লজ্জায় তালিবান! স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধেই তালিব-মুক্ত হল পুল-ই-হেসার, সংঘর্ষ চলছে বাকি প্রদেশেও

এর আগেও গত ২০ অগস্ট তালিবান বিরোধী বাহিনীর কম্যান্ডার আবদুল হামিদ দাদগারের নেতৃত্বেই বাঘলানের তিনটি জেলা দখল করা হয়েছিল তালিবানের হাত থেকে।

লজ্জায় তালিবান! স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধেই তালিব-মুক্ত হল পুল-ই-হেসার, সংঘর্ষ চলছে বাকি প্রদেশেও
উত্তোলন করা হচ্ছে আফগানিস্তানের পতাকা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 07, 2021 | 10:51 AM

বাঘলান: তালিবান পঞ্জশীর দখল নিলেও মাথা নোয়াইনি প্রতিরোধ বাহিনী। ধীরে ধীরে ফের তালিবানের কবজা থেকে একের পর এক অঞ্চল দখল মুক্ত করছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, আবদুল হামিদ দাদগারের নেতৃত্বে স্থানীয় বাহিনী বাঘলান প্রদেশের পুল-ই-হেসার তালিবানের কবজামুক্ত করেছে। দেহ সালাহ, বানু ও আন্দারাবেও সংঘর্ষ চলছে বলে জানা গিয়েছে।

কাবুল দখল করায় গোটা দেশেই আধিপত্য জারি করেছিল তালিবানরা। তবে কাবুলের উত্তরেই অবস্থিত পঞ্জশীরে কিছুতেই দখল নিতে পারছিল না তালিবানরা। সেখানে আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে প্রতিরোধ বাহিনী তালিবানের সঙ্গে লড়াই জারি রেখেছিল। তালিবানি শাসনের হাত থেকে মুক্তি পেতে আফগান সেনা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সকলেই প্রতিরোধ বাহিনীতে নাম লেখাচ্ছিল। গোটা বিশ্বের নজরই ছিল পঞ্জশীরের উপর।

গত সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকেই পঞ্জশীরে ফের তালিব বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় পঞ্জশীরের উপত্যকা। প্রতিরোেধ বাহিনীকে পরাজিত করতে তালিবানের সঙ্গে হাত মেলায় আল কায়েদা সহ বিভিন্ন পাক জঙ্গি সংগঠনও। অবশেষে গতকাল, সোমবার পঞ্জশীর দখল করা হয়েছে বলে জানায় তালিবান।

টুইটারে পঞ্জশীরের গভর্নর হাউসে তালিবানি পতাকা লাগানোর ভিডিয়োও পোস্ট করা হয়। তালিবানের তরফে দাবি করা হয়, প্রতিরোধ বাহিনীর শীর্ষ নেতা আহমেদ মাসুদ ও প্রাক্তন ভািস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহকে বন্দি বানানো হয়েছে। যদিও কিছুক্ষণ পরেই মাসুদ ঘনিষ্ট এক ব্যক্তি টুইট করে জানান, সম্পূর্ণ সুরক্ষিতই রয়েছেন তিনি। প্রতিরোধ বাহিনীও সক্রিয়ই থাকবে। আহমেদ মাসুদ নিজেও পঞ্জশীরের একটি ছবি পোস্ট করে তালিবানের হাত থেকে পঞ্জশীর রক্ষার আবেদন জানান।

তালিবানের তরফে প্রতিরোধ বাহিনীকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হলেও তাতে যে দমে যাননি তারা, তার প্রমাণ মিলল পরদিনই। এ দিন সকালেই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়, পঞ্জশীরের প্রতিবেশী বাঘলান প্রদেশে তালিব বাহিনীর সঙ্গে প্রতিরোধ বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর,  একাধিক জায়গায় সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও তালিবানের বিরুদ্ধে হাতদে অস্ত্র তুলে নিয়েছেন।

আবদুল হামিদ দাদগারের নেতৃত্বেই পুল-ই-হেসার জেলার দখল নেওয়া হয়েছে। দেহ সালাহ, বানু ও আন্দারাবেও সংঘর্ষ চলছে। ভিডিয়োয় তালিবানি পতাকা নামিয়ে দেওয়ার দৃশ্যও দেখা যায়। একাধিক বাসিন্দার হাতে অস্ত্রও দেখা যায়।

এর আগেও গত ২০ অগস্ট তালিবান বিরোধী বাহিনীর কম্যান্ডার আবদুল হামিদ দাদগারের নেতৃত্বেই বাঘলানের তিনটি জেলা দখল করা হয়েছিল তালিবানের হাত থেকে।

গতকাল পঞ্জশীর দখলের পরই তালিবানের মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “অবশেষে যুদ্ধ শেষ হল। আশা করছি এ বার শান্তিপূর্ণ আফগানিস্তান গঠন করতে পারব আমরা। যারা হাতে অস্ত্র তুলে নেবে, তারা সাধারণ মানুষ ও দেশের শত্রু বলেই বিবেচিত হবে। দেশের পলাতক শত্রুদের শেষ লুকনোর জায়গাও বর্তমানে আমাদের দখলে। যারা আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছিল, তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। তবে এখনও আমরা ক্ষমা করে দিতে পারি।”

পঞ্জশীর দখলের প্রসঙ্গে তিনি জানান, তালিবানের তরফে শান্তিপূর্ণভাবেই সমস্য়ার সমাধান করতে চেয়েছিল, কিন্তু প্রতিরোধ বাহিনী সেই প্রস্তাব মানেনি। তবে পঞ্জশীর দখলের সময়ও যাতে সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষতি না হয়, সেই দিকটি নিশ্চিত করেছে তালিবান, এমনটাই দাবি করেন জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ। আরও পড়ুন: তালিবদের অন্দরে টানাপোড়েন চরমে, রাষ্ট্রপুঞ্জে সন্ত্রাসবাদী তালিকায় থাকা মোল্লা আখুন্দই হবে প্রধানমন্ত্রী!