Cyclone Mokha: ‘মোখা’-র তাণ্ডবের পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা দুর্গতদের, কক্সবাজার পরিদর্শনে জেলা আধিকারিকেরা
Mokha Effect: 'মোখা'-র তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির যা হিসাব পাওয়া গিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, সমগ্র কক্সবাজারে প্রায় ১৩ হাজার ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে কেবল সেন্ট মার্টিনে প্রায় ৭০০ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কক্সবাজার: অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ (Cyclone Mokha)-র তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের (Bangladesh) কক্সবাজারে উপকূল সংলগ্ন এলাকা। রবিবার রাতভোর সেই দুর্যোগের পর সোমবার সকাল থেকে আবহাওয়ার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তাই এবার ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া দুর্গতরা। উপড়ে পড়া গাছ রাস্তার উপর থেকে সরিয়ে, ভেঙে পড়ার ঘরে জোড়াতালি দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। অন্যদিকে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে সোমবার বিকালে এলাকা পরিদর্শনে যান কক্সবাজার (Coaxbazar) জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। এদিনও দুর্গতদের ত্রাণ (Relief) দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘মোখা’-র তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের। এছাড়া সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ পুর এলাকা, বাহারছড়া ইউনিয়নেরও বেশ কিছু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এদিন বিকালে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পরিদর্শনে যান কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। পাশাপাশি দুর্গতদের শুকনো খাবারের প্যাকেটও দেন তাঁরা। উপজেলার কার্যনির্বাহী আধিকারিক (ইউএনও) মহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, “সেন্ট মার্টিনের জন্য ২২০০ খাবার প্যাকেট প্রস্তুত করা হয়েছে। ৮০০ জনের প্যাকেট আমরা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। বাকিগুলিও পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হবে।” এছাড়া অন্যান্য এলাকার দুর্গতদের জন্যও শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
‘মোখা’-র তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির যা হিসাব পাওয়া গিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, সমগ্র কক্সবাজারে প্রায় ১৩ হাজার ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে কেবল সেন্ট মার্টিনে প্রায় ৭০০ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেন্ট মার্টিনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ উপজেলা প্রশাসনের কাছে দেওয়া হয়েছে। সরকারের বরাদ্দ পাওয়া মাত্র প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ও তালিকাভুক্তদের কাছে সেটা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করব।” আবার শাহপরীর দ্বীপের আওয়ামী লীগ নেতা মনির উল্লাহ মনির বলেন, “এখানকার প্রত্যেকটি বাড়ি ঘরে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়নি এমন কোনোও পরিবার নেই। যে কোনও পরিবারে ক্ষতির পরিমাণ ২০ হাজারের কম নয়।” অবিলম্বে এই সব মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছনো দরকার বলে জানিয়েছেন তিনি। আবার সাবরাং ইউনিয়নে শতাধিক ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমের। এই সমস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
অন্যদিকে, ‘মোখা’-র তাণ্ডবের রেশ কিছুটা কমতেই নিজেদের ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া উপকূলের বাসিন্দারা। প্রশাসনের ভরসা না করেই আপাতত তাঁরা ত্রাণ শিবির থেকে ফিরে ভাঙা ঘরে জোড়াতালি দেওয়া, ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে রাস্তা সাফ করার কাজ শুরু করেছেন।