Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘দরজায় কড়া নাড়ছে ওরা! চেপে ধরা হল বাচ্চাদের মুখ, শৌচালয়ে লুকিয়ে ১৬ জন’, শিহরণ জাগানো অভিজ্ঞতা প্রবাসী পরিবারের

প্রবাসী ব্যক্তি বলেন, "আমার গোটা পরিবার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। রাস্তা থেকে কোনও গাড়ি যাওয়ার আওয়াজ পেলেই সকলে শৌচালয়ে ছুটছেন আশ্রয় নিতে। খাবারও অত্যন্ত সীমিত রয়েছে।"

'দরজায় কড়া নাড়ছে ওরা! চেপে ধরা হল বাচ্চাদের মুখ, শৌচালয়ে লুকিয়ে ১৬ জন', শিহরণ জাগানো অভিজ্ঞতা প্রবাসী পরিবারের
ফাইল ছবি : PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 21, 2021 | 11:47 AM

কাবুল: কারা যেন দরজায় কড়া নাড়ছে ! ভয়ে নিভিয়ে দেওয়া হল সমস্ত লাইট, সুইচ অফ করে দেওয়া হল মোবাইল ফোনও। প্রাণ বাঁচাতে পরিবারের ১৬ জন সদস্যই আশ্রয় নিলেন ছোট্ট একটি বাথরুমে। শুক্রবার থেকে এভাবেই ভয়ে দিন-রাত কাটাচ্ছেন কাবুলের বাসিন্দারা।

মুখে শান্তির বার্তা ও সকলকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বললেও ইতিমধ্য়েই বাড়ি বাড়ি ঘুরছে তালিবানরা। আফগান সেনা বা মার্কিন বাহিনীকে যারা মদত করেছিল, তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে গোটা পরিবারকেই খতম করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রেয়াত পাচ্ছেন না সাংবাদিকরাও। গতকালই এক জার্মান সাংবাদিকের খোঁজে তাঁর বাড়িতে হাজির হয় তালিবানরা। ওই সাংবাদিককে না পেয়ে তাঁর আত্মীয়কেই গুলি করে খুন করা হয়।

একের পর এক ঘটনা সামনে আসতেই আতঙ্কে রাত কাটছে আফগানিস্তানের বাসিন্দাদের। এক প্রবাসী আফগান একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানান, কাবুলে তাঁর বাড়িতেও কড়া নেড়েছিল তালিবানরা। ভয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘরের সমস্ত লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। অফ করে দেওয়া হয় মোবাইল ফোনও। পরিবারের ১৬ জন সদস্য একটি শৌচালয়ে আশ্রয় নেন। বাচ্চারা যাতে কেঁদে না ওঠে, তার জন্য তাদের মুখ চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল দীর্ঘ সময়। আগেই পরিবারের দুই সদস্য়কে আফগান যুদ্ধে হারানোয়, প্রাণের ভয় ছিল প্রচন্ড। তালিবানের দরজা ধাক্কানো বন্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেও ওই শৌচালয়েই লুকিয়ে থেকে  প্রাণে বেঁচেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

ওই প্রবাসী ব্যক্তি বলেন, “আমার গোটা পরিবার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। রাস্তা থেকে কোনও গাড়ি যাওয়ার আওয়াজ পেলেই সকলে শৌচালয়ে ছুটছেন আশ্রয় নিতে। খাবারও অত্যন্ত সীমিত রয়েছে। শহর তালিবানের দখলে চলে যাওয়ার পর থেকেই খাবারের দামও ব্যাপক হারে বেড়েছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিবারের অবস্থা অত্য়ন্ত শোচনীয়।” তিনি জানান, তাঁর পরিবারকে কাবুল থেকে বের করে আনার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন তিনি, ইতিমধ্যেই একাধিক দেশের ভিসার জন্য তিনি আবেদন করেছেন।

ক্ষমতা দখলের পরই তালিবানরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে “শহরে রক্ত ঝরতে দেওয়া হবে না। সকলকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। বাসিন্দাদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই, কাউকে বাড়ি ছেড়ে যেতে হবে না।” যদিও বাস্তবে ঠিক বিপরীত চিত্রটাই দেখা যাচ্ছে। শুক্রবার থেকে ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বাড়ি গিয়ে কড়া নাড়ছে তালিবানরা। প্রশ্নের সঠিক উত্তর না মিললেই রাস্তায় নামিয়ে চাবুক দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে।

প্রাক্তন সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর জওয়ান, সাংবাদিক, সমাজকর্মী সকলেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। শরিয়া আইন মেনেই মহিলাদের চাকরির স্বাধীনতার কথা বলা হলেও কাজে যোগ দিতে গেলেই বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মহিলা কর্মীদের। বৃহস্পতিবারই এই ঘটনার সাক্ষী থাকেন শবনম নামক একজন সংবাদ পাঠিকা, যিনি অফিস গেলে তাঁকে বলা হয়, “সরকার বদলেছে, তোমার আর প্রয়োজন নেই। বাড়ি যাও।” আরও পড়ুন: কাঁটাতার বেয়ে গড়াচ্ছে রক্ত, গেট ধরে কাঁদছেন মহিলারা! ‘ভুল খবরে’ চরম বিশৃঙ্খলা কাবুল বিমানবন্দরে