প্রথমবার তালিবানের সঙ্গে বৈঠকে ভারত, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কড়া বার্তা আফগান শাসকদের
ভারতের পক্ষ থেকে তালিবানকে বেশ কয়েকটি কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
দোহা: দিন ১৫ চিন্তা-ভাবনার পর অবশেষে তালিবানের সঙ্গে এক টেবিলে বৈঠকে বসল ভারত। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেলে কাতারের দোহায় ভারত-তালিবান বৈঠক হয়। ভারতের পক্ষ থেকে এই বৈঠকে অংশ নেন রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তল। তালিবানের পক্ষ থেকে নেতা আব্বাস স্তানিকজাইয়ের উপস্থিতি ছিল সেই বৈঠকে। সেখানে ভারতের পক্ষ থেকে তালিবানকে বেশ কয়েকটি কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
সূত্র জানাচ্ছে, তালিবানই ভারতের সঙ্গে এক টেবিলে বৈঠকে বসতে চেয়েছিল। সেই মতো কাতারের দোহায় এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। যেখানে ভারতের পক্ষ থেকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানানো হয়, আফগানিস্তানের মাটিতে যেন ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ না হয়। সূত্রের খবর, আফাগানিস্তানে থাকা ভারতীয়দের নিরাপত্তা, এবং তাঁদের ফিরিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে এই বৈঠকে। একই সঙ্গে আফগানিস্তানে তালিবান দখল নেওয়ার পর থেকেই যেভাবে জঙ্গিরা নিজেদের পছন্দের জায়গা হিসেবে একে ব্যবহার করা শুরু করেছে, তা নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছে ভারত।
যদিও এই সাক্ষাৎকে আলোচনার আদান-প্রদান হিসেবে দেখতে চাইছে না নয়া দিল্লি। বরং আজকের বৈঠকের মাধ্যমে তালিবানকে একপ্রকার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। তবে তালিবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল নেওয়ার পর প্রথমবার ভারতের কোনও প্রতিনিধি তালিবানের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন। ফলে আজকের বৈঠক যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থবহ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বৈঠকের পর বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, জঙ্গিরা যেভাবে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করছে তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ভারত। সূত্রের খবর, বৈঠকে তালিবানি নেতা আশ্বাস দিয়েছেন যে ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখা হবে। বিদেশ মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ পেয়েছে, “মূলত নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং আফগানিস্তানে আটকে থাকা ভারতীয়ের দ্রুত ফেরানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আফগানিস্তানের নাগরিক, বিশেষত সংখ্যালঘু (শিখ, হিন্দু) যারা ফিরে আসতে চান, তাঁদের প্রসঙ্গও উত্থাপিত হয়েছে বৈঠকে। ভারতের রাষ্ট্রদূত ভারতে দুশ্চিন্তার বিষয়টি তুলে ধরে বলেছেন, আফগানিস্তানের মাটি যেন ভারত-বিরোধী কোনও কার্যকলাপ বা সন্ত্রাসবাদের জন্য ব্যবহার না করা হয়।”
এর আগে আফগানিস্তানের ব্যবসায়িক মহলের সঙ্গেও একটি বৈঠক করেছিল ভারত। তবে তালিবানের সঙ্গে এর আগে কোনও বৈঠক নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে ঘোষিতভাবে করা হয়নি। ফলে এই বৈঠকই দুই দেশের মধ্যে পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে প্রথম কূটনৈতিক এবং সরকারি বৈঠক বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। এতদিন পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে ধীরে চলো নীতি আপন করে ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ পন্থা’ ধরে এগোন হচ্ছিল। তবে সোমবার মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কাজ শেষ হওয়ার পরই প্রথম কোনও পদক্ষেপ করা হল ভারতের পক্ষ থেকে। আরও পড়ুন: পঞ্জশীরেই শেষ তালিবানের জারিজুরি, পালটা হামলায় নিকেশ অন্তত ৮, আহতও অনেকে