Budget Expectation: নিয়োগে আসুক স্বচ্ছতা, চাই শিক্ষা ঋণে ছাড়, পড়ুয়াদের আশা কি পূরণ হবে বাজেটে?
Budget 2024: তন্নিষ্ঠা ও তার মতো লক্ষ লক্ষ যুব-যুবতী বাজেটে সরকারের কাছ থেকে ভাল ভবিষ্যতের গ্যারান্টি চায়। তরুণরা হতাশ, কারণ ভারতের স্টার্টআপ বিপ্লবের গতি দ্রুত কমে গিয়েছে। যখন চাকরি নেই, তখন কে ভর্তি করবে ব্যয়বহুল কলেজে?
কলকাতা: ঘনঘন মোবাইল ফোন চেক করে তন্নিষ্ঠা। কোনও জব কনসালটেন্সি সংস্থা থেকে ফোন আসেনি এখনও। তাঁর ইমেইলও দিনে অনেকবার চেক করে। একটাই আশা, যদি কোনও কোম্পানি থেকে চাকরির অফার আসে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, হতাশার মধ্যে দিয়ে কেটে যাচ্ছে একের পর একটা দিন। হতাশার পাশাপাশি বাড়ছে দুশ্চিন্তাও। এই দুশ্চিন্তা হল শিক্ষা ঋণ বা এডুকেশন লোন নিয়ে। তন্নিষ্ঠাকে একটি প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি করাতে তাঁর বাবা 8 লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। আশা ছিল, মেয়ে চাকরি পেলে ঋণ মিটিয়ে দেবে। বেঙ্গালুরু থেকে আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল তন্নিষ্ঠা। তবে আজকাল তন্নিষ্ঠার মুখে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে তাঁর স্বপ্নভঙ্গের বেদনা।
তন্নিষ্ঠা গত বছর বি-টেক পাশ করেছে। এখনও চাকরি পায়নি। যখন সে কলেজে ভর্তি হয়েছিল, তখন অনেক স্টার্টআপ কোম্পানি ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ নিতে আসত। তাঁর অনেক সিনিয়র বিশাল প্যাকেজের চাকরিও পেয়েছিল। কিন্তু তন্নিষ্ঠার ফাইনাল ইয়ারে কোনও কোম্পানি কলেজে নিয়োগ করতে আসেনি।
আসলে তন্নিষ্ঠার গল্প দেশের লক্ষ লক্ষ যুবকের মতো। আইটি সংস্থাগুলি বিগত দুই দশক ধরে যুবক-যুবতীদের প্রচুর চাকরি দিয়ে আসছে। কিন্তু করোনাকালের পর থেকে তারা নিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে। দেশ ও বিদেশের অনেক বড় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলি গত বছর থেকে নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। একই অবস্থা খুচরো ও ই-কমার্স শিল্পের।
আর্থিক মন্দার কারণে কোম্পানিগুলি ইতিমধ্যেই ফ্রেশার বা নবাগতদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল। তার উপরে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কর্মসংস্থানের সমস্যা বাড়িয়েছে। গত বছরই নবাগতদের নিয়োগ ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছিল। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে কোম্পানিগুলি ২০ শতাংশ কম নবাগত নিয়োগ করেছে। এমনকী, চাকরি পেলেও, তা কতদিন থাকবে, তার গ্যারান্টি নেই। বর্তমানে স্থায়ী চাকরিও কমছে। সাম্প্রতিক ইপিএফও (EPFO)-র তথ্য অনুসারে, ভারতে সংগঠিত সেক্টরের কর্মসংস্থান ৩০ মাসের সর্বনিম্ন অবস্থায় রয়েছে।
তন্নিষ্ঠা ও তার মতো লক্ষ লক্ষ যুব-যুবতী বাজেটে সরকারের কাছ থেকে ভাল ভবিষ্যতের গ্যারান্টি চায়। তরুণরা হতাশ, কারণ ভারতের স্টার্টআপ বিপ্লবের গতি দ্রুত কমে গিয়েছে। যখন চাকরি নেই, তখন কে ভর্তি করবে ব্যয়বহুল কলেজে?
দেশে যেভাবে কর্মসংস্থান কমছে, তা দেখে শিক্ষা ঋণে ছাড়ের জন্য সরকারের কাছে গ্যারান্টি চায় তন্নিষ্ঠা। শিক্ষাক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চায় তন্নিষ্ঠা। শুধুমাত্র মা-বাবা অর্থের ব্যবস্থা করতে পারেন না বলে হাজার হাজার মেধাবী যুবক-যুবতীর স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। এতেই পরিবর্তন চায় তন্নিষ্ঠা ও তার মতো অনেকে।
সরকারের কাছ থেকে আরও প্রত্যাশা রয়েছে তন্নিষ্ঠার। চাকরি বা নিয়োগে জালিয়াতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সরকারের কাছে গ্যারান্টি চান। সরকারের উচিত এমন ব্যবস্থা করা যাতে পরীক্ষা থেকে শুরু করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পর্যন্ত সবকিছু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা যায়।
এবারের নির্বাচনী বাজেটে কি তন্নিষ্ঠার মতো শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের আশা পূরণ হবে?