Salman Rushdie: কালো জামা, মুখে কালো মাস্ক…রুশদির উপরে হামলাকারীর সম্পর্কে জানতে ঘোল খাচ্ছে FBI-ও
Salman Rushdie: নিউইয়র্কের ওই ইনস্টিটিউশনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলেও তল্লাশি চালিয়েছে এফবিআই ও স্টেট শেরিফ ডিপার্টমেন্ট। একাধিক জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক: মঞ্চে উঠে সবে পরিচয়পর্ব শুরু করেছিলেন, সেই সময়ই সামনের ভিড় থেকে এক ছুটে মঞ্চে উঠে পড়েছিলেন তিনি। বাকি দর্শকেরা ভেবেছিলেন কোনও ভক্ত বা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কেউ হবেন হয়তো। কিন্তু সেই ভুল ধারণা ভাঙিয়ে দিয়েছিলেন এক নিমেষেই। দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে কোপাতে শুরু করেছিলেন বুকারজয়ী সাহিত্যিক সলমন রুশদিকে। মাত্র ২০ সেকেন্ডের মধ্যেই কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ বার ছুরি দিয়ে আঘাত করেন লেখককে। এরপরই তাঁকে ধরে ফেলে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা। তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। নিউইয়র্ক পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিখ্যাত লেখক সলমন রুশদির উপরে হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম হাদি মাতার। মাত্র ২৪ বছর বয়স তাঁর। নিউ জার্সির ফেয়ারভিউয়ের বাসিন্দা হাদির কাছ থেকে সলমন রুশদির গতকালের অনুষ্ঠানের টিকিট উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার নিউইয়র্কের শতকা ইনস্টিটিউশনের অনুষ্ঠানে আচমকাই সলমন রুশদির উপরে হামলায় স্তম্ভিত সকলেই। কীভাবে কী হয়ে গেল, তা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই। তবে হামলাকারী সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার হওয়ায় কিছুটা শান্তি পেয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। জানা গিয়েছে, হাদি মাতার নামক ওই যুবক নিউজার্সি থেকে নিউইয়র্কে এসেছিল। তবে কেবল রুশদির উপরে হামলা চালানোর উদ্দেশ্য নিয়েই সে এসেছিল কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। অভিযুক্তের কাছ থেকে রুশদির অনুষ্ঠানের টিকিটের পাশাপাশি একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স উদ্ধার হয়েছে। যদিও ওই লাইসেন্সটি নকল বলেই মনে করা হচ্ছে। এফবিআইয়ের তরফে হাদি সম্পর্কে কোনও তথ্যই জানানো না হলেও, সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকালেই হাজির বাড়িতে উপস্থিত হয় এফবিআই। সেখানে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানো হয়, পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
এদিকে, নিউইয়র্কের ওই ইনস্টিটিউশনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলেও তল্লাশি চালিয়েছে এফবিআই ও স্টেট শেরিফ ডিপার্টমেন্ট। একাধিক জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে একটি ব্যাকপ্যাক পড়ে ছিল। মনে করা হচ্ছে, ওই ব্য়াগটি অভিযুক্ত হাদিরই। বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক সামগ্রীও উদ্ধার করা হয়েছে। যাবতীয় সামগ্রী খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, হাদির ফোন থেকে ইরানের কম্য়ান্ডার কাশেম সেলেমানি, যাকে ২০২০ সালে হত্য়া করা হয়েছিল তাঁর একটি ছবিও পাওয়া গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে এখনও অবধি হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে সূত্রের খবর, হাদি ইরান সরকারের সমর্থক। পরিচিতদের দাবি, শিয়া চরমপন্থীদেরও সমর্থক ছিল হাদি। অভিযুক্তের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টেও তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। ১৯৮৮ সালে সলমন রুশদির লেখা উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-র জন্যই মৌলবাদীদের বিষনজরে পড়েছিলেন তিনি। তাঁর নামে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইরানের তৎকালীন শীর্ষ নেতা আয়াতোল্লা রুহোল্লা খোমেইনি। প্রাণ বাঁচাতে এরপরে কয়েক দশক রীতিমতো গা ঢাকা দিয়েই থাকতে হয়েছিল রুশদিকে। ইরান বা কোনও মৌলবাদী সংগঠনের সঙ্গে হাদির যোগাযোগ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে আপাতত অভিযুক্ত নিজেই হামলা চালিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।