Panchayat Elections 2023 : কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হলেও বিপুল জয় হবে তৃণমূলেরই, ফলতায় মন্তব্য অভিষেকের
Abhishek Banerjee: ২০১৪ সালে সংসদীয় ভোটে জিতে প্রথমবার সাংসদ হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকেই ফি বছর কাজের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেন তিনি। যে পুস্তিকায় তা সংকলিত থাকে, তার নামই 'নিঃশব্দ বিপ্লব'।
ফলতা: পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও বিপুল ভোটেই তৃণমূল জিতবে বলে মন্তব্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)। রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতায় ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ পুস্তিকা প্রকাশ অনুষ্ঠানে গিয়ে অভিষেক বলেন, পঞ্চায়েতে যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে, মানুষের সমর্থন নিয়ে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে। তিনি বলেন, “ভোট ইডি, সিবিআই কেন্দ্রীয় বাহিনী দেয় না। আমরা মানুষের কাছে বদ্ধপরিকর। মানুষের সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক। যতদিন মানুষ আছে, তৃণমূলকে মানুষের হৃদয় থেকে বার করতে পারবে না।” একইসঙ্গে বলেন, “২০২১ সালে যে ভোটে জিতেছিলাম, ২০২৩ সালে আরও বাড়বে। ২০২৪ সালে আরও বাড়বে।” আর এই পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের সব জেলা পরিষদ দখল করবে তৃণমূলই, বলেন তিনি। রবিবার ফলতার হরিণডাঙায় বিডিও অফিস মাঠে ডায়মন্ড হারবার সংসদীয় এলাকার এক বছরের কাজের খতিয়ান সম্বলিত পুস্তুক ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ প্রকাশ করেন এলাকার সাংসদ অভিষেক।
২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে ৩৪ শতাংশ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন অভিষেক সেই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “আমি বলেছিলাম, এবার শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। ১০০ শতাংশ আসনে মনোনয়ন দেবে বিরোধীরা। সবাই লড়াই করবে। এবার বিরোধীরা দেড় লক্ষের বেশি মনোনয়ন জমা দিয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে লড়াই হবে। কিন্তু আমি তো বিরোধীদের প্রার্থী খুঁজে দিতে পারব না। কেউ মনোনয়ন দিতে না পারলে এক ডাকে অভিষেকে ফোন করতে বলেছিলাম।”
এদিন বিরোধীদের উদ্দেশে কটাক্ষের সুরে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডকে বলতে শোনা যায়, “বিরোধীদের প্রচুর টাকা আছে। ওদের ইডি, সিবিআই সাহায্য করছে। কিন্তু ওদের সঙ্গে আসলটাই নেই, সেটা হল মানুষ। তৃণমূলের সঙ্গে মানুষ আছে। গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে। মানুষ মনে করলে দাম্ভিক প্রধানমন্ত্রীকে পাঁট মিনিটে নামিয়ে দিতে পারে।”
২০১৪ সালে সংসদীয় ভোটে জিতে প্রথমবার সাংসদ হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকেই ফি বছর কাজের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেন তিনি। যে পুস্তিকায় তা সংকলিত থাকে, তার নামই ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’। এবার প্রায় ৪০০ পাতার সেই পুস্তিকা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সারা দেশে কোনও সাংসদ এভাবে প্রতি বছর নিজের কাজের খতিয়ান প্রকাশ করেন না। বলেন, “এমপি ফান্ডের ৫ কোটি টাকা-সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে পাওয়া টাকায় কী কাজ করেছি তা এই বইয়ে বিস্তারিত আছে। পঞ্চায়েত, পুরসভা, জেলা পরিষদ বা বিধায়ক ফান্ডের কাজের কোনও হিসাব এর মধ্যে নেই।”
সে কথার রেশ ধরেই বিজেপির দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, বিজেপি এই জেলার জন্য কী করেছে তা সামনে আনুক। রাজ্যের মানুষের জন্য কী করেছে সেটাও জানাক। এক পাতাও ভরাতে পারবে না বলে কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন, উন্নয়ন নিয়ে বিরোধীরা তর্কে বসুক তাঁর সঙ্গে। ১০-০ গোলে হারিয়ে দেবেন বলেও আত্মবিশ্বাসী তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বিরোধীদের তাঁর চ্যালেঞ্জ, “যদি উন্নয়নের নিরিখে আমাকে হারাতে পারে তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।”
তৃণমূলের জয় নিয়ে অভিষেকের মন্তব্যের কটাক্ষ করল বিজেপি। ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি অভিজিৎ সর্দার বলেন, “আঠারো সালের পঞ্চায়েতে হিংসার পর মানুষ ঊনিশে বিজেপিকে সমর্থন করেছিল। তাই এবার মনোনয়নে মানুষের কাছে অন্য চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছে তৃণমূল। এবার আমরা মনোনয়ন করতে পেরেছি নিজেদের জোরে। কিন্তু, মনোনয়নের পর চারিদিকে হিংসা হচ্ছে। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের চাপ দেওয়া হচ্ছে।”
এদিকে, ফলতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ঘিরে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। অভিযোগ, ভোট ঘোষণার পর পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন অভিষেক। এমনকি প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া হাইওয়েতে অভিষেকের কাট-আউট বসানো হয়েছে। বিজেপির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।