Biggest Bank Fraud: দেশের এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক প্রতারণা, ২৮টি ব্যাঙ্কের ২২৮৪২ কোটি উধাও

Biggest Bank Fraud: দুর্বল প্রদর্শনের কারমে ৩০ নভেম্বর ২০১৩য় এই কোম্পানির অ্যাকাউন্ট এনপিএ হয়ে যায়। তারপর এই কোম্পানির কাজকর্মকে আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় আনার প্রচেষ্টা করা হয়। কিন্তু তা সফল হয়নি।

Biggest Bank Fraud: দেশের এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক প্রতারণা, ২৮টি ব্যাঙ্কের ২২৮৪২ কোটি উধাও
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 14, 2022 | 4:21 PM

নয়া দিল্লি: গত সপ্তাহেই দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক প্রতারণার (Bank Fraud) ঘটনা সামনে এসেছে।গুজরাটের এবিজি শিপইয়ার্ড (ABG Shipyard) মোট ২৮টি ব্যাঙ্কের সঙ্গে ২২৮৪২ কোটি টাকার প্রতারণা করেছে।এই প্রতারণা নিয়ে সমস্ত ধরণের আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই রবিবার স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার তরফে বলা হয়েছে যে ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার ক্ষেত্রে কোনোরকম সমঝোতা করা হয়নি। সিবিআই সম্প্রতিই ওই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ঋষি কমলেশ আগরওয়াল সহ বেশকিছু লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। প্রসঙ্গত, প্রতারিত হওয়া এই ২৮টি ব্যাঙ্কের কন্সোর্টিয়ামের নেতৃত্বে ছিল আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। নেতৃত্বের দ্বিতীয় স্থানে ছিল আইডিবিআই ব্যাঙ্ক। কিন্তু অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এসবিআই-এর তরফে। এসবিআই গত ২০১৯ এর নভেম্বর মাসে প্রথমবার এই কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল।

১৯৮৫ সালের ১৫ মার্চ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল এবিজি শিপইয়ার্ডের। স্টেট ব্যাঙ্কের তরফে প্রকাশিত বয়ান অনুযায়ী, ২০০১ সাল থেকে এই কোম্পানি ব্যাঙ্কিং অ্যারেঞ্জমেন্টের অন্তর্গত ছিল। দুর্বল প্রদর্শনের কারমে ৩০ নভেম্বর ২০১৩য় এই কোম্পানির অ্যাকাউন্ট এনপিএ হয়ে যায়। তারপর এই কোম্পানির কাজকর্মকে আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় আনার প্রচেষ্টা করা হয়। কিন্তু তা সফল হয়নি। মার্চ ২০১৪য় ব্যাঙ্কগুলির কন্সোর্টিয়ামের তরফে অ্যাকাউন্ট রিস্ট্রাকচার করা হয়। সেই সময় শিপি শিল্প খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। এটাই কারণ যে সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এই কোম্পানির কাজকর্মকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়নি। জুলাই ২০১৬য় এবিজি শিপইয়ার্ডের অ্যাকাউন্টকে ব্যাকডেটে (নভেম্বর ২০১৩) এনপিএ ঘোষিত করে দেওয়া হয়।

২০১৮য় স্টেট ব্যাঙ্ক প্রথমবার অভিযোগ করে

এই প্রতারণা সামনে আসার পর কংগ্রেস মোদি সরকারের উপর আক্রমণ শুরু করে। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন যে স্টেট ব্যাঙ্ক নভেম্বর ২০১৮য় সিবিআইয়ের কাছে এই অভিযোগ জানিয়েছিল যে এবিজি শিপইয়ার্ডের তরফে বড়মাত্রায় প্রতারণা করা হচ্ছে।এই অবস্থায় ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অ্যাকশন নেওয়া হোক। অভিযোগ দায়ের হওয়া সত্ত্বেও সিবিআই অ্যাকশন নেয়নি আর সেই ফাইলটি আবারও এসবিআইয়ের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়াহয়। কংগ্রেস ২০১৮র ফেব্রুয়ারি মাসেই এই মামলাটি তুলেছিল সংসদে, কিন্তু সরকার সেদিকে মনোযোগ দেয়নি।

কন্সোর্টিয়ামের নেতৃত্বে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক কিন্তু অভিযোগ এসবিআইয়ের তরফে কেন?

সুরজেওয়ালা এই প্রতারণা নিয়ে টাইমলাইন সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা বলেছেন। নভেম্বর ২০১৩য় এবিজি শিপওয়ার্ডের অ্যাকাউন্টকে এনপিএ ঘোষিত করা হয়েছিল। তারপর কোম্পানির কাজকর্মের উন্নতি ঘটাতে সমস্ত প্রচেষ্টা করা হয়, কিন্তু তা স্বাভাবিক হয়নি। এই কন্সোর্টিয়ামের নেতৃত্ব ছিল আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের কাছে, দ্বিতীয় নেতৃত্বে ছিল আইডিবিআই ব্যাঙ্ক, কিন্তু অভিযোগ দায়ের করার জন্য স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে নির্বাচিত করা হয়। স্টেট ব্যাঙ্ক ২০১৯ এর নভেম্বররে প্রথবার অভিযোগ করেছিল কিন্তু সিবিআই তাতে মনোযোগ দেয়নি। দ্বিতীয় অভিযোগ ২০২০র ডিসেম্বর মাসে করা হয়, যার পর এই কোম্পানির বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হয়।

লিকুইডিশন ধাপে রয়েছে এখন এবিজির অ্যাকাউন্ট

এবিজি শিপইয়ার্ডের অ্যাকাউন্ট এখন NCLT প্রক্রিয়ার অধীনে লিকুইডিশন ধাপে রয়েছে। ফরেন্সিক রিপোর্টে পরিস্কার জানানো গয়েছিল যে ২০১২ থেকে ২০১৭র মধ্যে কোম্পানির তরফে আলাদা আলাদা উপায়ে ব্যাঙ্ক লুঠ করার কাজ করা হয়েছিল। ফান্ড ডাইভার্জন করা হয়েছে। কোম্পানি ব্যাঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছে আর অপরাধমূলক বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।

কোম্পানির সম্পত্তি বেচে এসেছে মাত্র ১৪৮০ কোটি টাকা

প্রসঙ্গত রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ২০১৭য় ১২টি অ্যাকাউন্টকে ইন্সাল্ভেনসি প্রোসেসের জন্য মনোনীত করেছিল। এবিজি শিপইয়ার্ড এই বারোটি কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি। তবে, এই কোম্পানিকে কেনার জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি, যে কারণে ব্যাঙ্কের বেশিরভাগ টাকা ডুবে যায়। ডিসেম্বর ২০২০-তে ইকোনমিক টাইমসের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, লিকুইডিশন নিয়ে চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা করা হয়, কিন্তু ক্রেতা না পাওয়ার কারণে ব্যাঙ্কের অর্থ রিকভার হয়নি। পরে লিকুইডিটর কোম্পানির সম্পত্তিকে বেসরকারিভাবে বেচার অনুমতি দেয়। বেসরকারিভাবে এই কোম্পানির সম্পত্তির গড় ভ্যালু বের করা হয় ১৪৮০ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন:Petrol Prices Today: ১০০ ডলারের দোড়গোড়ায় অপরিশোধিত তেল, সমস্যায় ভারত-পাক