Bangladesh: বাংলাদেশে বাতিল ১৫ অগস্টের ছুটি! ক্রমে মুছে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু
Bangladesh National Mourning Day: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একচ্ছত্র নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তবে, শেখ হাসিনার বিদায়ের পর, এবার কি বাংলাদেশ থেকে পুরোপুরি মুছে যাবে তাঁর উত্তরাধিকার? ঘটনাক্রম সেই দিকেই এগোচ্ছে। এবার বাতিল করা হল ১৫ অগস্ট জাতীয় শোক দিবসের ছুটিও।
ঢাকা: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একচ্ছত্র নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তবে, শেখ হাসিনার বিদায়ের পর, এবার কি বাংলাদেশ থেকে পুরোপুরি মুছে যাবে তাঁর উত্তরাধিকার? ঘটনাক্রম সেই দিকেই এগোচ্ছে। হাসিনা বিদায়ের দিনই দেখা গিয়েছিল এক কদর্য ছবি। হাতুড়ির বাড়ি মেরে, বুলডোজার চালিয়ে ভাঙা হচ্ছিল বঙ্গবন্ধুর একের পর এক মূর্তি, ম্যুরাল। আর এবার বাতিল করা হল ১৫ অগস্টের ছুটিও। ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস। তবে, বাংলাদেশে এতদিন এই দিনটি পালিত হত জাতীয় শোক দিবস হিসেবে। ১৯৭৫ সালে এই দিনেই একাংশের সেনাকর্তাদের হাতে সপরিবারে খুন হয়েছিলেন শেখ মুজিব। সেই ভয়াবহতার স্মরণেই এই দিন ছিল সাধারণ ছুটি। তবে মঙ্গলবার (১৩ অগস্ট), সেই ছুটি বাতিল করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এদিন, ১৬ জনের উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠক হয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা, ‘যমুনা’য় হয় এই বৈঠক। আর এই বৈঠকেই জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে ১৫ অগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। উপদেষ্টা পরিষদ জানিয়েছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করে ব্যাপক ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে। বলাই বাহুল্য, এই রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ ছিল না। এই ছুটি বাতিলের বিষয়ে বাংলাদেশের উপদেষ্টা পরিষদ শিগগিরই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করবে বলে জানা গিয়েছে।
সোমবার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনূস। বিএনপি, জামাতে ইসলামি ছাড়াও, ইউনুস কথা বলেন গণতন্ত্র মঞ্চ, সিপিবি, বাসদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, এবি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে। আলোচনায় উঠে আসে জাতীয় শোক দিবসের প্রসঙ্গ। সূত্রের খবর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের দিনটিকে জাতীয় শোকদিবস হিসেবে পালন করা হবে কি না, সেই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত আসে। কোনও কোনও দল জাতীয় শোক দিবস বাতিল না করার পক্ষে মত দিলেও, সিংহভাগই ১৫ অগস্ট জাতীয় শোক দিবস বাতিল করার দাবি জানায়। এরপরই এই সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশের ৩৪টি ছাত্র সংগঠনও এই সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু, কোন যুক্তিতে জাতীয় শোক দিবস বাতিল করা হল, তা কোনও পক্ষই জানায়নি। শোকদিবস বাতিল করে কি বঙ্গবন্ধু হত্যার ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে চাইছে বাংলাদেশের নয়া সরকার? এভাবে কি ইতিহাস ভোলানো যায়?
অন্যদিকে, এই ১৫ অগস্ট দিনটিকে কেন্দ্র করেই ফের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ফিরতে চাইছে আওয়ামি লিগ। বঙ্গবন্ধুর হাতে তৈরি এই দল, এর আগেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিল। এদিন জানা গিয়েছে, সংঘভদ্ধভাবে না হলেও, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ওই দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে, অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর বাড়ি তথা জাদুঘরে দলে দলে জড়ো হবেন আওয়ামি লিগ সমর্থকরা। কাজেই ওই দিন ফের বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে।