Jhalda Municipality: ঝালদা চেয়ারপার্সনের কাউন্সিলর পদই খারিজ, আবারও বসল তৃণমূলেরই প্রশাসক
Purulia News: সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সোমবার (১৬ জানুয়ারি ২০২৩) ঝালদা পুরসভায় বোর্ড গঠন করে কংগ্রেস। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের পালা বদল।
পুরুলিয়া: কোনওভাবেই ঝালদা পুরসভা (Jhalda Municipality) নিয়ে জট কাটছে না। সবেমাত্র কংগ্রেস নিজের হাতে পুরসভা নিয়েছিল। চেয়ারপার্সন হিসাবে শীলা চট্টোপাধ্যায়, উপপুরপ্রধান হিসাবে প্রয়াত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর নাম ঘোষণা করেছিল। এরইমধ্যে নতুন জটিলতা। বোর্ড গঠন করেও পুরসভা ধরে রাখতে পারল না কংগ্রেস। কাউন্সিলর পদ খারিজ করে শীলা চট্টোপাধ্যায়কে চেয়ারপার্সন পদ থেকে সরিয়ে দিল প্রশাসন। অস্থায়ী পুরপ্রধানের দায়িত্ব নিলেন সুদীপ কর্মকার। ক্ষমতার জোরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঝালদা পুরসভা দখলের অভিযোগ উঠল। ফের আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিল কংগ্রেস। যদিও তৃণমূলের দাবি, আইন মেনেই পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। সব মিলিয়ে ফের জটে জড়িয়ে গেল ঝালদা পুরসভার ভবিষ্যৎ। হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল। সেইমতো সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সোমবার (১৬ জানুয়ারি ২০২৩) ঝালদা পুরসভায় বোর্ড গঠন করে কংগ্রেস। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের পালা বদল। মহকুমাশাসক রিতম ঝাঁর নির্দেশে কাউন্সিলর পদ হারালেন ঝালদা পুরসভার চেয়ারম্যান শীলা চট্টোপাধ্যায়। একইসঙ্গে ঝালদার পুরপ্রধানের পদ থেকেও অপসারিত হলেন তিনি।
শীলা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলের লোকেরাই সব করেছে। ওরা তো সবসময়ই চাইছে আমাদের চেয়ারটা যাতে না থাকে। চেয়ারের জন্য ওরা যা ইচ্ছে তাই করছে। আমার সদস্যপদ খারিজ করলেন এসডিও সাহেব। পদটা কি ওনার দেওয়া নাকি? মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। এসডিওর কী অধিকার? এরকম কোনও আইন থাকলে আমাকে জানান। এটা বেআইনি। পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন চাই।”
কোন যুক্তিতে শীলা চট্টোপাধ্যায়কে কাউন্সিলর পদ থেকে সরানো হল? শীলা নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে জেতেন। পরে শাসকদলে যোগ দেন। বোর্ড গঠন করে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এর কয়েক মাসের মধ্যেই শীলা ঘাসফুল ছাড়েন। এরপরই দলত্যাগ বিরোধী আইনে শীলার পদ খারিজের আবেদন জানায় তৃণমূল। মহকুমাশাসকের কাছে আবেদন জানান প্রাক্তন চেয়ারম্যান। আবেদন খতিয়ে দেখে শীলা চট্টোপাধ্যায়ের কাউন্সিলর পদ বাতিল বলে সূত্রের খবর।
অস্থায়ী পুরপ্রধান হিসাবে বৃহস্পতিবার দায়িত্ব নেন প্রাক্তন উপপুরপ্রধান সুদীপ কর্মকার। তিনি বলেন, “আইনের জটিলতার কারণে পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এভাবে আমাদের এখানকার উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। আমাদের দিক থেকেও চেষ্টা থাকবে যাতে আর তা না হয়। স্থায়ীভাবে যেন বোর্ডটা চালানো যায়।”
ঝালদা শহর কংগ্রেসের সভাপতি বিপ্লব কয়াল বলেন, “এটা আইন ভেঙে করা হল। মনে হচ্ছে এসডিও তৃণমূলের ঝান্ডা ধরে, তৃণমূলের একজন কর্মী হিসাবে কাজ করছেন।” ঝালদায় অবশ্য ডামাডোল প্রথম থেকেই। ভোটের পর ২ নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে পুরবোর্ড গঠন করে তৃণমূল। কয়েক মাসের মধ্যেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে কংগ্রেস। আস্থা ভোটে জয়ী হয়েও কংগ্রেস বোর্ড গঠন করতে পারেনি। কারণ, সে সময়ও প্রশাসক বসিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টে যায় কংগ্রেস।
গত সোমবার কলকাতা পুরসভার নির্দেশে ঝালদার প্রধান নির্বাচন হয়। ঝালদায় মোট ১২ আসন। কংগ্রেসের ৫টি, তৃণমূলের ৫টি। সোমবার ভোটাভুটিতে নির্দলের ২ জন কংগ্রেসকে সমর্থন জানান। ফলে ৭ কাউন্সিলরের সমর্থনে ঝালদা পুরবোর্ড দখল করে কংগ্রেস। তবে কংগ্রেস বলছে, শীলার কাউন্সিলর পদ বাতিল হলেও এখনও তাদের হাতে ৬ জন আছেন। আরও একটি প্রশ্ন উঠছে। উপপুরপ্রধান হিসাবে পূর্ণিমা কান্দু রয়েছেন। তারপরও কেন প্রশাসক বসাতে হল? যদিও ঝালদা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়াল বলেন, সবটাই হচ্ছে নিয়ম মেনে।