Modi attacks Naveen Patnaik: কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলেছেন নবীনও? ব্যতিক্রমী আক্রমণ মোদীর

PM Modi attacks Naveen Patnaik: ভোটের বাজারে বিজেডি এবং বিজেপি নেতাদের এতদিন পর্যন্ত পরস্পরের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানাতে দেখা যায়নি। তবে সোমবার (৬ মে), কিছুটা ব্যতিক্রমীভাবেই বিজু জনতা দল সরকার তথা নবীন পট্টনায়ককে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পাল্টা দিলেন নবীন পট্টনায়কও।

Modi attacks Naveen Patnaik: কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলেছেন নবীনও? ব্যতিক্রমী আক্রমণ মোদীর
নবীন পট্টনায়ককে জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Updated on: May 06, 2024 | 6:07 PM

ভুবনেশ্বর: এনডিএ-তে সরাসরি নেই বিজেডি। তবে, সংসদের অন্দরে বারংবার বিভিন্ন ইস্যুতে এনডিএ সরকারকে সমর্থন দিয়েছে বিজু জনতা দল। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, দিল্লি পরিষেবা বিল – বারবার এটা দেখা গিয়েছে। টিভি৯-এর পাঁচ সম্পাদকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে, খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদীও বিজেডির এই সমর্থনের কথা স্বীকার করেছেন। মোদী জানিয়েছিলেন, বিজেডি, ওয়াইএসআরসিপি-র মতো এনডিএ-র বাইরের দলগুলি তাঁর সরকারকে সমর্থন করায়, এর আগেই সংসদে তাঁদের ৪০০-র কাছাকাছি আসনের সমর্থন ছিল। এই অলিখিত বোঝাপড়ার কারণেই, ভোটের বাজারে বিজেডি এবং বিজেপি নেতাদের এতদিন পর্যন্ত পরস্পরের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানাতে দেখা যায়নি। তবে সোমবার (৬ মে), কিছুটা ব্যতিক্রমীভাবেই বিজু জনতা দল সরকার তথা নবীন পট্টনায়ককে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

ওড়িশায়, লোকসভা ভোটের সঙ্গে-সঙ্গেই বিধানসভা ভোটও হচ্ছে। এদিন ওড়িশার বেরহমপুরে এক জনসভায় বক্তৃতা দেন নরেন্দ্র মোদী। বক্তৃতায় তিনি জানান, ওড়িশা রাজ্যে সম্পদের অভাব নেই। কিন্তু তারপরও এই রাজ্যের মানুষকে দারিদ্বের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। এর জন্য কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেডি-কেও দায়ী করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ওড়িশায়, প্রায় ৫০ বছর ধরে কংগ্রেস এবং প্রায় ২৫ বছর ধরে বিজেডি ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু তারা কী করেছে, তা সবাই দেখেছে। ওড়িশায় উর্বর জমি, খনিজ সম্পদ, সমুদ্র উপকূল, বেরহামপুরের মতো একটি বাণিজ্য কেন্দ্র, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য – কী নেই। ওড়িশায় সব আছে। ঈশ্বর ওড়িশাকে সব দিয়েছেন। ওড়িশা এত ধনী হলেও, এখানকার মানুষ এত গরিব কেন? এর জন্য দায়ী কে? উত্তর কংগ্রেস ও বিজেডি।”

এমনকি, বিজেডির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, “বিজেডির ছোট ছোট নেতারাও এখন বড় বড় বাংলোর মালিক।” তিনি আরও দাবি করেন, কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকাকালীন তঁর সরকার ওড়িশাকে অনেক সহায়তা করেছে। মনমোহন সিং সরকারের সঙ্গে তুলনা করে তিনি জানান, মনমোহন সরকার যেখানে ১০ বছরে ওড়িশাকে মাত্র ১ লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছিল, সেখানে গত ১০ বছরে মোদী সরকার বাজেটে এই রাজ্যের জন্য ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু, তাঁর সরকার কেন্দ্র থেকে এই অর্থ বরাদ্দ করলেও, তা কাজে লাগায়নি রাজ্যের বিজেডি সরকার। এমনটাই দাব করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি অভিযোগ করেন, “বজেডি সেই টাকা কাজে লাগায়নি, বরং, নিজেরা দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে। আমাদের প্রকল্পের উপর নিজেদের স্টিকার লাগিয়ে, সেই প্রকল্পের কৃতিত্ব নিয়েছে। তারা নিজেরা কিছু করতে পারেনি।” প্রসঙ্গত, এই ধরনের অভিযোগ এর আগে বাংলার তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে করতে দেখা গিয়েছে বিজেপিকে।

শুধু বিজেডি সরকারকেই আক্রমণ করা নয়, ব্যক্তি নবীন পট্টনায়ককেও ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী মোদী। এর আগে, নবীন পট্টনায়ককে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন মোদী। তবে, এদিন তিনি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন নবীন পট্টনায়ককে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কেন এখানকার (নবীন পট্টনায়কের বিধানসভা কেন্দর হিঞ্জলি) শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন? কেন এখানকার অধিকাংশ হাসপাতালে চিকিৎসকদের পদ ফাঁকা রয়েছে? কেন অধিকাংশ শিশুরা স্কুলেই পড়াশোনা ছেড়ে দেয়?”

প্রসঙ্গত, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ শিবিরে ভিড়তে পারে বিজেডি, এমনটা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষে আলোচনা ভেস্তে যায়। ওড়িুশায় ২১ লোকসভা আসনের পাশাপাশি মানুষ ভোট দেবেন ১৪৭ বিধানসভা আসনের জন্যও। দুই সবার ভোটই গ্রহণ করা হবে ৪ দফায়। ১৩ মে থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হচ্ছে, চলবে ১ জুন পর্যন্ত। ফলাফল ৪ জুন। এদিনের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী দাবি করেছেন, ওড়িশার মানুষ বিজেডি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, “৪ জুন বিজেডি সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ। ৪ জুন, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর মুখের নাম ঘোষণা করা হবে। ১০ জুন, ভুবনেশ্বরে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। আজ, আমি এখানে এসেছি, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আপনাদের সবাইকে আমন্ত্রণ জানাতে।”

চুপ থাকেননি নবীন পট্টনায়কও। ওড়িশায় পরবর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দাবিকে তিনি দিবাস্বপ্ন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিজেপি অনেক দিন ধরেই দিবাস্বপ্ন দেখছে।” দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৯ জুন সকাল ১১.৩০ থেকে দুপুর ১.৩০-র মধ্যে টানা ষষ্ঠবারের জন্য ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন নবীন পট্টনায়ক।