Chhattisgarh Election 2023: নির্বাচনের বছরে ‘বাবা’-‘কাকা’র লড়াইয়ে অস্বস্তিতে কংগ্রেস

Chhattisgarh Election 2023: চলতি বছরের নভেম্বরেই ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা নির্বাচন। ছত্তীসগঢ়ই কংগ্রেসের শেষ শক্তিশালী দুর্গ। তবে, 'বাবা'- 'কাকা'র অন্তর্দ্বন্দ্বে সেই দুর্গেও ফাটল ধরার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

Chhattisgarh Election 2023: নির্বাচনের বছরে 'বাবা'-'কাকা'র লড়াইয়ে অস্বস্তিতে কংগ্রেস
টিএস সিং দেও, রাহুল গান্ধী এবং ভূপেশ বাঘেল (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 17, 2023 | 5:25 PM

রায়পুর: চলতি বছরের নভেম্বরেই ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। বর্তমানে, সারা দেশের মধ্যে ছত্তীসগঢ়ই কংগ্রেসের শেষ শক্তিশালী দুর্গ। তবে, আসন্ন নির্বাচনে অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে সেই দুর্গেও ফাটল ধরার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিএস সিং দেও এবং মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল – ছত্তিশগড়ের রাজনীতিতে প্রথমজন ‘বাবা’ এবং দ্বিতীয়জন ‘কাকা’ নামে পরিচিত। গত ৪ বছরে বহুবার বাবা-কাকা দ্বন্দ্বের ঝলক দেখা গিয়েছে। নির্বাচনের বছরে এসে এই দ্বন্দ্বের উত্তাপ ক্রমে বাড়ছে।

এই দ্বন্দ্বের সূচনা হয়েছিল ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের অব্যবহিত সময় পরই। সেই বছর, কংগ্রেসের ইস্তাহার তৈরির পিছনে ছিল টিএস সিং দেও-এর মস্তিষ্ক। নির্বাচনে ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস সর্বকালের সবথেকে বড় জয় পেয়েছিল। যার পিছনে সেই ইস্তাহারের বড় ভূমিকা ছিল বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কিন্তু, ঝামেলা শুরু হয়েছিল নির্বাচনের পরই। একটানা দিল্লিতে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পড়েছিলেন টিএস সিং দেও। এমনকি সংবাদমাধ্যমেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি কখনই মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার প্রত্যাখ্যান করেননি। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার শীর্ষ নেতৃত্বের উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব ভূপেশ বাঘেলকেই মুখ্যমন্ত্রী বেছে নিয়েছিল।

সেই সিদ্ধান্তে প্রদেশ কংগ্রেসের ভিতর বিধায়ক ও কর্মীদের দুটি গোষ্ঠী তৈরি হয়ে গিয়েছিল। একদল টিএস সিং দেওকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছিল। তারা এমনও প্রস্তাব দিয়েছিল যে আড়াই বছর পর, ভূপেশ বাঘেলকে সরিয়ে টিএস-কে মুখ্যমন্ত্রী করা হোক। দ্বিতীয় গোষ্ঠী চেয়েছিল ভূপেশ বাঘেলই পুরো পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকুন। আড়াই বছরের মাথায় এই দুই গোষ্ঠীর বিরোধ আরও তীব্র হয়েছিল। দিল্লি গিয়ে নিজের চেয়ার পাকা করে এসেছিলেন ভূপেশ বাঘেল। নির্বাচনের বছরে বাবা-কাকার এই দ্বন্দ্ব ফের মাথা চাড়া দিচ্ছে। ‘মিশন ২০২৩’ অর্থাৎ কংগ্রেসের ক্ষমতা ধরে রাখার লড়াইয়ে এই অন্তর্দ্বন্দ্বই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। এমনকি, এই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ভেঙেও যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

৯০ আসনের ছত্তীসগঢ় বিধানসভায় সরকার গড়ার ম্যাজিক নম্বর ৪৬। ৭১টি আসন নিয়ে বর্তমানে বিধানসভার সবথেকে শক্তিশালী দল কংগ্রেস। তবে, দল যদি শেষ পর্যন্ত দুই ভাগে ভেঙে যায় তাহলে ছবিটা একেবারে বদলে যেতে পারে। নির্বাচনের মুখে এই দ্বন্দ্ব নিয়ে যদি ঝড় ওঠে, তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে কংগ্রেসকে। সুরগুজা বিভাগের দীর্ঘদিনের নেতা টিএস সিং দেও। এই বিভাগে ১৪টি বিধানসভা আসন রয়েছে। প্রত্যেকটিতেই টিএস সিং দেওয়ের বড় প্রভাব রয়েছে। ২০১৮ সালে এই ১৪টি আসনের ১৪টিতেই জিতেছিল কংগ্রেস। এছাড়া, বিলাসপুর বিভাগের বেশ কয়েকটি বিধানসভা আসনও টিএস সিং দেওয়ের বড় প্রভাব রয়েছে।

যত সময় যাচ্ছে, ততই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন টিএস সিং দেও। ২০২২-এ আচমকা পঞ্চায়েত মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা রাজ্যের মানুষকে দিতে পারছেন না। তাই সরে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন ভূপেশ বাঘেলও। তাঁর পক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠ কংগ্রেস বিধায়কদের সমর্থন রয়েছে। তাছাড়া তিনি রাজ্যের সবথেকে জনপ্রিয় ওবিসি নেতা। ওবিসিরাই ছত্তীসগঢ়ের সবথেকে বড় ভোটব্যাঙ্ক। কাজেই, টিএস সিং দেও দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানোর পরও, ভূপেশ বাঘেলকে সামনে রেখেই নির্বাচনের ময়দানে নামবে কংগ্রেস। এই অবস্থায় বাবা-কাকার এই দ্বন্দ্ব শক্তিশালী দুর্গ ছত্তীসগড়ে কংগ্রেসের বড় ক্ষতি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।