Bank Locker: ব্যাঙ্কের লকার ‘সম্পূর্ণ নিরাপদ’ নয়, কী করবেন?

Bank Locker: ব্যাঙ্কের লকারে রাখা জিনিসপত্র সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। নিয়মিত সময় অন্তর লকার অপারেট করুন। লকারের ভিতরে যে গয়নাগুলো রেখেছেন তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিজের কাছে রাখুন।

Bank Locker: ব্যাঙ্কের লকার 'সম্পূর্ণ নিরাপদ' নয়, কী করবেন?
ফাইল ফোটো
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 24, 2022 | 11:07 PM

গয়নার মতো দামি জিনিস নিরাপদে রাখার জন্য অনেকেই সেগুলিকে ব্যাঙ্ক লকারে রাখেন। কিন্তু এখন ব্যাঙ্ক লকারে চুরির ঘটনা বাড়ছে। এ বছর পয়লা অগস্ট এমন একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক SBI-কে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহককে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ঘটনাটি ঝাড়খণ্ডের বোকারোর একটি শাখার। গোপাল প্রসাদের লকারে রাখা অলংকারগুলি হারিয়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্কের সঙ্গে এই আইনি লড়াইয়ে জিততে গোপাল প্রসাদের পাঁচ বছর সময় লাগে।

ব্যাঙ্কের লকার থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। মাঝেমধ্যে ব্যাঙ্কের লকার থেকে জিনিসপত্র চুরি হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ব্যাঙ্কগুলি এর দায় নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলে দেয়।

গোপাল প্রসাদের ক্ষেত্রেও এমন ঘটেছিল। তাঁকে বলা হয় লকারে রাখা জিনিসগুলি চুরি যাওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক দায়ি নয়। এমনকী ব্যাঙ্ক এও জানে না লকারের ভেতরে কী রাখা আছে। স্বাভাবিকভাবে ব্যাঙ্ক যখন দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে তখন গ্রাহকের পক্ষে পুলিশ এবং আরবিআই-এর দ্বারস্থ যাওয়া ছাড়া বিশেষ কোনও উপায় থাকে না।

লকারের ভিতরে রাখা জিনিসের ক্ষতি বা চুরির ঘটনায় ব্যাঙ্কগুলি এখন আর তাদের দায় এড়াতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর নতুন নিয়ম জারি করেছে আরবিআই। এই নিয়ম ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে।

এই নিয়ম অনুসারে অগ্নিকাণ্ড, চুরি, অফিস বাড়ি ভেঙে পড়া বা কর্মচারীর জালিয়াতির ফলে লকারে রাখা কোনও জিনিসের ক্ষতি হলে ব্যাঙ্ককে লকারের বার্ষিক ভাড়ার ১০০ গুণ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ গ্রাহককে দিতে হবে। নতুন নির্দেশাবলী বর্তমান লকার এবং ব্যাঙ্কে রাখা পণ্যের নিরাপদ হেফাজত উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

তা সত্ত্বেও লকার থেকে জিনিস চুরির ঘটনার দায় নিতে প্রস্তুত নয় ব্যাঙ্কগুলি। ব্যয়বহুল বিচার প্রক্রিয়ার কারণে কনজিউমার ফোরাম কিংবা সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াই করার ক্ষমতা সবার নেই।

আরবিআই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে প্রতিটি ব্যাঙ্কের উচিত তাদের লকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তা সত্ত্বেও এখনও লকার থেকে জিনিস গায়েব হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

প্রাক্তন ব্যাঙ্ক অফিসার এস কে বনসালের মতে, ব্যাঙ্ক লকারের স্ট্রং রুমটি আরবিআই-এর নির্দেশিকা অনুসারে তৈরি করা হয়েছে। এতে রাখা লকারগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।

কোনও জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে তার মানে এই নয় যে সেখানে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিতে হবে। লকার চুরির কয়েকটি ঘটনার পর ব্যাঙ্ক লকারগুলি নিরাপদ নয় এমনটা ভাবা উচিত নয়।

সুরেশ বনসাল এও বলেন যে, ব্যাঙ্কগুলি আরবিআই-এর নতুন নির্দেশিকা সম্পর্কে সচেতন হবে। স্ট্রংরুমের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে।

আজকাল ব্যাঙ্ক প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্য বিমা প্রদান করে। কিন্তু লকার কভার করা হয় না। প্রাক্তন ব্যাঙ্কার বনসালের বলেন, ব্যাঙ্ক লকারের মালিক নয়। লকারে রাখা মূল্যবান জিনিসপত্র সম্পর্কে ব্যাঙ্কের কোনও ধারণা নেই। আর বিমার সুবিধা একটি নির্দিষ্ট অর্থের উপরে পাওয়া যায়। এই কারণেই ব্যাঙ্কগুলি স্ট্রংরুমে রাখা লকারগুলির বিমা করতে পারে না।

ব্যাঙ্কের লকারে রাখা জিনিসপত্র সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। নিয়মিত সময় অন্তর লকার অপারেট করুন। লকারের ভিতরে যে গয়নাগুলো রেখেছেন তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিজের কাছে রাখুন। নতুন গয়না কিনলে তার বিল নিজের কাছে রাখুন।

পুরানো গয়না থাকলে ব্যাঙ্কের লকারে রাখার আগে কোনও জুয়েলারি দোকান থেকে সেগুলির ভ্যালুয়েশন করিয়ে নিন। ভ্যালুয়েশনের রসিদ নিজের কাছে রাখলে যদি লকারে কোনও ক্ষতি হয় তবে এই নথিগুলি ক্লেমের টাকা পেতে সহায়তা করবে।