AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Congress: উত্তরে তল্পিতল্পা গুটিয়ে কি ‘দক্ষিণের দল’ হয়ে উঠছে কংগ্রেস?

Congress: এক ঝলকে মানচিত্র দেখলে, বোঝা যাবে উত্তরে তল্পিতল্পা গুটিয়ে দক্ষিণে আস্তানা নিচ্ছে কংগ্রেস। কিন্তু কেন এমন কংগ্রেসের ভৌগলিক পট-পরিবর্তন? দু-ভাবে বিষয়টি দেখা যেতে পারে। উত্তরে কংগ্রেসের হারার কারণ এবং দক্ষিণে কংগ্রেসের জেতার কারণ।

Congress: উত্তরে তল্পিতল্পা গুটিয়ে কি ‘দক্ষিণের দল’ হয়ে উঠছে কংগ্রেস?
জয়ের পর বিজয়োল্লাসে মেতেছেন তেলঙ্গানার কংগ্রেস নেতা-কর্মীরাImage Credit: PTI
| Edited By: | Updated on: Dec 03, 2023 | 11:03 PM
Share

কলকাতা: দিনের শেষে ভারতের মানচিত্রটা একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। উত্তরে হিমাচল প্রদেশ বাদ দিলে জম্মু কাশ্মীর রাষ্ট্রপতি শাসিত, পঞ্জাব এবং দিল্লি আপের দখলে। উত্তর প্রদেশ, গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা বিজেপির দখলে ছিলই। এবার জুড়ল রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, ছত্তীসগঢ়। গোবলয়ে কংগ্রেসে নামমাত্র চিহ্ন রইল না। পুরোপুরি মুড়ল গেরুয়া চাদরে। দেখতে গেলে এই কটা রাজ্যের ১৮৬টি লোকসভা আসনের জমি কার্যত পাকা করে ফেলল বিজেপি। পূর্বে আঞ্চালিক দলগুলির বাড়বাড়ন্তে কংগ্রেস সেভাবে সুবিধা করতে পারেনি। বিহার, ঝাড়খণ্ড ‘নাম কে ওয়াস্তে’ জোটে। মহারাষ্ট্রে সরকারে থেকেও ভাগ্যের ফেরে সরতে হয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশে ওয়াইএসআর, কেরলে এলডিএফ, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে বাদ দিলে দক্ষিণে পড়ে রইল কর্নাটক আর তেলঙ্গানা। কর্নাটক আগেই দখল করেছিল কংগ্রেস। রবিবার বিআরএস-কে সরিয়ে তেলঙ্গানারও দখল নিল। এক ঝলকে মানচিত্র দেখলে, বোঝা যাবে উত্তরে তল্পিতল্পা গুটিয়ে দক্ষিণে আস্তানা নিচ্ছে কংগ্রেস। কিন্তু কেন এমন কংগ্রেসের ভৌগলিক পট-পরিবর্তন? দু-ভাবে বিষয়টি দেখা যেতে পারে। উত্তরে কংগ্রেসের হারার কারণ এবং দক্ষিণে কংগ্রেসের জেতার কারণ।

সদ্য রাজস্থানে হারার পিছনে অনেকেই বলবেন অশোক গেহলট এবং সচিন পাইলটের অন্তর্দ্বন্দ্ব। নির্বাচন শুরুর আগের থেকেই রাজস্থান কংগ্রেসে কার্যত শুরু হয়ে যায় মুষলপর্ব। দুর্নীতির অভিযোগ এনে অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন সচিন। বুঝিয়ে দেন তাঁর হাতে যা বিধায়ক আছে, চাইলেই অনায়াসে সরকার ফেলে দিতে পারেন। রাজস্থান সরকারের বিরুদ্ধে নিয়োগ-সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তিনি। এরপরও কংগ্রেসে জেতা কার্যত সোনার পাথর বাটি হয়ে দাঁড়ায়। ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেসের ভাল অবস্থান থাকলেও তারা গরিবদের জন্য রান্নার গ্যাস ৫০০ টাকা এবং মহিলাদের জন্য বছরে ১২ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় বিজেপি। তাদের দাবি, শেষ মুহূর্তে এই প্রতিশ্রুতি ভোট বাক্সে বেশ কাজ করেছে।

গুজরাট, রাজস্থান, হরিয়ানায় কংগ্রেসের সংগঠনও দুর্বল হয়ে পড়েছে। নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার একাধিক অভিযোগ ওঠে। প্রাদেশিক সমস্যা নিয়ে তৎপর নয় হাইকম্যান্ড। প্রবীণ রাজনীতিবিদরা নয় কুর্সি ধরে রয়েছেন, নয় একেবারেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তরুণদের কাঁধে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনীহা রয়েছে হাইকম্যান্ডের। কর্নাটকের ডি কে শিবকুমার এবং রাজস্থানের সচিন পাইলট তার জলজ্যান্ত প্রমাণও। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কার্যত এই কারণে দল ছাড়তে বাধ্য হন। মধ্য প্রদেশে বিজেপি যে অটুট থাকল না আর আসন বাড়াতে পারল তার অনেকটা জ্যোতিরাদিত্যের দৌলতেই বলে মনে করা হচ্ছে।

তেলঙ্গানায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিআরএস-কে সরাল কংগ্রেস। কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতি মূল ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল তেলঙ্গানা নির্বাচনে। তাছাড়া তেলঙ্গানাকে নতুন রাজ্য হিসাবে ঘোষণা করার যাবতীয় খসড়া তৈরি হয়েছিল ইউপিএ জমানায়। সেক্ষেত্রে একটা বাড়তি সহানুভূতি কংগ্রেস বরাবরই পেয়ে থাকে। এর সঙ্গে রয়েছে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা। দক্ষিণে বিপুল সাড়া ফেলে তাঁর এই যাত্রা। কর্নাটক নির্বাচনের জয়েও এর ইতিবাচক প্রভাব ছিল। আরও একটা দিক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, দক্ষিণের ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ণ রাখার বরাবরই পাক্ষপাতী কংগ্রেস। হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার ঘোরতর বিরোধী এই রাজ্যগুলি। যার জন্য বিজেপিকে ব্যাকফুটেও থাকতে হয়। রাম মন্দির ইস্যু উত্তর ভারতে যতটা কার্যকরী, দক্ষিণ ভারতে তার প্রভাব অনেকটাই কম। তাই আঞ্চলিক দল এবং কংগ্রেসের উপরই বেশি ভরসা করে দক্ষিণের রাজ্যগুলি। তবে লোকসভা নির্বাচনে এই সব রাজ্যগুলি থেকে কংগ্রেস কতটা ফায়দা তুলতে পারে সেটাই দেখার।