Video: প্রাণ ভিক্ষা চাইছে কালিয়াগঞ্জের পুলিশ! পুলিশের লাঠি দিয়েই ‘বেধড়ক মার’ বিক্ষোভকারীদের
Kaliyaganj: মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ। সেখান নাবালিকার রহস্যমৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামে রাজবংশী, আদিবাসী,তফশিলি আদিবাসী সমন্বয় কমিটির। পাশাপাশি পথে নামে বিজেপিও।
কালিয়াগঞ্জ: একটি বাড়িতে আটকে পুলিশকর্মীরা। তাঁদেরকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে। রীতিমতো হাত দিয়ে আটকে নিজেদের প্রাণ ভিক্ষা চাইছে পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিয়ো দেখার পরই শিউরে উঠছেন অনেকেই। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব যাঁদের হাতে তাঁরাই অসহায় অবস্থায় প্রাণ ভিক্ষা চাইছেন! যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেন TV9 বাংলা।
মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ। সেখান নাবালিকার রহস্যমৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামে রাজবংশী, আদিবাসী, তফসিলি আদিবাসী সমন্বয় কমিটি। পাশাপাশি পথে নামে বিজেপিও। তবে বেলা বাড়তেই তৈরি হয় অশান্তি। ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভকারীদের প্রথমে আটকাতে যায় পুলিশ। তবে বিক্ষোভকারীরা সেই ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। এরপর পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে শুরু হয় ‘খন্ডযুদ্ধ’। অভিযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট-পাথর কাচের বোতল। বিক্ষুব্ধ জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে কাঁদানে গ্যাস, রবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ছোড়ার। এরপর আরও ক্ষিপ্র হয়ে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। কালিয়াগঞ্জ থানার ভিতর আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে থানা।
এই পরিস্থিতিতে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দেখা যায়, স্থানীয় একটি বাড়িতে প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। তাঁদেরকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করছেন বিক্ষোভকারীরা। রীতিমত অসহায় অবস্থা পুলিশের। এই ভিডিয়োটি কালিয়াগঞ্জের ঘটনার বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য এ দিনের ঘটনায় গুরুতর আহত এক সিভিক ভলান্টিয়ার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। ওই ভিডিয়োয় বাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা গিয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যান বাড়ির মালিক। ওই বাড়ির মালিক বলেন, “আমি ঘরে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ দেখি প্রচুর পুলিশ বাড়িতে চলে এসেছে। আমি ভয় পেয়ে যাই। সবাই আত্মরক্ষার জন্য যে যেই ঘরে পেরেছে লুকিয়ে পড়েছে। আমি ভয়ে পালিয়ে যাই। আমার ঘরের টাকা পয়সা সোনা চুরি করে পালিয়েছে।”
এই বিষয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে কোনও গণধর্ষণ নয়। বিষক্রিয়া। বিজেপি প্রথম থেকে মানুষকে প্ররোচনা দিচ্ছে। এরই রেজাল্ট পুলিশের উপর হামলা। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, থানা জ্বালিয়েছে সব কটাকে গ্রেফতার করা উচিত।” অপরদিকে, বিজেপি সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আদিবাসী সমাজ এখানে সব থেকে বেশি উৎপিড়ীত। ওদের হাতে বোমা-বন্দুক তুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হবে। নবান্নকে ঘিরে নেবে জনগণ।”প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। যারা সরকারি কাজ করেন তাদেরকে এইভাবে মারধর করা হয়েছে।”
গতকাল পুলিশের পদস্থ কর্তা ঘটনাস্থল পরির্দশন করে গিয়েছেন। পুলিশকে হেনস্থার ঘটনায় যাঁরা জড়িত রয়েছেন তাঁদেরকে চিহ্নিতকরণের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। আটকও হয়েছেন কয়েকজন। প্রসঙ্গত, কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছিল প্রথম থেকেই। তারপর নাবালিকার দেহ টেন হিঁচড়ে নেওয়ার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই আরও ক্ষোভ বাড়ে এলাকাবাসীর মধ্যে। তবে গতকালের ঘটনা দেখে রীতিমত চমকে উঠছেন সকলে। বিক্ষোভকারীদের সামনে কার্যত ‘অসহায়’ পরিস্থিতি হয় পুলিশের।