প্রথমদিনেই ফাঁকা ক্লাসরুম, হিজাব-নিকাবের আড়ালে ছাত্রীরা, তালিবানি ফতেয়ায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম বিশ্ববিদ্যালয়!

তালিবান ফতেয়ায় আরও জানানো হয়েছে, মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য আবায়া ও নিকাব পরতে হবে। স্বামী বা রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, এমন কোনও পুরুষ সঙ্গীর তত্বাবধানেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। অন্য় কোনও পুরুষের সঙ্গে তারা কথা বলতে পারবেন না।

প্রথমদিনেই ফাঁকা ক্লাসরুম, হিজাব-নিকাবের আড়ালে ছাত্রীরা, তালিবানি ফতেয়ায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম বিশ্ববিদ্যালয়!
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 07, 2021 | 2:54 PM

কাবুল: “উদারমনা” তালিবান মহিলাদের শিক্ষার অধিকার দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সবই ফাকা। সেখানে দেখা নেই কোনও ছাত্রীর। আফগানিস্তানে স্কুল-কলেজ খোলার প্রথম দিনেই কার্যত পডুয়া শূন্যই থাকল ক্লাসরুমগুলি।

১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল অবধি তালিবানি শাসনকালে নারী শিক্ষার অধিকার ছিল না। ২০ বছর পর ফের একবার আফগানিস্তানের মসনদে বসতেই তালিবানরা জানিয়েছে, আগের সময়ের সঙ্গে বর্তমান তালিবানের বিস্তর ফারাক রয়েছে। প্রথমেই জানানো হয়েছিল, মহিলাদের শিক্ষা ও কাজের অধিকার দেওয়া হবে। শরিয়া আইন মেনেই মহিলাদের স্বাধীনতা নির্ধারণ করা হবে।

সম্প্রতিই তালিবানের তরুে ফতেয়া জারি করে জানানো হয়, মহিলারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম। আফগান সরকারের পতনের পরই আপাতত উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন হাক্কানি নেতা আব্দুল বাকি হাক্কানি (Abdul Baqi Haqqani)। তিনি সম্প্রতিই আফগানিস্তানের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রধানের সঙ্গে দেখা ও বৈঠক করেন। এরপরই তিনি ঘোষণা করেন যে, নতুন সরকার মেয়েদেরও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি দেবে। তবে ছেলেদের সঙ্গে একই ঘরে বসে তারা পড়াশোনা করতে পারবে না। আলাদাভাবে কক্ষের ব্যবস্থা করতে হবে।

সেই সময়ই বেসরকারি বিশ্ববিদ্য়ালয়ের অধ্যাপকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, আগেই মহিলা পড়ুয়ার সংখ্যা কম ছিল। আলাদাভাবে মেয়েদের জন্য ক্লাসরুম তৈরি করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে মহিলারা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। যদি বা আলাদা ক্লাসরুমের ব্য়বস্থাও করা হয়, তবে কতজন মেয়ে পড়তে ইচ্ছুক থাকবে, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে, কারণ তালিবানি শাসন ও শাস্তি নিয়ে ভীত তারা।

তালিবান ফতেয়ায় আরও জানানো হয়েছে, মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য আবায়া ও নিকাব পরতে হবে। স্বামী বা রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, এমন কোনও পুরুষ সঙ্গীর তত্বাবধানেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। অন্য় কোনও পুরুষের সঙ্গে তারা কথা বলতে পারবেন না। রবিবারই তালিবান এডুকেশন কমিটির তরফে একটি লম্বা তালিকা প্রকাশ করা হয়, যেখানে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়াদের কী কী নিয়ম মানতে হবে, তা জানানো হয়েছে। যদি আলাদা ক্লাসরুমের ব্যবস্থা না করা যায়, তবে ১৫ জনের বেশি পড়ুয়া থাকলেও মাঝখানে পর্দা টাঙিয়ে দিতে হবে। মহিলাদের ক্লাসও ৫ মিনিট আগে শেষ করতে হবে, যাতে বেরনোর সময় পুরুষদের সঙ্গে দেখা না হয়।

কাবুলের ঘারজিস্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিরেক্টর নুর আলি রহমানি বলেন, “আমাদের পড়ুয়ারা এই নিয়ম মানতে চাইছে না। তারা হিজাব পরলেও নিকাব পরতে রাজি নন। হয়তো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে হবে আমাদের। আমরা নিজেও এই নিয়ম মানতে চাইছি না, এটা আসল ইসলামের নিয়ম নয়, কোরানে এই ধরনের কোনও নিয়ম লেখা নেই।” আরও পড়ুন: লজ্জায় তালিবান! স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধেই তালিব-মুক্ত হল পুল-ই-হেসার, সংঘর্ষ চলছে বাকি প্রদেশেও