কাঁটাতার বেয়ে গড়াচ্ছে রক্ত, গেট ধরে কাঁদছেন মহিলারা! ‘ভুল খবরে’ চরম বিশৃঙ্খলা কাবুল বিমানবন্দরে

তালিবানরা বিমানবন্দর দখলের চেষ্টার পর থেকেই নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে নিয়েছে মার্কিন সেনা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিমানবন্দরের সমস্ত প্রবেশপথ। কড়া নজরদারি চালাচ্ছে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী।

কাঁটাতার বেয়ে গড়াচ্ছে রক্ত, গেট ধরে কাঁদছেন মহিলারা! 'ভুল খবরে' চরম বিশৃঙ্খলা কাবুল বিমানবন্দরে
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরের পরিস্থিতি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 21, 2021 | 10:29 AM

কাবুল: তালিবানের শাসন থেকে মুক্তি পেতে দেশ ছাড়তে চাইছেন অধিকাংশ আফগান বাসিন্দাই। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে একটি ভুল খবর কী পরিমাণ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, গত রাত থেকেই তার সাক্ষী থাকল কাবুল বিমানবন্দর। হাজার হাজার লোক ভিড জমিয়েছেন বিমানবন্দরের বাইরে। প্রবেশপথ বন্ধ থাকায় কাঁটাতারের প্রাচীর টপকিয়েই চলছে বিমানবন্দরে ঢোকার প্রতিযোগীতা।

শুক্রবার বিকেলেই কাবুলে লোকের মুখে মুখে একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে যে যারা বিমানবন্দরে রয়েছে বা পৌঁছতে পারবে, তাদের সকলকেই মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমানে করে আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হবে। এই খবর ছড়িয়ে পরতেই শয়ে শয়ে কাবুলবাসী ব্যাগপত্র গুছিয়ে ছোটেন বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে। চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় বিমানবন্দরের বাইরে।

তালিবানরা বিমানবন্দর দখলের চেষ্টার পর থেকেই নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে নিয়েছে মার্কিন সেনা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিমানবন্দরের সমস্ত প্রবেশপথ। কড়া নজরদারি চালাচ্ছে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী। এ দিকে, নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় হাজারো আফগানিদের।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের পোস্ট করা একাধিক ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, কয়েক হাজার মানুষ কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। মহিলারা গেট ধরে ক্রমাগত কেঁদেই চলেছেন। পুরুষরা কাঁটাতারকে উপেক্ষা করেই, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বিমানবন্দরের ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করছেন।

শুক্রবারই ভাইরাল হওয়া অপর এক ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, তালিবানদের হাত থেকে সন্তানদের বাঁচাতে মায়েরা কাঁটাতারের ওপারে ছুঁড়ে দিচ্ছেন কোলের শিশুদের। ওপর প্রান্তে দাঁড়ানো সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করা হচ্ছে তাদের সন্তানদের বিমানে করে অনত্র নিয়ে যেতে। কাপড়ে জড়ানো বেশ কিছু শিশুকে কাঁটাতারে আটকে যেতেও দেখা যায়।

চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জেরে বহু বিমান খালি বা অল্প সংখ্যক বিদেশীদের নিয়ে চলে যাচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। ব্রিটেনের তরফে দু’দিন আগেই জানানো হয়েছে, অভিভাবক ছাড়া কোনও শিশুকে তাদের উদ্ধারকারী বিমানে জায়গা দেওয়া হবে না। অন্যদিকে, আমেরিকাও হিমশিম খাচ্ছে নিজেদের দেশের নাগরিকদেরই দেশে ফিরিয়ে আনতে। বিমানবন্দরের ভিতরে কয়েক হাজার বিভিন্ন দেশের নাগরিক, যারা দূতাবাসে কাজ করতেন বা কাজের সূত্রে আফগানিস্তানে এসেছিলেন, তারাও অপেক্ষা করছেন।

মার্কিন সেনাবাহিনী সূত্রেও জানানো হয়েছে, আটকে পড়া নাগরিক ও আফগানদের উদ্ধারের জন্য যুদ্ধ বিমান ও হেলিকপ্টার পাঠানো হলেও তা সঠিক সময়ে অবতরণ বা যাত্রী নিয়ে দেশে ফিরতে পারছে না, কারণ বিমানবন্দরের আশেপাশেই বিপুল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মোতায়েন রয়েছে তালিবান বাহিনী। রকেট লঞ্চারের মতো শক্তিশালী হাতিয়ার থাকায় বিমান বা হেলিকপটার ওড়ার পর তার ক্ষতি বা ধ্বংস করে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঝুঁকি নিয়েই আপাতত বিমান ওঠানামা করছে। আরও পড়ুন: রাতারাতি ইন্টারনেট থেকে উধাও তালিবানের ওয়েবসাইট! বন্ধ করা হল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও