Narendrapur: ‘কেবল অনুমানের ভিত্তিতে FIR-এ নাম’, হাইকোর্টে ধাক্কা খেয়ে নরেন্দ্রপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবার নিম্ন আদালতে
Narendrapur: দিন দশেক আগে নরেন্দ্রপুরের স্কুলে ঢুকে শিক্ষকদের মারধরের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার মুহূর্তের ভিডিয়ো হয় ভাইরাল। জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। সিঙ্গল বেঞ্চ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক-সহ সকল অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নরেন্দ্রপুর স্কুল কাণ্ডে অভিযুক্ত ফেরার প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ আগাম জামিনের আবেদন করলেন জেলা জজের আদালতে। আদালতে জামিনের আবেদন করেন তাঁরই ছোট ভাই এবং আইনজীবী সৈয়দ আরিফ আহমেদ। আদালতে প্রধান শিক্ষকের আইনজীবী জানান এদিন সওয়াল করেন, “ওই স্কুলেরই একদল শিক্ষকের ষড়যন্ত্রের শিকার প্রধান শিক্ষক। স্কুলের অডিটকে আটকানোর জন্য হামলা চালানো হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা ভিত্তিহীন।” তিনি আরও বলেন, “ওই স্কুলেরই এক শিক্ষক, এক নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত। তিনি পলাতক রয়েছেন অনেকদিন। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তার ওপরই ছিল। সাধারণ মানুষ ওই শিক্ষকের উপরে ক্ষুব্ধ হয়েই স্কুলে হামলা চালায়। স্কুলে ঢোকার চাবি এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীর থেকে নিয়ে হামলা চালায় জনতা। হামলার পেছনে প্রধান শিক্ষকের কোন মদত ছিল না। কেবল হামলার পেছনে মদত রয়েছে অনুমান করে এফ আই আর এ নাম ঢোকানো হয়েছে প্রধান শিক্ষকের।” প্রধান শিক্ষককে আগাম জামিনের আবেদন জানান তিনি।
তবে এর প্রেক্ষিতে সরকারি আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, “স্কুলের ভেতরে হামলা, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধর এবং তাণ্ডবের মাস্টারমাইন্ড প্রধান শিক্ষক। তিনি হুলিগানদের স্কুলে ঢুকিয়ে ভাঙচুর চালান। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধর করান।” আদালতে তিনি জানান, কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান শিক্ষককে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। পরে ডিভিশন বেঞ্চ একই নির্দেশ দেয়। জামিনের চূড়ান্ত বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী।
আক্রান্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের তরফে আইনজীবী জানান, প্রধান শিক্ষক স্কুলের সবাইকে গায়ের জোরে চুপ করিয়ে রাখতেন। তাঁর অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যেত না। যাঁরাই প্রতিবাদ করতেন, তাঁদের বদলির ব্যবস্থা করে দিতেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক।
আদালতে আরও জানানো হয়, স্কুলে দীর্ঘদিন অডিট করা হয়নি। আদালত পরে নির্দেশ দিয়েছিল অডিট করার। অডিটের জন্য স্কুলে গিয়েছেন। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক অডিট আটকানোর চেষ্টা করেছেন নিজের প্রভাব খাটিয়ে। নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে শিক্ষক শিক্ষিকাদেরও। অভিযোগ, এখনও মুখ বন্ধ রাখার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রত্যেকদিন। মঙ্গলবার সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায়দান আপাতত স্থগিত রেখেছেন বিচারক।
প্রসঙ্গত, দিন দশেক আগে নরেন্দ্রপুরের স্কুলে ঢুকে শিক্ষকদের মারধরের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার মুহূর্তের ভিডিয়ো হয় ভাইরাল। জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। সিঙ্গল বেঞ্চ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক-সহ সকল অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়। এরপর ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন প্রধান শিক্ষক। সেখানেও ধাক্কা খান। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হলেও, এখনও পর্যন্ত অধরা প্রধান শিক্ষক। এবার তিনি আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে নিম্ন আদালতে।