Asansol Municipal Election: ওঁদের জন্য করোনাবিধি আলাদা? তাসা বাজিয়ে মিছিল করে তৃণমূল প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা আসানসোলে!

TMC: তৃণমূল প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে যে মিছিল উৎসবের চেহারা নিল, তাতে বোধা দুষ্কর করোনাবিধি বলে কিছু জারি হয়েছে!

Asansol Municipal Election: ওঁদের জন্য করোনাবিধি আলাদা? তাসা বাজিয়ে মিছিল করে তৃণমূল প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা আসানসোলে!
প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল! নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 03, 2022 | 9:21 PM

আসানসোল: সোমবার থেকে বাংলায় নতুন করে শুরু হয়েছে করোনা বিধিনিষেধ। তারই মধ্যে চলছে আসানসোল পুরভোটের প্রস্তুতি। করোনার চোখরাঙানির মধ্যেই সোমবার শেষ দিন আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস, বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, বিজেপি ও নির্দল প্রার্থীরা। আর তাতে কোথায় উবে গেল করোনাবিধি! বিশেষত তৃণমূল প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে যে মিছিল উৎসবের চেহারা নিল, তাতে বোধা দুষ্কর করোনাবিধি বলে কিছু জারি হয়েছে!

করোনার বাড়বাড়ন্তের কারণে রাজ্য সরকারের তরফে রবিবার যে বিধিনিষেধ বলবৎ করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল কোনও জমায়েত, মিটিং ও মিছিলে ৫০ জনের বেশি থাকবে না। কিন্তু এদিন আসানসোলে বিভিন্ন দলের একাধিক প্রার্থীকে দেখা গেল ১০০-২০০-র বেশি লোক নিয়ে মিছিল করে মনোনয়ন কেন্দ্রে আসতে। অনেক ক্ষেত্রে শুধু কর্মী সমর্থকরা নন, প্রার্থীদের মুখেও ছিল না মাস্ক। এদিকে মুখে মাস্ক না পরার জন্য রাজ্যজুড়ে চলছে ধরপাকড়। তাই প্রশ্ন উঠছে, রাজনৈতিক দলগুলির জন্য কি করোনাবিধি আলাদা?

সোমবার করোনা আবহে বর্ণাঢ্য মিছিল, ব্যান্ড তাসা বাজিয়ে মননোয়ন জমা দেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। ১০৬টি ওয়ার্ডেই মননোয়ন জমা দেওয়া হয়। এদিন শাসক দলের পক্ষে নজরে ছিল বিদায়ী পুরপ্রশাসক তথা প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন মেয়র পারিষদ অভিজিৎ ঘটক, ২০ বছরের পুর চেয়ারম্যান, ১৫ বছরের কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেত্রী ও বর্তমানের তৃণমূল প্রার্থী ইন্দ্রাণী মিশ্র, প্রাক্তন রাজ্য তৃণমূল ছাত্রপরিষদ সভাপতি অশোক রুদ্র ও অভিজ্ঞ পোড় খাওয়া আদিনাথ পুইতণ্ডির মনোনয়নপত্র জমা। সকলেই ভিন্ন মিছিল করে মনোনয়ন জমা করতে আসেন।

এদিন সকাল থেকে দুপুর ৩ টে পর্যন্ত মনোনয়ন কেন্দ্র হাজির ছিলেন আসানসোল উত্তরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। ছিলেন জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং ও বারাবনির বিধায়ক তথা তৃণমূল জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়। অভিজিৎ ঘটক বলেন, “আমরা যে ভাবে আসানসোলে উন্নয়ন করেছি তাতে আমাদের বিরোধী বলে কিছু নেই। কলকাতায় যে ফলাফল হয়েছে তার থেকেও তৃণমূলের ভাল ফল হবে আসানসোলে”। উজ্জল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি আগে বিধায়ক ছিলাম। সাবেক কুলটি পুরসভা চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। দল আমাকে টিকিট দিয়েছে, আমার কাজ হল, আমার আসনে জয়লাভ করে দলের কাছে তুলে দেওয়া। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে উচ্চ নেতৃত্ব”।

কুলটি জুড়ে ১৪টি ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী মননোয়ন জমা করেছেন। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন দলটা অনেক বড়। প্রত্যাশাও বেশি। এই ধরণের বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটবে। আজ যাঁরা নিজেদের উপযুক্ত প্রার্থী বলে দাবি করে নির্দল হয়ে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের ভিত তৃণমূলই তৈরি করেছে। তাঁদের পরিচিতি কাজ করার অধিকার তৃণমূলই দিয়েছে। তাই সবার কাছে ব্যক্তি নয়, দলের ঝাণ্ডাটাই বড় হওয়া উচিত। কিন্তু এসবের মাঝে করোনাবিধির কী হল?

অভিজিত ঘটকের যুক্তি, “আমি মাস্ক পরেই মনোনয়ন জমা করেছি। ৫০ জনের বেশি কর্মী নিয়ে মিছিলে বের হইনি। কিন্তু তৃণমূলকে সাধারণ মানুষ ভালোবাসেন। তাই স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান করেছিলেন অনেকে। সেখানে আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই”। মন্ত্রী মলয় ঘটকের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী ঢেলে সাজিয়েছেন আসানসোলকে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৈরি করেছন। পুলিশ কমিশনারেট তৈরি করেছেন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন, অণ্ডাল বিমানবন্দর, জেলা হাসপাতালা, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও মহিলা থানা দিয়েছেন। উন্নয়ন দিয়ে ঢেলে সাজিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আসানসোলের মানুষ শুধুমাত্র তৃণমূলের সঙ্গে আছেন। ১০৬ টি ওয়ার্ডেই জয় হবে তৃণমূল প্রার্থীদের”।

সবই আছে, শুধু নেই করোনা বিধি মানা, না-মানা নিয়ে উচ্চবাচ্য। নেতাদের যুক্তি, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মানুষ মিছিলে আসছেন। তা আটকানোর সাধ্য তাঁদের নেই। কিন্তু প্রশাসন! বিধি শুধু সাধারণ মানুষের জন্য, প্রশ্নটা উঠছেই।

আরও পড়ুন: Asansol Municipal Election: মুখে কোভিড সচেতনতার বাণী অথচ প্রার্থীরা নিজেরা মাস্কবিহীন! আর শারীরিক দূরত্ববিধি?