না, দীপাবলিতে ন্যায়ের প্রশ্নে লড়াইয়ের আহ্বান অভিষেকের