ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই শরণার্থী শিবির, বের করা হচ্ছে একের পর এক দেহ

আগুন নিভেছে। কিন্তু সব হারিয়েছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা (Rohingya Refugee)। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই শরণার্থী শিবির, বের করা হচ্ছে একের পর এক দেহ
প্রায় ১০ হাজার ঘর পুড়ে ছাই
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 23, 2021 | 2:27 PM

ঢাকা: আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে রাতে। কিন্তু বেশ কয়েক ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও পুরো এলাকা ঢেকে আছে কালো ধোঁয়ায়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পোড়া ধ্বংসস্তূপ দেখেই বোঝা যাচ্ছে আগুনের তীব্রতা ছিল কতটা। আর সেই স্তূপ থেকে বেরিয়ে আসছে একের পর এক দেহ। বাংলাদেশের (Bangladesh) কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের (Rohingya Refugee) ওই ক্যাম্প জুড়ে হাহাকার। এখনও পর্যন্ত সাত জনের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

মায়ানমার থেকে এসে এই কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছিলেন এই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। এই ক্যাম্পে কয়েক লক্ষ মানুষের বাস। আগুনে অন্তত হাজার দশেক ঘর ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালীতে ৮ নম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সূত্রপাত হয় সোমবার বিকেলে। আগুন যখন বড় আকার নিতে শুরু করে, তখন ছুটে যায় বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ। হাত লাগান স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরাও। পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চেষ্টার পর রাত সোয়া ৯টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

কক্সবাজার ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহদাত হোসেন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সাতজন রোহিঙ্গার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে দুই শিশু ও দুই মহিলা। কিন্তু আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে তা এখনও স্পষ্ট নয়। কত ক্ষতি হয়েছে সেই হিসেবও আসেনি এখনও। তবে অনেকে পালিয়ে বাঁচলেও মৃতের সংখ্যে আরও বাড়বে বলে দাবি শরণার্থীদের। পালাতে গিয়ে প্রায় ৫০ জন আহত বা অগ্নিদগ্ধ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

বাংলাদেশের কক্সবাজারে বিস্তীর্ণ বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে ৩৪টি শরণার্থী শিবির। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ নম্বর শিবিরের একটি ঘরে প্রথমে আগুন লাগে। সেখান থেকে আশেপাশের ক্যাম্পগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ে আগুন। এক শরণার্থীর কথায়, ‘মায়ানমারে সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, এ বার এখানেও…’

আরও পড়ুন: ফের রক্তে ভাসল মায়ানমার, চিনা কারখানায় আগুনের পরই চলল গুলি, নিহত কমপক্ষে ৩৯

উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের অফিসার ইমদাদুল হক জানিয়েছেন, গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ তবে শিবিরের পাশে ফেন্সিং থাকায় অনেকেই পালানোর পথ পাননি বলে জানা গিয়েছে। সাহায্যের জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের রিফিউজি এজেন্সির তরফ থেকে প্রচুর স্বেচ্ছাসেবী পাঠানো হয়েছে। ২০১৭-তে মায়ানমার ছেড়ে চলে আসে রোহিঙ্গারা। তাদের আশ্রয় দেওয়া হয় বাংলাদেশের এই এলাকায়।