China-Sri Lanka Relationship : মুখ ফিরিয়েছে চিন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বন্ধুত্ব দৃঢ় করার সুযোগ পেল ভারত

China on Sri Lanka : চিনের জন্যই কিছুটা অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু এখন সেই চিনের দিক থেকেই মুখ ফিরিয়েছে বেজিং। অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে ভারতের দিকে তাকিয়ে শ্রীলঙ্কা। ভারত মহাসাগর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ ভারতের কাছে।

China-Sri Lanka Relationship : মুখ ফিরিয়েছে চিন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বন্ধুত্ব দৃঢ় করার সুযোগ পেল ভারত
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 11, 2022 | 7:06 PM

অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রীলঙ্কা ভারত বা চিনের মতো বড় দেশগুলির উপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি চিনের বিদেশ মন্ত্রী ওয়াং ই দুইদিনের শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিলেন। অর্থনৈতিকভাবে ধুকতে থাকা শ্রীলঙ্কা চিনা বিদেশ মন্ত্রীর এই সফর ঘিরে আশায় বুক বেঁধেছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, এই সফরে চিনের কাছ থেকে নেওয়া ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণের পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে। তাঁরা আরও ভেবেছিলেন, বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত কোনও প্রতিশ্রুতি করা হতে পারে। শ্রীলঙ্কায় কিছু মেগা প্রজেক্টে চিন সরকারের সাহায্য মিলবে। আইসিইউতে থাকা এই দ্বীপ রাষ্ট্রের বেঁচে ওঠার স্বপ্ন দেখছিলেন তাঁরা।

এই সফরকালে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাব্য রাজাপাকসা ঋণ পুনর্বিন্যাসের অনুরোধ করেন ওয়াংয়ের কাছে। এতে শ্রীলঙ্কা একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাবে বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কাকে অন্যান্য দেশের থেকে নেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে ৭ বিলিয়ন ডলার ফেরত দিতে হবে। এর মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার শ্রীলঙ্কাকে ফেরাতে হবে ১৮ জানুয়ারির মধ্যেই। আর জুলাইয়ের মধ্যেই অন্যান্য বিভিন্ন ঋণ প্রদানকারীদের ফেরাতে হবে ১ বিলিয়ন ডলার। চরম উদ্বেগের বিষয় হল, বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় ১৫ দিনের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। তবে এই চরম অবস্থাতেও চিনের থেকে কোনও আশ্বাস পায়নি শ্রীলঙ্কা।

শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্ট ঋণ প্রদানের একটি বিকল্প উপায় তুলে ধরেন চিনা বিদেশ মন্ত্রীর কাছে। তিনি চিনা পর্যটকদের শ্রীলঙ্কায় আসার জন্য এবং একটি কনসেশনাল ট্রেড ক্রেডিট সিস্টেমের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বিদেশ মন্ত্রীর। উল্লেখ্য, সম্প্রতি চিনা সংস্থা ক্যুইংডাও সিউইন বায়োটেকের পাঠানো সার শ্রীলঙ্কা সরকার গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। শ্রীলঙ্কা সরকার অভিযোগ করে, উক্ত কনসাইনমেন্ট পরিবেশ কোয়ারেন্টাইন নিয়ম ভঙ্গ করে। উল্লিখিত কনসাইনমেন্টটি ৫০ মিলিয়ন ডলারের ছিল। শ্রীলঙ্কা সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে মামলা দায়ের করে চিনা সংস্থা। আদালত সেই সময় ৬.৭ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলে শ্রীলঙ্কা সরকারকে। এই ঘটনার পরই শ্রীলঙ্কা এবং চিনের সম্পর্কে চিড় ধরে।

করোনা মহামারি পরিস্থিতে শ্রীলঙ্কার পর্যটন শিল্প ধাক্কা খেয়েছে। তাছাড়া বিগত কয়েক বছরে চিনের আর্থিক সাহায্যে হাম্বানটোটা, কলম্বো পোর্ট সিটির মতো বিভিন্ন প্রকল্প করা হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। কিন্তু এই প্রকল্পে শ্রীলঙ্কার লাভের লাভ কিছু হয়নি। এখন রীতিমতো শ্রীলঙ্কার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই দুই প্রকল্প। বৈদেশিক মুদ্রায় প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই প্রকল্পগুলি থেকে কোনও লাভের মুখ দেখছে না শ্রীলঙ্কা সরকার। ফলে এই প্রকল্প বাবদ ঋণের অর্থ ফেরাতে অক্ষম শ্রীলঙ্কা। এই আবহে স্বস্তি পেতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট চিনের বিদেশ মন্ত্রীর দিকেই তাকিয়ে ছিলেন। তবে চিনা সংস্থার সঙ্গে শ্রীলঙ্কার সরকারের সঙ্গে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের জেরে বেজিংয়ের মনোভাবে কাঠিন্য দেখা দিয়ে থাকতে পারে। তাছাড়া সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার প্রকল্পে হস্তক্ষেপে ক্ষুণ্ণ হয়েছে বেজিং। তাই চিন থেকে প্রত্যাখিত হয়ে নয়া দিল্লির দিকে তাকিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা। জরুরি ভিত্তিতে খাদ্যসামগ্রী, জ্বালানি এবং ওষুধ আমদানি করার জন্য ভারতের কাছে ধার চেয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের বন্ধু দৃঢ় করার এই সুযোগ নয়া দিল্লির কাছে। শ্রীলঙ্কা উপকূলে চিনা বাড়বাড়ন্ত এমনিতেই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের কাছে। এই আবহে ভারত মহাসাগরে চিনা আধিপত্যে থাবা বসাতে তৎপর হতে পারে ভারত।

আরও পড়ুনBangladesh News: চলতি মাসেই ৭৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে করোনা টিকা দেওয়ার ভাবনা বাংলাদেশ সরকারের