Foxcon: কেন বেদান্তর যৌথ উদ্যোগ থেকে সরল ফক্সকন? ভারতের সেমিকন্ডাক্টর ভবিষ্যতে কি তাদের আস্থা নেই?
Foxconn and Vedanta part ways: সেমিকন্ডাক্টর আমদানীকারী থেকে উৎপাদনকারী দেশ হতে চাইছে ভারত। তবে, বেদান্তর সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের যৌথ উদ্যোগের প্রকল্প থেকে ফক্সকন সরে আসায় এই পরিকল্পনা বড় ধাক্কা খেয়েছে।
নয়া দিল্লি: সেমিকন্ডাক্টর আমদানীকারী থেকে উৎপাদনকারী দেশ হতে চাইছে ভারত। সোমবার (১১ জুলাই), ভারতের এই পরিকল্পনা বড় ধাক্কা খেয়েছে। ভারতীয় সংস্থা বেদান্তর সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের যৌথ উদ্যোগের প্রকল্প থেকে সরে এসেছে ফক্সকন। বেদান্তর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ থেকে তাইওয়ানের এই সংস্থা সরে আসায়, সেমিকন্টাক্টর শিল্প ক্ষেত্রে ভারতের উচ্চাকাঙ্খার বিষয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তাহলে কি সেমিকন্টাক্টর শিল্পে ভারতের ভবিষ্যতের বিষয়ে আস্থা নেই ফক্সকনের? কেন বেদান্তর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল এই বিশ্বখ্যাত ইলেকট্রনিক সংস্থার? বেদান্তর সঙ্গে এই যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে কী বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে ফক্সকনকে? একদিন পরই এই সকল প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দিয়েছে এই তাইওয়ানিজ সংস্থা।
ফক্সকন সংস্থা জানিয়েছে, সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে ভারতের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা যথেষ্ট আশাবাদী। ভারত সাফল্যের সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর উত্পাদন শিল্পের একটি বাস্তুতন্ত্র তৈরি করেছে। কিন্তু, সেই শিল্পের প্রসারে অনেকটাই সময় লাগবে। ২০০৬ সালে ভারতে পা রেখেছিল সংস্থাটি এবং এখনও এই দেশে তারা থাকবে বলেই জানানো হয়েছে। ভারতে সদ্য সেমিকন্টাক্টর শিল্পের উন্মেষ ঘটেছে। এই শিল্পের বৃদ্ধি সমান্তরালে এগিয়ে চলতে উন্মুখ বলে জানিয়েছে ফক্সকন। শুধু তাই নয়, গোটা ভারতেই সরকারি সমস্ত পক্ষের সঙ্গে ফক্সকনের ভাল যোগাযোগ রয়েছে। ভারতে বিনিয়োগের বিষয়ে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কাজেই এই দেশে তাদের লগ্নি অব্যাহত থাকবে। তারা আরও জানিয়েছে, নতুন ক্ষেত্রে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করাটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ফক্সকন ভারতে বিনিয়োগ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রচারকেও তারা সমর্থন করে বলে জানিয়েছে ফক্সকন।
তাহলে কেন, বেদান্তর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হল ফক্সকনের? ফক্সকন সংস্থা জানিয়েছে, সংবাদমাধ্যমে বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখানো হচ্ছে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এর মধ্যে নেতিবাচক কোনও বিষয় নেই। যৌথ প্রকল্পটি প্রত্যাশিত গতিতে এগোচ্ছে না, এই বিষয়ে দুই পক্ষই সম্মত ছিল। আসলে, এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জগুলি ছিল, সেগুলো মসৃণভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়নি। সেই সঙ্গে বেশ কিছু বাহ্যিক সমস্যাও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রকল্পের সঙ্গে সেগুলির সম্পর্ক না থাকলেও এই সকল কারণেই ফক্সকন এবং বেদান্ত – দুই পক্ষই এই বিচ্ছেদের বিষয়ে সম্মত হয়েছিল। সংস্থা আরও জানিয়েছে, স্টেকহোল্ডারদের উপর স্বল্প-মেয়াদী প্রভাব, কর্পোরেট স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং শেয়ারহোল্ডারদের সমস্ত দিক বিবেচনা করেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয় ফক্সকন।
তাহলে কি, বেদান্তর সঙ্গে এই যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে ক্ষতির মুখে পড়েছে ফক্সকন? সংস্থা দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে, না, তাদের কোনও ক্ষতি হয়নি। কারণ, এই যৌথ উদ্যোগে ফক্সকন কোনও মূলধন বা সম্পদ লগ্নি করেনি। তার আগেই তারা এই প্রকল্প থেকে সরে এসেছে।
এরপর, কী পরিকল্পনা ফক্সকনের?
‘মডিফায়েড প্রোগ্রাম ফর সেমিকন্ডাক্টর অ্যান্ড ডিসপ্লে ফ্যাব ইকোসিস্টেম’-এর বিষয়ে একটি আবেদন করবে ফক্সকন। এই ইকোসিস্টেম তৈরির জন্য সর্বোত্তম অংশীদারের খোঁজ করছে তারা। ভারতের ভিতরে ও বাইরে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলছি। সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে ভারতকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যেতে চায় সংস্থা। ফক্সকনের বিশ্বমানের সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট এবং ম্যানুফ্যাকচারিং দক্ষতার স্তরে ভারতকে তুলে নিয়ে যেতে চায় তারা। তবে, এই ক্ষেত্রে যে প্রতিযোগিতা রয়েছে, তা মাথায় রেখে এখনই তাদের পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে এর বেশি জানাতে চায় না ফক্সকন।