ব্যবধান বাড়ালেই লাভ কোভিশিল্ডে, ল্যানসেটে ফল প্রকাশ গবেষণার
এর আগেও দেখা গিয়েছে প্রথম ডোজ়ের পরে ব্যবধানে বুস্টার ডোজ় নিলে অ্যান্টিবডির কার্যকরিতা বৃদ্ধি পায়
সিডনি: ভারতে কোভ্য়াক্সিন (Covaxin) ও কোভিশিল্ডের (Covishield) মাধ্যমে টিকাকরণ চলছে জোর কদমে। কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ়ের ৩ মাস পরে দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার কথা বলছেন চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা। সেই মতো নয়া নির্দেশিকাও জারি করেছে কেন্দ্র। ১২-১৬ সপ্তাহের ব্যবধানে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ় মিলছে টিকাকরণ কেন্দ্রে। কিন্তু এর পিছনে আসল কারণ কী? ল্যানসেট জার্নালে সম্প্রতি সেই সংক্রান্ত একটি ট্রায়ালের ফল প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে ১৭,০০০ স্বেচ্ছাসেবকের ওপর কোভিশিল্ডের ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে ব্যবধান বৃদ্ধিতেই অধিক কার্যকরী হচ্ছে টিকা। যদি দুই ডোজ়ের মধ্যে ব্যবধান ৬ সপ্তাহের কম হয়, তাহলে কার্যকরিতা ৫৫ শতাংশেরও নীচে নেমে যাচ্ছে। এমনটাই বলছে গবেষণা।
এ বিষয়ে পিটার দোহার্টি ইনস্টিটিউট ফর ইনফেকশন অ্যান্ড ইমিউনিটির ডিরেক্টর জোডি মেকভেরন জানিয়েছেন, এই ফলাফলই অভিপ্রেত ছিল। কারণ, এর আগেও দেখা গিয়েছে প্রথম ডোজ়ের দীর্ঘ ব্যবধানে পরে বুস্টার ডোজ় নিলে অ্যান্টিবডির কার্যকরিতা বৃদ্ধি পায়। এবোলা, ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রেও এই প্রবণতা দেখা গিয়েছে বলে দাবি তাঁর।
Here’s what you need to know – second dose after 90 days .. https://t.co/wLqF3fGaQE
— Barun Das (@justbarundas) May 23, 2021
কেন ব্যবধান বাড়ালে ভাল কার্যকরিতা দেখা যাচ্ছে?
১২ সপ্তাহের ব্যবধানে টিকার অধিক কার্যকরিতা নিয়ে দু’টি তত্ত্বের কথা জানিয়েছেন অধ্যাপক ডামার। ভ্যাকসিন যখন মানবদেহে প্রবেশ করে, তখন দেহে প্রতিরোধ তন্ত্রে ‘ইনফ্লেমাটরি রেসপন্স’ দেখা যায়। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই ফের দ্বিতীয় ডোজ় প্রবেশ করলে কার্যকরিতা হ্রাস পায়। তাই ব্যবধান বাড়িয়ে অধিক কার্যকরিতার প্রমাণ মিলছে। এ ছাড়া যেহেতু কোভিশিল্ড একটি অ্যাডিনোভাইরাস ভ্যাকসিন, তাই এর পৃষ্ঠতল ক্রিয়ার জন্যও ব্যবধান অধিক কার্যকরী হয়, এমনটাই মনে করছেন ডামার। কোভিশিল্ডে শিম্পাঞ্জির অ্যাডিনোভাইরাস ব্যবহৃত হয়েছে। তাই শরীরে অ্যাডিনোভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এ বার তাড়াতাড়ি বুস্টার ডোজ় নিলে এই অ্যাডিনোভাইরাসও প্রভাবিত হয়, তাই ব্যবধান বাড়িয়ে অধিক লাভ মেলে।
এ ছাড়া ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় সাফ জানানো হয়েছে, প্রথম ডোজ়ের পর থেকেই কার্যকরী হয় ভ্যাকসিন। দ্বিতীয় ডোজ় সেই কার্যকরিতাকে বৃদ্ধি করে। গবেষকদের কথা অনুযায়ী, প্রথম ডোজ়ের পরেই করোনা থেকে ৭৬ শতাংশ নিরাপদ এক ব্য়ক্তি। তবে সম্পূর্ণ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন দ্বিতীয় ডোজ়।
আরও পড়ুন: কুকুরের দেহে জন্ম, নয়া করোনাভাইরাসে শিশুদের ঝুঁকির রিপোর্ট