AWAS Yojana: ‘৫০০ টাকা নিয়ে গেল ঘর দেবে বলে…’, বিডিও গ্রামে যেতেই ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেন এলাকার মানুষ
Uttar Dinajpur: সোমবার শীতগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েতের মধ্যমপুর গ্রামে আবাস যোজনা নিয়ে তদন্তে যান রায়গঞ্জ ব্লকের বিডিও শুভজিৎ মণ্ডল।
উত্তর দিনাজপুর: আবাস যোজনার ঘর নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ জেলায় জেলায়। স্বজনপোষণ থেকে অর্থের বিনিময়ে ঘর পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে ফালা ফালা স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত আধিকারিকরা। এবার রায়গঞ্জের শীতগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, টাকা দেওয়ার পরও তাঁদের নাম তালিকায় নেই। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে, তদন্তে যান খোদ বিডিও। বিডিওকে সামনে পেয়ে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিডিও জানান, বেশ কিছু পাকা বাড়ির খোঁজ মিলেছে। তদন্ত করে সবটা দেখা হচ্ছে।
সোমবার শীতগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েতের মধ্যমপুর গ্রামে আবাস যোজনা নিয়ে তদন্তে যান রায়গঞ্জ ব্লকের বিডিও শুভজিৎ মণ্ডল। আবাস-তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, সেসব বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখেন তিনি। প্রশাসনের তরফে খবর, তালিকায় এমন নামও পাওয়া গিয়েছে, যাঁদের ইতিমধ্যেই পাকা বাড়ি রয়েছে। এদিকে বিডিও-সহ প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরা গ্রামে পৌঁছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার লোকজন।
স্থানীয়দের একাংশ অভিযোগ তোলেন, আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দিতে শাসকদলের লোক এসে কারও কারও কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিয়ে গিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির লোক বলেও পরিচয় দিয়েছেন বলে অভিযোগ। অথচ বহু কষ্টে সেই টাকা দিয়ে এখনও ঘর পাননি সাধারণ মানুষ। সৌমেন বর্মন নামে এক যুবক বলেন, “৫০০ টাকা নিয়েছিল ঘর দেবে বলে। ছবিও তুলে নিয়ে যায়। অথচ ঘরও পাইনি, ৫০০ টাকাও গেছে! আমরা গরীব মানুষ। এত টাকা কোথায় পাব? আমাদের গ্রামের ৪০-৫০ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গিয়েছে। যে টাকা নিয়ে গিয়েছে সে তৃণমূল করে। নামটা গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান বলতে পারবেন। বিডিওকে বলতেই উনি বলছেন, ওই লোক চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। চাকরি ছাড়লে আমাদের টাকার কী হবে?”
একই অভিযোগ এই গ্রামের রমা রায়ের। তাঁর কথায়, “আমার জায়ের কাছ থেকেও টাকা নিয়ে গিয়েছে। ঘর দেবে বলে ছবি, কাগজ সব নিয়ে গিয়ে তারপর উধাও। আমরাও ঘর পাইনি।” যদিও রমা জানান, তাঁর কাছ থেকে কেউ টাকা নেয়নি। যদিও তৃণমূলের কেউ টাকা নিয়েছেন তা মানতে নারাজ গ্রামের উপপ্রধান নবকান্ত বর্মন। তিনি বলেন, “এই টাকা নেওয়ার অভিযোগটা আমি সবে পেলাম। আগে তো আমাকে কেউ বলেনি। কে টাকা নিয়েছে, কাকে টাকা দিয়েছে তা তো আমার জানার কথা নয়। তৃণমূল কংগ্রেস করে তাদের দিয়েছে বললেও, আমার প্রশ্ন কেন দেবে? আমি তো এই গ্রামেরই লোক। আমাকে কেন বলল না? জিও ট্যাগিং যাঁরা করতেন তাঁদের নাম বলছেন তাঁরা। জিও ট্যাগ সরকারি লোকের করার কথা। এখানে তো আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। তৃণমূলের লোক বলে লাভ নেই। যাঁরা করেছেন তাঁরা সরকারের পঞ্চায়েতের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অভিযোগ এল আমরা তদন্ত করে দেখব।” রায়গঞ্জের বিডিও শুভজিৎ মণ্ডল বলেন, “আমরা তদন্ত করছি। কিছু পাকা বাড়ি পাওয়া যাচ্ছে, আমরা দেখছি বিষয়টা।”