Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

T-Rex: শিকারে ধরতে কষ্ট, তবু যৌনতার প্রয়োজন! সামনের দুই হাত ছোট হয়ে গিয়েছিল ডাইনোসরের

T-Rex's tiny arms: টিরানোসরাস রেক্স বা টি-রেক্সদের সামনের হত ছোট হয় কেন, এই প্রশ্ন দীর্ঘদিন ধরে ভাবিয়েছে বিজ্ঞানীদের। এবার আর্জেন্টিনার গবেষকরা দাবি করলেন, টি-রেক্সের সামনের হাত দুটি ছোট হওয়ায় কারণ সম্ভবত যৌনতা।

T-Rex: শিকারে ধরতে কষ্ট, তবু যৌনতার প্রয়োজন! সামনের দুই হাত ছোট হয়ে গিয়েছিল ডাইনোসরের
দেহের সঙ্গে কেন এতটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ টি-রেক্সের সামনের দুই হাত? দীর্ঘদিন ভাবিয়েছে গবেষকদের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 09, 2022 | 9:20 AM

বুয়েন্স আয়ার্স: টিরানোসরাস রেক্স বা সংক্ষেপে টি-রেক্স। স্পিলবার্গের তৈরি জুরাসিক পার্ক সিরিজ যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের কারোর এই বিলুপ্ত সরীসৃপটিকে চিনতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। জুরাসিক যুগে পৃথিবী কাঁপানো ডাইনোসরদের মধ্যে তারা রাজা ছিল বলা চলে। মাংসাসী, ভয়ঙ্কর হিংস্র এই প্রাণীগুলির সামনের দুই হাত (কিংবা পা) কেন ছোট আকারের হত, এটা বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের প্রশ্ন। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত টি-রেক্সের কঙ্কালের এমন কোনও জীবাশ্ম মেলেনি, যাতে সিদ্ধান্তমূলক গবেষণা করা যেতে পারে। তবে, টি-রেক্সে না পাওয়া গেলেও, দক্ষিণ আমেরিকায় একটি অন্য প্রজাতির দৈত্যাকার শিকারী ডাইনোসরের কঙ্কালের জীবাশ্ম আবিষ্কার করা গিয়েছে। সেই জীবাশ্ম থেকেই টি-রেক্স সম্পর্কেও বহু তথ্য জানা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, টি-রেক্সের সামনের হাত দুটি ছোট হওয়ায় কারণ সম্ভবত যৌনতা বিষয়ক প্রয়োজনে।

প্রায় ৯ কোটি বছর আগে আর্জেন্টিনার উত্তরে প্যাটাগোনিয়া অঞ্চলে বাস করত মেরাক্সেস গিগাস নামে টি-রেক্স সদৃশ এক শিকারী ডাইনোসর প্রজাতি। এই প্রজাতিরই এক সদস্যের কঙ্কালের জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন আর্জেন্টিনার নিউকুয়েনের আর্নেস্টো বাকম্যান প্যালিওন্টোলজিক্যাল মিউজিয়ামের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, মৃত্যুর সময় ওই মেরাক্সেস গিগাসটির বয়স ছিল প্রায় ৪৫ বছর। লম্বায় ছিল ৩৬ ফুট এবং ওজন ৪ টন। তার হাড়ের জীবাশ্মগুলি এখনও পর্যন্ত পাওয়া ডাইনোসরের হাড়ের জীবাশ্মগুলির মধ্যে সেরা অবস্থায় ছিল বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মাথার খুলিটি ছিল উঁচু-নিচু এবং ছোট ছোট শিং ছিল।

মেরাক্সেস গিগাসের মাথা যত বড় হত, তাদের হাত ততটাই ছোট হত। টি-রেক্সের ক্ষেত্রেও তাই ছিল। ফলে নতুন প্রজাতিটির জীবাশ্ম থেকে, টি-রেক্সের সামনের হাতজোড়া অস্বাভাবিক ছোট মাপের হওয়ার কারণ সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা গিয়েছে। উত্তর মিলেছে কয়েক দশকের রহস্যের। আর্জেন্টিনার নিউকুয়েনের আর্নেস্টো বাকম্যান প্যালিওন্টোলজিক্যাল মিউজিয়ামের প্রজেক্ট লিডার ড. জুয়ান ক্যানেল বলেছেন, ‘সামনের ছোট মাপের হাতগুলি শিকারের জন্য একেবারেই কার্যকর নয়। শিকার তারা ধরত মুখ ব্যবহার করে। ফলে ওই হাত তারা প্রজননের সময় বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকতে পারে। সম্ভবত, সঙ্গমের সময় মহিলাদের ধরে রাখা বা একটু সঙ্গমের মধ্যে বিরতি নিলে কিংবা পড়ে গেলে, ফের উঠে দাঁড়ানোর সময় ভারসাম্য রক্ষা করার ক্ষেত্রে ছোট হাতগুলি তাদের কজে আসত।’

ডক্টর ক্যানেল আরও জানিয়েছেন, বিবর্তন অনুসারে টি-রেক্স এবং মেরাক্সেস পরস্পরের থেকে অনেক দূরে রয়েছে। তাদের মধ্যে সরাসরি কোনও সম্পর্কই নেই। তবু ছোট হাত থাকাটা দুই প্রজাতিকেই বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা দিয়েছিল। তিনি বলেছেন ‘আমি নিশ্চিত যে আনুপাতিকভাবে ক্ষুদ্র হাতগুলির কিছু নির্দিষ্ট ধরণের কাজ ছিল। মেরাক্স প্রজাতির কঙ্কালটির ক্ষুদ্র হাতগুলি পেশী সন্নিবেশ এবং তাতে সম্পূর্ণরূপে বিকশিত পেক্টোরাল গার্ডেল রয়েছে। কাজেই হাতগুলি বেশ শক্তিশালী ছিল। অর্থাৎ, হাতগুলি সঙ্কুচিত হয়ে যায়নি। হাতগুলি অকেজো হলে তা হত। প্রশ্ন হল ঠিক কী কাজ ছিল? আমার মতে যৌনতা এবং ভারসাম্য রক্ষা। মেরাক্সদের মাথায় যে উঁচুনিচু অলঙ্করণ ছিল, শিং ছিল তাও সম্ভবত সঙ্গীদের আকর্ষণ করার জন্যই।’ তবে, ডাইনোসরদের আচরণ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করার উপায় নেই বলে, তাঁদের অনুমান সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া অসম্ভব।