Saudi Arab: অতি-রক্ষণশীল মুসলিম দেশ সৌদিতে খুলছে প্রথম মদের দোকান

Saudi Arab: সৌদি আরবে মদ্যপানের বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে। বেত্রাঘাত, নির্বাসন, জরিমানা বা কারাদণ্ডের মতো কঠোর শাস্তি রয়েছে। এতদিন, সৌদি আরবে শুধুমাত্র কূটনীতিবিদরা বাইরে থেকে মদ আনাতে পারতেন। মদ বিক্রি হত কালোবাজারেও। কিন্তু, অর্থনীতির দায়, বড় দায়।

Saudi Arab: অতি-রক্ষণশীল মুসলিম দেশ সৌদিতে খুলছে প্রথম মদের দোকান
সৌদি আরবে প্রথম মদের দোকান খুলছেন মহম্মদ বিন সলমনImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Jan 24, 2024 | 8:08 PM

রিয়াধ: মদের দোকান খুলছে সৌদি আরবে! রাজধানী রিয়াদে দেশের প্রথম মদের দোকান খোলার জন্য তৈরি এই মুসলিম দেশ। তবে, এই দোকান খোলা হচ্ছে শুধুমাত্র অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর জন্য বিদেশি অমুসলিম কূটনীতিকদের এক মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নাম নিবন্ধন করতে হবে। সৌদি বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে। তবে, মাসে কতটা মদ তাঁরা কিতে পারবেন, তার একটা কোটা বাঁধা থাকবে। সেই কোটা অনুযায়ী তাদের মদ কিনতে হবে। সৌদি আরবের মতো অতি-রক্ষণশীল এই মুসলিম দেশে এটা এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক বলে মনে করা হচ্ছে।

আসলে, সৌদি আরবে মদ্যপানের বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে। বেত্রাঘাত, নির্বাসন, জরিমানা বা কারাদণ্ডের মতো কঠোর শাস্তি রয়েছে। শুধু দেশের মানুষই নন, বিদেশিদেরও এই সকল শাস্তির মুখে পড়তে হয়। তবে, মহম্মদ বিন সলমন সেই দেশের শাহজাদা হওয়ার পর থেকেই দেশে বিভিন্ন সংস্কার করে চলেছেন। দেশকে আধুনিক জগতের সঙ্গে মানানসই করে তোলার চেষ্টা করছেন। অ-ধর্মীয় পর্যটনের দেশের দরজা খুলে দিয়েছেন তিনি। জনসমক্ষে পুরুষ এবং মহিলাদের একসঙ্গে ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। মহিলাদের কনসার্টে যোগ দেওয়া এবং গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের আপাদ মস্তক ঢাকা কালো আবায়া পরার বাধ্যবাধকতাও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। একইভাবে, মদ্যপানের শাস্তি হিসেবে বেত্রাঘাতের বদলে জেলের সাজা জারি করা হয়েছে।

এই সকল সংস্কারের অংশ হিসেবেই দেশে প্রথম মদের দোকান খোলা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এতদিন, সৌদি আরবে শুধুমাত্র কূটনীতিবিদরা বাইরে থেকে মদ আনাতে পারতেন। মদ বিক্রি হত কালোবাজারেও। কিন্তু, অর্থনীতির দায়, বড় দায়। এখনও পর্যন্ত সৌদি আরবের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হল জ্বালানি তেল। সৌদির তেল দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। তার উপর পৃথিবী জুড়ে জৈব জ্বালানির ব্যবহারও কমছে। এর ফলে, তেল নির্ভরতা থেকে বের হতে চাইছেন মহম্মদ বিন সলমন। আর সেই কারণে ভিশন ২০৩০ নামে এক বড় পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি। রক্ষণশীল মুসলিম দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবের ভাবমূর্তি বদলে দিতে চাইছেন তিনি। তারই অংশ হিসেবে সেই দেশে এবার মদ বিক্রি শুরু করা হচ্ছে।

সূত্রের খবর, মদের দোকানটি রিয়াধের কূটনৈতিক কোয়ার্টারে খোলা হচ্ছে। এই এলাকায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাস রয়েছে। মূলত কূটনীতিকরাই থাকেন এই জায়গায়। তবে, এই দোকান থেকে শুধুমাত্র অমুসলিমরাই মদ কিনতে পারবেন। কূটনীতিকদের বাইরে, অন্যান্য অমুসলিম বিদেশিরা এই দোকান থেকে মদ কিনতে পারবেন কিনা, সেই বিষয়টি অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। লক্ষ লক্ষ বিদেশী সৌদি আরবে থাকেন। তবে তাঁদের অধিকাংশই এশিয়া ও মিশর থেকে আসা মুসলিম শ্রমিক। সূত্রের খবর, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই মদের দোকান খুলে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সৌদি সরকার এই নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, সেখানকার সরকারি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক চালানের মাধ্যমে যে মদ আসে, তা বেআইনিভাব বিনিময় করা হয়। কূটনৈতিক সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে আনা মদ, সৌদির বাসিন্দারাও মোটা অর্থ দিয়ে কিনে থাকেন। মদের এই অনুপযুক্ত বিনিময় প্রতিরোধের জন্য নতুন বিধান জারি করে মদ আমদানি রোধ করতে পারে সৌদি আরব। অ্যালকোহল আমদানিতে জারি করা এই নতুন বিধিনিষেধ, নতুন মদের দোকানে চাহিদা তৈরি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।