পাকিস্তানে ভেঙে পুড়িয়ে দেওয়া হল হিন্দু মন্দির

কী কারণে এই হামলা?

পাকিস্তানে ভেঙে পুড়িয়ে দেওয়া হল হিন্দু মন্দির
Follow Us:
| Updated on: Dec 31, 2020 | 2:59 PM

অমৃতসর: ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হল হিন্দু মন্দির। দাউ দাউ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল ‘সভ্যতা’। বিশ্বের সামনে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর আরও এক বর্বরোচিত ঘটনার নমুনা তৈরি করল পাকিস্তান। খাইবার পাখতুনখায় (Khyber Pakhtunkhwa) হিন্দু মন্দির (Hindu Temple) ভাঙার ঘটনায় মুখ পুড়ল ইমরান খানের (Imran Khan) সরকারের। এখনও কোনও রকম বিবৃতি প্রকাশ না করলেও, খাইবার পাখতুনখার মুখ্যমন্ত্রী মাহমুদ খান এমন ‘অসভ্য আক্রমণ’কে স্রেফ ‘অপ্রত্যাশিত’ ঘটনা হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন। তাঁর কথায় ‘এই ঘটনা দুভার্গ্যজনক’।

খাইবার পাখতুনখায় হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর, আগুন

বুধবার জমিয়েত উলেমা-ই-ইসলাম-এর একটি জমায়েতের ঘণ্টাখানেকের পরই খাইবার পাখতুনখার করক জেলার টেররি গ্রামের হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটে। একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই জমায়েতে বক্তাদের আগুনে বক্তৃতার পরই উত্তেজিত জনতা মন্দিরে ঢুকে ভাঙচুর চালাতে শুরু করে এবং পরে সেখানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। যদিও এই ঘটনায় এখনও কোনও অভিযুক্তের গ্রেফতারির খবর সামনে আসেনি।

অভিযুক্ত কারা?

উলেমা-ই-ইসলামের নেতা আমির মৌলানা আতাউর রহমান এই ঘটনায় দলের যোগের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি মন্দির ভাঙার ঘটনার তীব্র নিন্দাও করেছেন। সূত্রের খবর, মন্দিরের একটি অংশ নতুন করে তৈরি হচ্ছিল। এতে মন্দিরের আয়তন আগের তুলনায় আরও একটু বড় হত। আর এতেই নারাজ ছিল উলেমা-ই-ইসলামের কর্মী সমর্থকরা। কোনও ভাবেই মন্দিরকে বাড়তে দেওয়া যাবে না! ভিতর ভিতর ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল-ই, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে বুধবার। নির্মীয়মান  অংশ তো ভেঙে দেওয়া হয়-ই এমনকি আক্রমণাত্মক জনতার হাত থেকে রক্ষা পাইনি মন্দিরের পুরনো অংশও।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ধর্ষণের সাজা রাসায়নিক লিঙ্গচ্ছেদ! কঠোর আইন আনতে চলেছেন ইমরান খান

‘অসামাজিকদের কার্যকলাপ’

পাকিস্তানের যুক্তরাষ্ট্রীয় সংসদীয় সচিব (মানবাধিকার) লাল চন্দ মলহি খাইবার পাখতুনখোয়ায় মন্দির ভাঙার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “এটা অসামাজিক কার্যকলাপ।” তাঁর কথায়, ‘নতুন পাকিস্তান’ (Naya Pakistan) গড়ার স্বপ্ন বোনা ইমরানের সরকার এই ধরনের ঘটনাকে প্রশ্রয় দেবে না এবং তা বরদাস্তও করা হবে না। লাল চন্দ ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। তবে এখনও কোনও অভিযুক্তের গ্রেফতারির কথা সংবাদমাধ্যমের কাছে এসে পৌছঁয়নি।

পাকিস্তানে হিন্দুদের জীবন বিপন্ন!

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে এই মুহূর্তে ৭৫ লক্ষ হিন্দু থাকেন। অন্তত সরকারি হিসেব তাই বলছে। তবে গোষ্ঠীগতভাবে হিসেব করলে সে দেশে অন্তত ৯০ লক্ষ হিন্দুদের বাস। এদের মধ্যে বেশিরভাগই থাকেন সিন্ধ প্রদেশে। সেখানে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান প্রদানের সৌহার্দ্য থাকলেও গোটা পাকিস্তানে যে ছবিটা একেবারেই উল্টো, খাইবার পাখতুনখোয়ার ঘটনা সে কথাই ফের প্রমাণ করল।