Lufthansa flight: নাক-মুখ দিয়ে বেরোচ্ছে লিটার-লিটার রক্ত, মুহূর্তে লাল বিমানের অন্দরমহল

Lufthansa flight: ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। থাইল্যান্ড থেকে জার্মানি যাওয়ার পথে, লুপথানসার বিমানে ওই প্রৌঢ় যাত্রীর নাক-মুখ থেকে অন্তত কয়েক লিটার রক্ত বের হয় এবং শেষ পর্যন্ত মাঝ আকাশেই তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু, তার আগে প্রায় আধঘণ্টা ধরে আকাশপথে তীব্র আতঙ্কের মধ্য়ে অন্তত আধ ঘণ্টা সময় কাটাতে হয় যাত্রীদের।

Lufthansa flight: নাক-মুখ দিয়ে বেরোচ্ছে লিটার-লিটার রক্ত, মুহূর্তে লাল বিমানের অন্দরমহল
মাঝআকাশে আতঙ্ক, মৃত্যু হল জার্মান নাগরিকেরImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Feb 11, 2024 | 5:54 PM

ব্যাঙ্কক: মাঝ আকাশে উড়ছে বিমান। চলন্ত বিমানের মধ্যে, নাক-মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে এক যাত্রীর। সেই রক্ত ছিটকে গিয়ে লাগছে বিমানের ভিতরের মেঝেতে, দেওয়ালে। সিপিআর দিয়ে তাঁকে রক্ষা করার চেষ্টা করে চলেছেন ক্রু সদস্যরা। আতঙ্কে চিৎকার করছে বিমানের সকল যাত্রী। এই রকমই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হলেন, জার্মান উড়ান সংস্থা, লুপথানসার এক বিমানের যাত্রীরা। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। থাইল্যান্ড থেকে জার্মানি যাওয়ার পথে, লুপথানসার বিমানে ওই প্রৌঢ় যাত্রীর নাক-মুখ থেকে অন্তত কয়েক লিটার রক্ত বের হয় এবং শেষ পর্যন্ত মাঝ আকাশেই তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু, তার আগে প্রায় আধঘণ্টা ধরে আকাশপথে তীব্র আতঙ্কের মধ্য়ে অন্তত আধ ঘণ্টা সময় কাটাতে হয় যাত্রীদের।

নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে, নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি জার্মান নাগরিক, বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। মধ্যরাতের কিছু আগে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্কক থেকে তিনি মিউনিখের ফ্লাইটে উঠেছিলেন। সহযাত্রীরা জানিয়েছেন, ওঠার সময়ই তাঁকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। তাঁর শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু ঘামও হচ্ছিল। শ্বাস চলছিল অত্যন্ত দ্রুত। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। তিনি জানান, তাঁদের খুব তাড়াহুড়ো করে বিমানে উঠতে হয়েছে। সেই কারণেই তাঁর স্বামী অসুস্থ বোধ করছেন। চিন্তার কিছু নেই।

কারিন মিসফেল্ডার নামে এক মহিলাও ছিলেন বিমানে। সুইজারল্যান্ডের জুরিখের বাসিন্দা কারিন, পেশায় একজন নার্স। ওই জার্মান ব্যক্তিকে দেখে তিনি বুঝেছিলেন, ওই ব্যক্তির অবস্থা ভাল না। তিনি বিমানসেবিকাদের সতর্ক করেন। জানান, একজন চিকিৎসকের ওই ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা দরকার। এক অল্পবয়সী পোলিশ চিকিৎসক সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। তিনিও ওই জার্মান ব্যক্তির নাড়ি পরীক্ষা করে জানিয়েছিলেন, তিনি ঠিকই আছেন। তাঁকে একটি চা দিতে বলেছিলেন ওই পোলিশ ডাক্তার। তবে, তার মধ্যেই রক্তবমি করা শুরু করেছিলেন ওই ব্যক্তি।

বিমানে, বমি করার জন্য কাগজের তৈরি বিশেষ ব্যাগ থাকে। তাঁর স্ত্রী সেই ব্যাগ ধরেছিলেন ওই ব্যক্তির মুখের সামনে। প্রথমে তাতেই রক্তবমি করেছিলেন তিনি। কিছু পরে, ৬৩ বছরের ওই ব্যক্তির নাক-মুখ দিয়ে ঝর-ঝর করে রক্ত পড়তে থাকে। সেই রক্ত কাগজের ব্যাগে আটকে রাখা যায়নি। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যায় বিমানের এদিকে-সেদিকে। কারিন মিসফেল্ডার জানিয়েছেন, কয়েক মুহুর্তের মধ্যে কয়েক লিটার রক্ত বেরিয়েছিল। জেটবিমানটির দেওয়াল রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল। বিমানযাত্রীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে, বিমানসেবিকারা তাঁকে সিপিআর দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তবে, শেষ পর্যন্ত তাঁর দেহ স্থির হয়ে যায়। স্ত্রীর সামনেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। এরপর, বিমানের ক্যাপ্টেন তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘোষণার পরই বিমানযাত্রীদের মধ্যে অদ্ভূত নীরবতা নেমে এসেছিল বলে জানিয়েছেন কারিন।

এরপর, মিউনিখ না গিয়ে, মাঝ আকাশ থেকেই বিমানটি মুখ ঘুরিয়ে ফের থাইল্যান্ডে ফিরে আসে। ফ্লাইট তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা বেজে ৫০ মিনিটে ব্যাঙ্কক ছেড়েছিল বিমানটি। শুক্রবার সকাল ৮টা বেজে ২৮ মিনিটে সেটি ফের ব্যাঙ্ককে ফিরে আসে। ফেরার পথে ওই ব্যক্তির দেহ বিমানের গ্যালারি অংশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কারিন মিসফেল্ডার জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রীকে একা-একাই কাস্টমসের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সামলাতে হয়েছে। তিনি সেখানে একেবারে একা ছিলেন এবং তাঁকে একাই সমস্ত কাজের চাপ সহ্য করতে হয়েছে। এদিকে হংকং-এ ফিরে আসার পর, যাত্রীদের জার্মানির অন্য এক বিমানে তুলে দেওয়া হয়। তবে, তার জন্য কোনও নির্দেশিকা ছাড়াই তাদের বিমানবন্দরে অন্তত দুই ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

লুফথানসার এক মুখপাত্র বলেছেন, “বিমানে থাকা ক্রু সদস্য এবং এক ডাক্তার অবিলম্বে ওই ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু, মাঝ আকাশেই ওই যাত্রীর মৃত্যু হয়। নিহত যাত্রীর পরিজনদের পাশে আছি আমরা। বিমানের যাত্রীদের যে অসুবিধা হয়েছ, তার জন্য আমরা দুঃখিত।”