‘বন্ধু’ তালিবদের দেড় কোটি ডলার সাহায্য পাঠাল বেজিং

China - Taliban : অন্তর্বর্তীকালীন তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুতাকির সঙ্গে আজ দেখা করলেন আফগানিস্তানের চিনা রাষ্ট্রদূত ওয়াং ইউ।

'বন্ধু' তালিবদের দেড় কোটি ডলার সাহায্য পাঠাল বেজিং
ছবি: ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 14, 2021 | 7:49 PM

কাবুল : বেজিং – কাবুল সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে দিনে দিনে। অন্তর্বর্তীকালীন তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুতাকির সঙ্গে আজ দেখা করলেন আফগানিস্তানের চিনা রাষ্ট্রদূত ওয়াং ইউ। তালিবান মুখপাত্র মহম্মদ নইম জানিয়েছেন, আজ কাবুলে দুজনের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। চিনের থেকে দেড় কোটি মার্কিন ডলারের সাহায্য পাচ্ছে আফগানিস্তান।

সম্প্রতি আফগানিস্তানের সাধারণ নাগরিকদের সাহায্যের জন্য ৬ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর কথা বলেছে আমেরিকা। তার পরপরই চিন থেকে এই সাহায্য় পাঠানো হচ্ছে নতুন তালিব সরকারকে। যদিও মার্কিন সাহায্য তালিবান সরকারের হাতে যাচ্ছে না। আমেরিকার সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এই ত্রাণ সামগ্রী বেসরকারি সংস্থা এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের হাত দিয়ে আফগান নাগরিকদের কাছে সরাসরি পৌঁছে যাবে।

আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠন করেছে তালিবান। তবে অন্তবর্তীকালীন এই সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে এখনও বেশ ধন্দে রয়েছে বিশ্বের কূটনৈতিক মহল। মার্কিন মুলুক জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনওরকম তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না। এই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেই তালিব সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং। মোল্লা হাসান আখুন্দের সরকারকে ৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শি জিনপিং।

এমনটা যে হতে পারে, তার অনুমান আগে থেকেই করছিলেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ১৫ অগস্ট তালিবরা কাবুলের দখল নেওয়ার পরই চিন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বেজিং থেকে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানে যে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল (আশরাফ গনির আমলে) তা থেকে মুক্তির জন্য এই পদক্ষেপ অবশ্যম্ভাবী। তালিবানও জানিয়েছে, তাদের সরকারের সবথেকে বড় অংশীদার হতে চলেছে চিন। আর তারপর এই ঘটনা যে শুধু সময়ের অপেক্ষা, তা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন অনেকেই।

এদিকে তালিবদের পাশে দাঁড়ানোর পিছনে বেজিংয়ের ব্যক্তিগত স্বার্থ লুকিয়ে রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে আমেরিকা। মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিনকে একহাত নিয়ে বলেছিলেন, “তালিবানের সঙ্গে সত্যিই সমস্যা রয়েছে চিনের। ওরা নিশ্চয়ই চাইবে, তালিবানের সঙ্গে কোনওরকম সমঝোতায় আসার। এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত। একইভাবে পাকিস্তান ও রাশিয়াও চেষ্টা চালাবে। ওরা সকলেই কী করা উচিত, তা বোঝার চেষ্টা করছে।”

আফগানিস্তানকে নতুন করে সাজিয়ে তুলতে তালিবান যে বেজিংয়ের উপরই নির্ভর করে রয়েছে, তা আগেই বকলমে স্বীকার করে নিয়েছিলেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ। বলা হয়েছিল, পাক অধিকৃত কাশ্মীর হয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত প্রস্তাবিত সড়ক-সহ গোটা বিশ্বকে সড়কপথে জুড়তে যে পরিকল্পনা চিনের রয়েছে, সেটা তারা সমর্থন করে। তালিবানি মুখপাত্রের মুখে শোনা গিয়েছিল, “চিনই আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমাদের জন্য চিন অসাধারণ সব সুযোগ প্রস্তুত করেছে। কারণ আমাদের দেশ এই মুহূর্তে বিনিয়োগ এবং পুনর্গঠনের জন্য প্রস্তুত।” শেষে হলও তাই। অন্তর্বর্তীকালীন তালিবান সরকার গঠনের পরই তাদের দেড় কোটি ডলারের সাহায্য পাঠাল চিন।

আরও পড়ুন : এভাবে পিটিয়েছে সাংবাদিকদের! ‘অপরাধ’ ছবি তুলে ছিলেন ওঁরা