RBI: রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতির বৈঠক শুরু, লোনের EMI কি কমবে?

Inflation Rate: ভারতের মূদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, খুচরো মূদ্রাস্ফীতি টানা দুই মাস ধরে ৫ শতাংশের নীচে দেখা গিয়েছে। মার্চ মাসে খুচরো মূদ্রাস্ফীতি ছিল ৪.৮৫ শতাংশ। এরপর এপ্রিলে খুচরো মূদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান নামে ৪.৮৩ শতাংশে। এপ্রিল মাসে দেশে খুচরো মূদ্রাস্ফীতি ছিল ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

RBI: রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতির বৈঠক শুরু, লোনের EMI কি কমবে?
প্রতীকী ছবি।
Follow Us:
| Updated on: Jun 05, 2024 | 6:34 PM

নয়া দিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরিয়েছে। এবারে কোনও একটি দল নয়, এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। আবার জোট সরকার গঠন হওয়ার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকেই। আঞ্চলিক দলগুলিকে কাছে টেনে সরকার গড়ার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ইন্ডিয়া জোটও। একদিকে, সরকার গঠন নিয়ে যেমন দেশজুড়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে, তেমনই আরেকটি প্রশ্নও ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। সেটা হল, ঋণের EMI কমানোর বিষয়ে।

বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতির বৈঠক। রেপো রেট অর্থাৎ লোনের ইএমআই কমবে নাকি প্রায় দেড় বছর ধরে সুদের হার যেমন ছিল, তেমনই রাখা হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে এই বৈঠকে।

আরবিআই এবার রেপো রেট কমাবে বলেই আশাবাদী সাধারণ মানুষ। রেপো রেট কমলে আমজনতা বর্ধিত ঋণ ইএমআই থেকে স্বস্তি পেতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে, মে মাসে মূদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান কম ছিল। অন্যদিকে, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদের হার কমানোর ঘোষণা করেছে। ফলে আরবিআই এবার সুদের হারও কমাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে RBI ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রেপো রেট পরিবর্তন করেছিল। সেবার আরবিআই রেপো রেট ০.২৫ শতাংশ বাড়িয়েছিল। এরপর রেপো রেট ৬.৫০ শতাংশ হয়ে যায়। এর আগে ২০২২ সালের মে থেকে ক্রমাগত রেপো রেট ২.৫০ শতাংশ বাড়িয়েছিল আরবিআই। তবে ২০২৩-এর ফেব্রুয়ারি থেকে আরবিআই রেপো রেটে আর কোনও পরিবর্তন করেনি। ফলে এবার সুদের হার কমবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদের হার কমাবে

তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার সুদের হার ০.২৫ শতাংশ কমাতে চলেছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। বিশেষ বিষয় হল, ইসিবি-র এই কাটছাট প্রায় ৮ বছর পর হতে চলেছে। সুদের হার কমলে ইসিবি পলিসি রেট ৪.২৫ শতাংশে নেমে আসবে। বিদেশী গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরে ইসিবি সুদের হার ০.৬০ শতাংশ কমাতে পারে। যার প্রভাব বিশ্বের অন্যান্য দেশেও দেখা যায়। কয়েক মাস পর ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কও সুদের হার কমানোর কথা ভাবতে পারে।

মার্কিন ফেডারেল ব্যাঙ্ক বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে

অন্যদিকে, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্কও সুদের হার কমানোর পরিকল্পনা করছে। জুলাইয়ের বৈঠকে এই সুদের হার কমাতে পারে বলে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলে গত কয়েক মাস ধরেই ইঙ্গিত মিলছে। মনে করা হচ্ছে, সুদের হার ০.২৫ শতাংশ কমতে পারে। প্রথমবার জুলাইয়ের প্রথমার্ধে এবং দ্বিতীয়বার অক্টোবর বা নভেম্বরে সুদের হার কমতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মুদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান আপাতত স্থিতিশীল বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু ফেড যে পরিসংখ্যানে পৌঁছতে চায়, সেখানে এখনও পৌঁছতে পারেনি। তাই জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায়।

ভারতে মুদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান

ভারতের মূদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, খুচরো মূদ্রাস্ফীতি টানা দুই মাস ধরে ৫ শতাংশের নীচে দেখা গিয়েছে। মার্চ মাসে খুচরো মূদ্রাস্ফীতি ছিল ৪.৮৫ শতাংশ। এরপর এপ্রিলে খুচরো মূদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান নামে ৪.৮৩ শতাংশে। এপ্রিল মাসে দেশে খুচরো মূদ্রাস্ফীতি ছিল ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। একই সময়ে, দেশে খুচরো মূদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান গত ৮ মাসে ৬ শতাংশের নীচে দেখা গিয়েছে। জুন মাসে মূদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান কম হতে পারে। এটা ৪.৫০ শতাংশে আসতে পারে। RBI-এর অনুমান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মুদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান ৪.৫ শতাংশে থাকতে পারে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ৫.৪ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ সালে ৬.৭ শতাংশে দেখা গিয়েছে।

ঋণের EMI কি কমবে?

নতুন সরকার গঠনের সময় সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, RBI এই সপ্তাহে পলিসি রেট কমানোর ঘোষণা দেবে কিনা। এটা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। যদি বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস করা হয়, আরবিআইয়ের এমপিসি প্যানেল টানা অষ্টমবার সুদের হারে কোনও পরিবর্তন করবে না।

IDFC ফার্স্ট ব্যাঙ্কের চিফ ইকোনমিস্ট গৌর সেন গুপ্তার মতে, আপাতত আরবিআই সুদের হার স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মুদ্রাস্ফীতির মাত্রা ৪ শতাংশের নীচে না নামা পর্যন্ত সুদের হারে কোনও হেরফের হওয়ার আশা নেই।