Panchayat Election Result 2023: গণনাকেন্দ্রের বাইরে মুড়ি মুড়কির মতো বোমা-গুলি, অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি ভাঙড়ে
Bhangar: প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, আরাবুল ইসলামকে মূল টার্গেট করে প্রায় ৫০০-র বেশি দুষ্কৃতী জড়ো হয়েছে কাঁঠালিয়া হাইস্কুলের বাইরে। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই সশস্ত্র।
ভাঙড়: ভোট গণনার রাতে ক্রমেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি ভাঙড়ে। কাঁঠালিয়ার গণনাকেন্দ্রের বাইরে মুহুর্মুহু বোমা ফাটছে। ভেসে আসছে বোমা-গুলির শব্দ। চলছে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের পালা। তৃণমূল অভিযোগ তুলছে আইএসএফের বিরুদ্ধে। আবার আইএসএফের দাবি, তৃণমূলই এই কাণ্ড ঘটাচ্ছে। কাঁঠালিয়ার ভোটগণনা কেন্দ্রের ভিতরে গণনাকর্মী, কাউন্টিং এজেন্টরা ভীত-আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আর বাইরে অবিরাম বোমা ফেটে চলেছে। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে। কার্যত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে কাঁঠালিয়ার গণনাকেন্দ্রের পরিস্থিতি।
গণনাকেন্দ্রের মধ্যেই আটকে রয়েছেন আরাবুল ইসলাম। টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধি-সহ আরও বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও গণনাকেন্দ্রের ভিতরে আটকে পড়েছেন। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, আরাবুল ইসলামকে মূল টার্গেট করে প্রায় ৫০০-র বেশি দুষ্কৃতী জড়ো হয়েছে কাঁঠালিয়া হাইস্কুলের বাইরে। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই সশস্ত্র। ভাঙড়ের অশান্তিতে দুইজন পুলিশকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারও আহত হয়েছেন বলে খবর।
গণনাকেন্দ্র চত্বরে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা পুলিশ বাহিনী এবং সিআরপিএফ মিলিয়ে এক কোম্পানির কিছু বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী সেখানে মোতায়েন রয়েছেন। তাঁরা কাঁঠালিয়ার গণনাকেন্দ্রের ভিতরের অংশটিকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পরিস্থিতি কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ আসছে না। অভিযোগ, হাইস্কুলের সামনের গেটে ভাঙচুর চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। অসমর্থিত সূত্রে খবর, পরিস্থিতি এতটাই খারাপ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, যে তা সামাল দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। স্টান্ট গ্রেনেড ফাটায়। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় না। উল্টে বাইরে থেকে বোমাবাজি ও গোলাগুলি আরও বেড়ে গিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
আপাতত, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশকর্মীরা আরাবুল ইসলাম-সহ তাঁর ঘনিষ্ঠ তিন-চারজনকে গণনাকেন্দ্রের একটি ঘরে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধি সহ বাকি সাংবাদিকদেরও দোতলার একটি ঘরে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
আরাবুলের ছেলে হাকিবুল ইসলামের অভিযোগ, আইএসএফ আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হামলা চালাচ্ছে। বলছেন, ‘ডিসিআরসির সামনে আইএসএফের গুন্ডাবাহিনী সন্ত্রাস করে ঘিরে রেখেছে। তৃণমূল যে আসনগুলিতে জিতছে, সেগুলি আটকাতে ডিসিআরসির অফিসারদের ধমকে ছিনিয়ে নিতে চাইছে। ডিসিআরসি ভেঙে ফেলে ঢোকার চেষ্টা করছিল।’
তৃণমূল বিধায়ক তথা ভাঙড়ের শাসক দলের দায়িত্বে থাকা শওকত মোল্লা সরাসরি প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। বলছেন, ‘কীভাবে পুলিশের সামনে অ্যাকশন হচ্ছে দেখুন। আইএসএফ এলোপাথাড়ি গুলি-বোমা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ কেন গুলি চালাচ্ছে না? ডিসিআরসিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীও রয়েছে। কেন তারা গুলি চালাচ্ছে না?’
গণনাকেন্দ্রের ভিতরে থাকা এক আইএসএফ প্রার্থীকে এই দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তাঁর বক্তব্য, তিনি সকালে ঢুকেছেন গণনাকেন্দ্রে। বাইকে কী হচ্ছে তা তিনি জানেন না। আইএসএফ নেতা আব্দুল কালামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনিও এই ঘটনার সঙ্গে আইএসএফের যোগের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘শওকত মোল্লার নেতৃত্বে তৃণমূলের হার্মাদ বাহিনী কাঠালিয়া স্কুলে বোমা চার্জ করছে। আর দোষ আমাদের দিকে চাপাচ্ছে।’